মৌলভীবাজারে খাদ্য গুদামে ধান-চাল বিক্রিতে অনীহা কৃষকদের
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ জুন ২০২৩, ১:১১:৪১ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজার থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা : সরকার নির্ধারিত মূল্যে খাদ্য গুদামে ধান ও চাল বিক্রি করতে অনীহা দেখা গেছে মৌলভীবাজারের কৃষকদের। ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় বোরো চাষীরা পাইকার ও মিল মালিকদের কাছে ধান বিক্রি করছেন। ফলে এ মৌসুমেও মৌলভীবাজারে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এবার প্রতি কেজি ধানের দাম ৩০ টাকা এবং চালের দাম ৪৪ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর বোরো মৌসুমে ৪ হাজার ৭’শ ৪৯ মেট্রিক টন ধান, ৭ হাজার ৬’শ ১২ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। ৩০ মে পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে চাল ২ হাজার ৮’শ ৩৪ টন ও ধান ৫’শ ৪ মেট্রিক টন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কৃষকরা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে খোলাবাজারে ধান বিক্রি করছেন। গুদামের চাহিদা অনুযায়ী ধান প্রস্তুত করতে গেলে প্রতি মণে আরো ৫-৭ কেজি কমে যায় বলে জানান কৃষকরা। এছাড়া, সরকারি গুদামে ধান বিক্রিতে বাড়তি পরিবহন ও শ্রমিক খরচ রয়েছে, অনলাইনে অ্যাপসের মাধ্যমে আবেদন, বিক্রয়ে অনিশ্চয়তা এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ নানা প্রক্রিয়াগত জটিলতায় পড়তে হয় বলে জানান তারা।
জেলার রাজনগর উপজেলার কাউয়াদীঘি হাওর পারের কৃষক আজাদ মিয়া জানান, ‘সরকারি গুদামে হাইব্রিড ছাড়া অন্য জাতের ধান সাধারণত কৃষকরা দেন না। অন্য জাতগুলো দিলে কৃষকের লোকসান হয়। এ কারণেই মূলত সরকারের ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয় না। এ বছর আমাদের এলাকার হাওরগুলোতে ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের ধান বøাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হওয়ায় জমিতে ধানের উৎপাদন কমেছে অনেক। তিনি আরো জানান, অন্যান্য বছর আমি ৪ বিঘা জমিতে ১০০ মণ ধান পেতাম। কিন্তু এ বছর ৪০ মণ ধান পেয়েছি।
হাকালুকি হাওর পারের কৃষক ইউপি সদস্য শাহেদ আহমদ জানান, বিগত বছরের তুলনায় এবার বোরো জমিতে ধান কম হয়েছে। কৃষকের বছরের খোরাকির পর অবশিষ্ট ধান আছে, এমন কৃষকের সংখ্যা কম। যাদের অবশিষ্ট আছে তাদের ধান স্থানীয় ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা সরকারের দেয়া নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে কিনছেন। তাই, সরকারি গুদামে ধান দিতে কৃষকদের আগ্রহ কম।
এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ ত্রিপুরা জানান, অনেকেই আমাদের শর্ত পূর্ণ করতে না পারায় ধান ও চাল দিতে পারে না। সরকারি গুদামে ধান ও চাল বিক্রি করতে আমরা প্রচারণা চালাচ্ছি এবং কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। আশা করা যায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে।