সিলেটে প্রার্থীদের সাথে সিইসির মতবিনিময়
সিসি ক্যামেরায় সিলেটের ভোট পর্যবেক্ষণ হবে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১১ জুন ২০২৩, ৪:৫০:৪৮ অপরাহ্ন
পেশী শক্তি কঠোর হস্তে দমন করা হবে ॥ সঠিকভাবে ভোট দিতে না পারলে চিৎকার দেবেন
স্টাফ রিপোর্টার: সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সকল ভোটকেন্দ্র সিসি ক্যামেরার আওতায় এনে ভোট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আওয়াল। তিনি বলেছেন, আমরা সিসিটিভির মাধ্যমে সব কেন্দ্রের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবো। কোন ভোটার যদি সঠিকভাবে ভোট দিতে না পারেন-তাহলে আপনারা চিৎকার দেবেন। আমরা সেখান থেকে বসে ব্যবস্থা নেব। নির্বাচনে পেশীশক্তির ব্যবহার কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে জানান তিনি।
গতকাল শনিবার সকালে নগরীর মেন্দিবাগস্থ জালালাবাদ গ্যাস অডিটোরিয়ামে সিলেট সিটিতে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ইভিএম প্রসঙ্গে হাবিবুল আওয়াল বলেন, ইভিএম নিয়ে অনেকেই অনেক কথাই বলেন। এটার কিন্তু পরীক্ষা অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। এর ভেতরে জ্বিন-ভূত- প্রেত থাকে বলেও অনেকে বলেছেন। কিন্তু আমরা এই রকম কোনো কিছু পাইনি। অনেক উজা-ঝাঁড়ফোক করেও কিছুই পাইনি।
সিইসি বলেন, আমরা দুইটা পদ্ধতিতে বিশ্বাস করি। শরিয়ত ও মারিফত। শরিয়তের পদ্ধতিতে ভোট কোথাও যায় না। কিন্তু এখন মারিফতের পদ্ধতিতে এখানে ভোট দিলে ওখানে চলে যায় নিশ্চয়তা আমি বলতে পারবো না। কারণ আমি মারিফত বুঝি কম। কাজেই শরিয়তের পদ্ধতিতে কোনো ভাবেই একজনের ভোট অন্যজন দিতে পারে না। যদি কেউ প্রমাণিত করতে পারেন তাহলে আমি নিজেই এর দায়ভার নেবো। তাই আপনারা সময় মতো ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিবেন। কোন বিলম্ব করবেন না।
পলিথিনে মোড়ানো ব্যানার-পোষ্টার নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা এতো নিষ্ঠুর হতে চাই না। এটা নিয়ে আইন আছে। পুলিশ চাইলে পলিথিনে মোড়ানো রঙিন ব্যানার-পোষ্টার ছিঁড়ে ফেলতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক সমস্যা উল্লেখ করে সিইসি বলেন, পরিবেশ সুরক্ষার জন্যই মূল পলিথিনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই জিনিসটা করা যাবে না।
প্রচারণায় ব্যাপারে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ভবিষ্যতে প্রচারণার ধরণ পাল্টে যেতে পারে। এটা সময়ের প্রয়োজনে হয়ে যাবে। তথ্যপ্রযুক্তি এতে যোগ হবে। প্রার্থীরা ফেইসবুকে প্রচারণা চালাবে। এটা আমাদের ভেবে দেখতে হবে আগামীতে কিভাবে প্রচারণার ধরন আনা যায়।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আচরণবিধির অভিযোগ এলে প্রার্থিতা বাতিল হবে। আপনারা এমন কিছু করবেন না যাতে প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়।
সিইসি বলেন, নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের অনিবার্য অনুষঙ্গ। নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্র হতে পারে না। নির্বাচন ছাড়া কখনো গণতান্ত্রিক সরকার হতে পারে না। তিনি বলেন, সংবিধানে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকেও সরকার বলা হয়েছে। আপনারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন-তাহলে প্রকৃত অর্থেই সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
সিইসি প্রার্থীদের সংযম ও অহিংস আচরণের পরামর্শ দেন। তিনি প্রার্থীদের সহিংসতা সম্পূর্ণরুপে পরিহারের আহ্বান জানিয়ে বলেন, অন্যথায় নির্বাচনে সহিংসতার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি প্রার্থীদের আচরণবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন।
ভোটকেন্দ্রের সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে জানিয়ে তিনি সংশ্লিষ্টদের নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখতে বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন-নির্বাচন কমিশনের সচিব জাহাঙ্গীর হোসেন, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ইলিয়াস শরীফ, জেলা প্রশাসক মো: মজিবর রহমান এবং রিটার্নিং অফিসার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদের। এছাড়াও, বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসানসহ অন্য মেয়র প্রার্থী, কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিল প্রার্থীরা। এছাড়াও মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কাজে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিএনপি এ নির্বাচন বর্জন করছে।
বিকালে সিইসি সার্কিট হাউসে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলাদা বৈঠকে মিলিত হন।