পাখিরা হারিয়ে যাচ্ছে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ জুন ২০২৩, ১২:৩৫:৩৭ অপরাহ্ন
প্রেমের আনন্দ থাকে স্বল্পক্ষন কিন্তু বেদনা থাকে সারাটি জীবন। -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
পাখিরা হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতি থেকে।বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে অনেক প্রজাতির পাখি। এই ধারা অব্যাহত থাকলে হয়তো এমনও দিন অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য, যেদিন আর রকমারি পাখির কিচির মিচির ডাক শোনা যাবে না, পাখির ডাকে আর ঘুম ভাংবেনা মানুষের। গবেষণার তথ্য হচ্ছে, গত ১৫ বছরে অন্য প্রাণিদের তুলনায় বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বিলুপ্তির হার সবচেয়ে বেশি। দেশে ছিলো ৫৬৬ প্রজাতির পাখি। এর মধ্যে ১৯ প্রজাতির পাখি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এছাড়া, ৩৯০টি বন্য প্রাণির জীবন বিপন্ন।
পাখি সৃষ্টিকর্তার অপরূপ সৃষ্টি। গাছ গাছালি সবুজ বন হাওর বিল হচ্ছে তাদের আবাসস্থল। খোলা আকাশে ওড়ে বেড়ানোর দৃশ্যে মানুষের চোখ জোড়ায়; আর পাখির সুমধুর ডাক মানুষের মনের খোরাক জোগায়। অনাদিকাল ধরে দেশের প্রকৃতিকে মাতিয়ে রেখেছে পাখি। মানুষের দৈনন্দিন জীবন প্রবাহে নানা রংয়ের পাখি জড়িয়ে আছে ওতপ্রোতভাবে। প্রকৃতি, পরিবেশ, বন তৈরি ও সম্প্রসারণে পাখির ভূমিকা রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে-প্রকৃতি, পরিবেশ ও বনের জন্য পাখি অপরিহার্য। পাখির সংখ্যা যেখানে কম, সেখানে প্রকৃতি মৃতপ্রায়। বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন পাখি বন তৈরি করে বনের ক্ষতি পূরণ করে। পাখির কল্যাণেই বন গড়ে ওঠে। পাখি না থাকলে বন থাকবে না।তাছাড়া গাছের বীজ নিয়ে পাখি বিভিন্ন জায়গায় ফেলে। পাখির ফেলে দেয়া বীজ থেকে হয় গাছ। আর গাছের পাতা খেয়ে থাকে পোকামাকড়। আবার পোকামাকড় খেয়ে গাছের পাতাকে রক্ষা করে পাখি। এভাবেই পাখি বন ও পরিবেশকে রক্ষা করে। অতীতে এ দেশে প্রচুর পাখি ছিলো। কারণ এখানকার আবহাওয়া পাখির বংশবৃদ্ধিতে সহায়ক। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে, প্রকৃতিতে আগের মতো পাখি নেই। অসংখ্য পাখি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অনেক পাখি হারিয়ে যেতে বসেছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে নির্বিচারে বৃক্ষনিধন এবং জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ। গাছ কাটায় পাখি আবাসস্থল হারাচ্ছে। জমিতে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে ছোট মাছ, পোকা মাকড় মারা যায়। ফলে পাখি নিরাপদ খাদ্য পাচ্ছে না। আবার বিষযুক্ত খাদ্য খেয়েও পাখি প্রাণ হারাচ্ছে।
পাখি সুরক্ষার দায়িত্ব সরকারের যেমন, সাধারণ মানুষেরও তেমনি। বরং এক্ষেত্রে মানুষকেই সচেতন হতে হবে বেশি। জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। বৃক্ষসম্পদ রক্ষা করতে হবে। দরকার পাখির অভয়াশ্রম। গাছের সংখ্যা দিন দিন কমেই যাচ্ছে। অন্ধ আবেগ নয়। বাস্তবতা মাথায় রেখে বনের পাখি বাঁচাতে হবে। যুগোপযোগি আধুনিক বাস্তবসম্মত উদ্যোগ নেয়াই হচ্ছে আসল কথা।