জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ মে ২০২৩, ২:০৮:৪১ অপরাহ্ন
জীবন হলো পেন্সিলে আঁকা এক ছবির নাম, যার কোন অংশ রাবার দিয়ে মুছে ফেলা যায় না। -জন ডব্লু গার্ডনার
আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস আজ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালন করা হচ্ছে যথাযোগ্য মর্যাদায়। এই দিনে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারি সকল নারী-পুরুষকে শান্তি রক্ষার লক্ষে সর্বোৎকৃষ্ট পেশাদারি মনোভাব বজায়, কর্তব্যপরায়নতা, নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাদের আত্মত্যাগের ঘটনাকে গভীর কৃতজ্ঞতা ও যথোপোযুক্ত সম্মানপূর্বক স্মরণ করার লক্ষে দিবসটি পালন করা হয়। দিবসটি পালন করা হচ্ছে ২০০০ সাল থেকে। পরবর্তীতে ২০০২ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের গৃহীত প্রস্তাব অনুযায়ি এই দিবসের রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়। ১৯৪৮ সালে সংঘটিত আরব-ইসরাইল যুদ্ধকালীন যুদ্ধ বিরতি পর্যবেক্ষণে গঠিত জাতিসংঘ ট্টুস সুপারভিশন অর্গানাইজেশন দিনকে উপজীব্য করে ২৯ শে মে তারিখটি নির্ধারণ করা হয়। এই জাতিসংঘ ট্টুস সুপারভিশনই হচ্ছে প্রথম শান্তিরক্ষী বাহিনী।
বাংলাদেশেও দিবসটি পালন করা হচ্ছে প্রতি বছর। মূলত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সৈন্য প্রেরণকারি দেশ হিসেবে বাংলাদেশে দিবসটি পালিত হয়। ১৯৮৮ সাল থেকে জাতিসংঘের অধীনে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনী। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সাড়ে ছয় হাজারের বেশি শান্তিরক্ষী কাজ করছে। এ পর্যন্ত পৃথিবীর ৪০টি দেশে ৫৪টি মিশনে এক লাখ ৩২ হাজার ছয়শ’ জন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য তাদের দায়িত্ব পালন শেষ করেছেন। আর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর একশ ১৯ জন সদস্য জীবন দিয়েছেন। এই দিবসটির প্রাক্কালে যেটা বলা জরুরি তা হলো, ১৯৮৮ সাল থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিয়ে এ পর্যন্ত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী সদস্যরা সর্বোচ্চ পেশাদারি মনোভাব ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হয়েছে। এ বছর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের অংশগ্রহণের ৩৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে পালিত হবে নানা কর্মসূচি।
বিশ্বশান্তি রক্ষায় আমাদের নৌ, সেনা ও বিমান বাহিনীর চৌকষ সদস্যরা শ্রম মেধা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। খোদ জাতিসংঘের মহাসচিব বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের এই অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বীকৃতি দিয়েছেন। আজকের এই দিনে আমরা তাদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাচ্ছি, যারা বিশ্বশান্তির অন্বেষণে জীবন উৎসর্গ করেছেন। শান্তিরক্ষীদের সাফল্যে বিশ্ব দরবারে দেশের সম্মানবৃদ্ধিসহ অর্থনৈতিকভাবেও দেশকে সমৃদ্ধ হয়েছে। তাছাড়া এই শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সুযোগ পাওয়ার জন্য অনেক সদস্যই নিজেদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে সচেষ্ট থাকেন। এতে আমাদের নৌ, সেনা, বিমান বাহিনীর সদস্যদের সার্বিক দক্ষতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে নিঃসন্দেহে।