দক্ষিণ সুরমায় সড়কে ১৫ শ্রমিকের মৃত্যু
পটুয়াখালীতে শ্বশুর বাড়ি থেকে গ্রেফতার ট্রাক চালক
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১২ জুন ২০২৩, ৭:৫৪:৪৪ অপরাহ্ন
রিমান্ড চাইবে পুলিশ ॥ চিহ্নিত পিকআপ ভ্যান চালকও
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের দক্ষিণ সুরমার নাজিরবাজার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ নির্মাণ শ্রমিক নিহতের ঘটনায় ট্রাক চালককে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গত শনিবার সন্ধ্যায় র্যাব-৯ এর একটি বিশেষ দল পটুয়াখালী সদরে অভিযান চালিয়ে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত শফিকুল ইসলাম (২৭) মুন্সিগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা আলুভর্তি ট্রাকের চালক। তিনি শেরপুর সদর উপজেলার নয়াপাড়া মোকসেদপুর গ্রামের মো. মিস্টার মিয়ার পুত্র।
র্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার সিনিয়র এএসপি আফসান আল আলম গতকাল রোববার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ট্রাক চালককে দক্ষিণ সুরমা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (তদন্ত) আবুল হোসেন সিলেটের ডাককে জানিয়েছেন, ট্রাক চালক শফিকুল ইসলামকে গতকালই আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ওই ট্রাক চালক আহত বিধায় পুলিশ সতর্কতার সাথে আদালতের কাছে তার রিমান্ড চাইবে। পিকআপভ্যান চালককেও পুলিশ চিহ্নিত করে গ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে। তবে, তদন্তের স্বার্থে এখনই তার পরিচয় জানানো যাচ্ছে না বলে জানান ওসি আবুল হোসেন।
র্যাব জানায়, ট্রাকচালক শফিকুল ইসলাম নিজেও ওই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন। তার পায়ের তলা থেকে গোড়ালি পর্যন্ত গাড়ির কাচে কেটে যায়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে দক্ষিণ সুরমার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ঘটনার দিন বিকেলে এনা পরিবহনের একটি বাসে করে ঢাকায় চলে যান। পরে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও জাতীয় পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে নিজের বাড়ি শেরপুরে না গিয়ে শ্বশুরবাড়ি পালিয়ে যান।
র্যাব আরো জানায়, বহুল আলোচিত ওই সড়ক দুর্ঘটনার দিন সন্ধ্যায় নিহত নির্মাণ শ্রমিক সায়েদ নূরের ছেলে বাদী হয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় অজ্ঞাত পরিচয় দুই চালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচিত হয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল শনিবার সন্ধ্যায় শফিকুলকে তার শ্বশুরবাড়ি পটুয়াখালী সদর থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গতকাল রোববার সকালে শফিকুলকে সিলেট নিয়ে আসা হয় এবং বিকেলে তাকে দক্ষিণ সুরমা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দক্ষিণ সরমার নাজির বাজারের কুতুবপুরে ট্রাক-পিকআপের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই ১১ জনের মৃত্যু হয়। পরে ঐদিনই সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও ৩ জনের মৃত্যু ঘটে। পরদিন বৃহস্পতিবার ভোরে মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরেকজনের মৃত্যু ঘটে। সবমিলিয়ে মৃত্যু হয় ১৫ জনের। আহত হন আরো ১৩ জন। এ ঘটনায় নিহত সায়েদ নুরের ছেলে ইজাজুল বাদী হয়ে ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহণ আইনের ৯৮/১০৫ ধারায় দুই অজ্ঞাতনামা চালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে ট্রাক চালককে গ্রেফতার করা হলে পিকআপের চালক এখনো পলাতক রয়েছে। নিহত শ্রমিকরা নগরীর আম্বরখানা এলাকা থেকে ঢালাই কাজের জন্য ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুরে যাচ্ছিলেন।