গোপন সন্তান
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জুন ২০২৩, ৫:৪২:৪৩ অপরাহ্ন
আনোয়ার হোসেন মিছবাহ
মোলায়েম চোখে তাকালেন ডাক্তার। যেনো অবিরত আনত থাকে তার চোখ। জিহবার লহমায় ঠোঁট ভিজিয়ে ভিজিয়ে যে কথা বললেন; এতে মোটেই প্রস্তুত ছিলেন না তানিয়া বেগম।
তিনি আশাকে বাসা থেকে ধরে এনেছিলেন, অন্ততঃ শেষ কথা শুনবেন- আপনি মা হবেন! কিন্তু ডাক্তারের পিছলে পড়া কথায় তাকে তার আশা থেকে অনেক দূরে নিয়ে যায়। কেমন জানি ফুঁস করে ওঠে চোখের দুটি কুয়ো। বেঁধে রাখা সম বেলুন ভেদ করে গড়িয়ে পড়ে জমতে থাকে নাভির গর্ত বরাবর। গলার ভেতর ফেলতে থাকে ডাইনিং টেবিলের সমুদয় মাছের কাঁটা।
নিজেকে সামলে নিতে জমির সাহেবের বুকের বাম পাশটাকে আশ্রয় করে কেঁচোর মতো শরীরটা বাঁকিয়ে বলেন; আমার তবে কী হয়েছে ডাক্তার?
নতুন পাশ করা গাইনোকলিস্ট আক্তার হোসেন অনেকটা আইসক্রিম ঠান্ডার স্বরে বলেন; চড়ষুপুংঃরপ ঙাধৎরধহ ঝুহফৎড়সব! তাতে কী? ঘাবড়াবেন না। বিজ্ঞান তো অনেক দিয়েছে। ইচ্ছে করলে সে রকম সুবিধাও নিতে পারেন, যেহেতু আপনাদের টাকা আছে। ব্যাপার টা না হয় আমি ই দেখে দেবো।
ডাক্তারের এমন কথাও পারে নি থামিয়ে দিতে চোখের দুটো কূয়ো। শুকাতে পারে নি ব্লাউজের খাঁজে খাঁজে জমে থাকা নুনের ঝর্ণা বারি। কিংবা সন্তানের জন্য নাভির অলিন্দে লুকিয়ে থাকা আখুটি জল।
পায়ের নখ পরখ করতে করতে জমির সাহেব সাহসে হাত রাখেন তানিয়া বেগমের কাঁধ বরাবর। এবার আলতো করে বলেন; কেঁদো না জান পাখি। আমি যেখান থেকে যেভাবে পারি তালাশ করে আনবো আমাদের সন্তান। নাভির জলে ভিড়িয়ে দেবো সাজানো সাম্পান।
একদিন জমির সাহেব সত্যি সত্যিই সন্তানের খুঁজে বেরিয়ে পড়েন। দু’চোখের আলোয় খুঁজতে থাকেন কাঙ্খিত সেই আয়শাকে। যে কিনা সিজারের খরচের জন্য বিক্রি করে দিতে চায় গোপন সন্তান।