শিশুশ্রম বিলোপ দিবস
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১২ জুন ২০২৩, ৭:৩৮:৩৮ অপরাহ্ন
পরিপূর্ণ তৃপ্তি নিয়ে কুঁড়ে ঘরে থাকাও ভালো, অতৃপ্তি নিয়ে বিরাট অট্টালিকায় থাকার কোন সার্থকতা নেই। -ইউলিয়ামস হেডস
বিশ্ব শিশুশ্রম বিলোপ দিবস আজ। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা দ্বারা স্বীকৃত একটি দিন। তারা সর্বপ্রথম দিবসটি ঘোষণা করে ২০০২ সালের ১২ই জুন। মূলত ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের শ্রম না করিয়ে তাদের শিক্ষার সুযোগ দান ও অগ্রগতির জন্য সচেতনতার প্রসারই এই দিবসের লক্ষ। কোন শিশুর চোখের স্বপ্ন ও শৈশব যাতে অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে না যায়, সেই লক্ষ্যেই এই দিবস উদযাপন।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মতে- যদি কোন কাজের ফলে কোন শিশুকে তার শৈশবের স্বাভাবিক চাহিদাগুলি থেকে বঞ্চিত হতে হয়, স্কুলের শিক্ষালাভ থেকে সে যদি বঞ্চিত হয় এবং মানসিক, শারীরিক ও নৈতিকভাবে তার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে তা হলে সেই কাজটিকে ‘শিশুশ্রম’ বলা হবে। আরও বলা হয় ৫ থেকে ১১ বছরের কোন শিশু দৈনিক এক ঘণ্টা কাজ করলে এবং ১২ থেকে ১৪ বছরের কোন কিশোর সপ্তাহে ১৪ ঘন্টা কাজ করলে তাকে শিশুশ্রমিক হিসেবে ধরা হবে। এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা শিশুশ্রমিকদের দুর্দশার বিষয়টি তুলে ধরতে বিশ্ব শিশুশ্রম বিলোপ দিবস ঘোষণা করে। এই সচেতনতা প্রসারের লক্ষে এই দিনটিতে সমগ্র বিশ্বেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিশুশ্রম রোধ ও বিলুপ্তিই এই দিবসের উদ্দেশ্য। এই দিনটিতে শিশু শ্রমিকদের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে সচেতনা প্রসার করা হয়। সরকার, নিয়োগকারী সংস্থা, শ্রমিক সংগঠন, নাগরিক সমাজ তথা লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। শুধু তাই নয়, শিশু শ্রমিকদের সাহায্যে এগিয়ে আসার লক্ষ্যেও প্রচার চালানো হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, এমন অনেক শিশুই রয়েছে, যারা খুব অল্প বয়সেই তাদের শৈশব হারিয়ে ফেলে। ৫ থেকে ১৭ বছরের অনেক শিশুই এমন কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায় যে, তারা শৈশব থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের সুবিধা তারা পায় না। আমাদের মতো অনেক দেশেই দারিদ্র্য শিশুশ্রমের অন্যতম প্রধান কারণ। দরিদ্রতার কারণে ছেলেমেয়েরা স্কুল ছাড়তে বাধ্য হয় ও তাদের মা বাবাদের সাহায্য করার জন্য ছোটোখাটো কাজকে বেছে নেয়। অনেক সময় শিশুদের বাধ্য করানো হয় কম বয়সে কাজ করার জন্য। অসংখ্য শিশু নিয়োজিত রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে।পথশিশুর সংখ্যাও কম নয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে অল্পবয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়।
শিশুশ্রমের অবলুপ্তির লক্ষে আইএলও বিশ্ব শিশুশ্রম বিলোপ দিবসের সূচনা করে। তাই শিশুদের স্বপ্ন যাতে কেউ ছিনিয়ে নিতে না পারে, তা নিশ্চিত করাই হোক এই দিবসের প্রতিশ্রুতি। শিশুদের হাতে কর্মের হাতিয়ার নয়, কলম আর বই তুলে দিতে হবে। দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্যই দেশের প্রায় অর্ধকোটি শিশুশ্রমিককে ফিরিয়ে আনতে হবে মূলধারায়। দিতে হবে সুনাগরিক হয়ে বেড়ে ওঠার সুযোগ।