মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ মে ২০২৩, ১২:০৫:২৩ অপরাহ্ন

ভীরুরা তাদের প্রকৃত মৃত্যুর আগেই বহুবার মরে, কিন্তূ সাহসীরা জীবনে মাত্র একবারই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে থাকে। -শেক্সপিয়ার
অবহেলায় পড়ে আছে দৃষ্টিনন্দন মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের অধীনে নির্মিত সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটি অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আয়বর্ধক প্রকল্প হিসেবে নির্মাণ করা হয়। তবে উদ্বোধনের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও খোলা হয়নি অফিস ভবন। অযতœ-অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে কমপ্লেক্সের মূল্যবান আসবাবপত্র। একটি জাতীয় পত্রিকায় খবরটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়।
উপজেলার ধর্মপাশা থানাসংলগ্ন স্থানে ২০১৯ সালে এ ভবনটি নির্মিত হয়। ২ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭ শতাংশ জমিতে নির্মিত এ ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় রয়েছে ১৪টি দোকানঘর। তৃতীয় তলায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয় ও সম্মেলন কক্ষ। প্রকাশিত খবরে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের চারপাশে এখন নোংরা-আবর্জনা। ২০১৯ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি ভবনটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় সংসদ সদস্য ভবনটি উদ্বোধনও করেছেন। কিন্তু উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মিত এই তিন তলাবিশিষ্ট ভবনটি এখন পরিত্যক্ত। উল্লেখ করা যেতে পারে, তিন বছর মেয়াদি দেশব্যাপি ৪৭০টি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। ২০১৫ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা ছিলো। কিন্তু তা হয় নি। ইতোমধ্যেই মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে চারবার। প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিলো এক হাজার ৭৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কিন্তু সংশোধনীর মাধ্যমে ১৪৫ কোটি টাকা বাড়িয়ে মোট ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ২২৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে বলা হয়, সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় স্বদেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দাপ্তরিক কার্যক্রম অধিক সুষ্ঠু ও সুচারুভাবে সম্পন্ন করা। এছাড়া তহবিল গঠনের মাধ্যমে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার বিষয়টিও রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্প এটি। প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদও দিচ্ছেন তিনি। কিন্তু নানা অজুহাতে এর মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সরকার বিভিন্ন ধরণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে রয়েছে- মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, আবাসন (বীর নিবাস) ইত্যাদি। উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সও তেমনি একটি প্রকল্প। মূলত মুক্তিযোদ্ধাদের বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবে নেয়া হয়েছে এই প্রকল্প। সব জটিলতা নিরসন করে প্রকল্পটি অতি সত্তর আলোর মুখ দেখবে বলেই আমরা আশাবাদি।