হলফনামা বিশ্লেষণ: সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর
লড়াইয়ে ৪৪ জন গৃহিণী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১২ জুন ২০২৩, ৮:২৪:০৫ অপরাহ্ন
রয়েছেন আইনজীবী, শিক্ষক, টেইলার্স, ইলেকট্রিশিয়ান, ব্যবসায়ীও
কাউসার চৌধুরী:
সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে সংরক্ষিত চৌদ্দটি ওয়ার্ডের ৮৭ জন প্রার্থীর মধ্যে ২৩ জনই স্বশিক্ষিত। আছেন এলএলবি পাশ পাঁচজন। একজন এম.এ পাশ, দু’জন এমএসএস ও একজন বিএসসি পাশ করেছেন। ৫ জন এইচএসসি আর ১২ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি এবং বাকীরা পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত। প্রার্থীদের মধ্যে ৪৪ জনেরই পেশা গৃহিণী। আইনজীবী আছেন ৫ জন, আছেন তিন জন শিক্ষকও। অন্যদের কেউ ইলেকট্রিশিয়ান, কেউ বা টেইলারিং করেন, আবার কেউ ফার্মেসী পরিচালনা করেন।
প্রার্থীদের মধ্যে মামলার আসামি ছিলেন চারজন। একজন সবকটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। বাকী তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। মনোনয়নপত্রের সাথে নির্বাচন কমিশনে (ইসিÑ জমা দেয়া প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে নারী প্রার্থীদের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। আগামী ২১ জুন বুধবার সিসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
হলফনামা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সিসিকের সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী আছিয়া বেগমের শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি, তিনি পেশায় গৃহিণী। অপর প্রার্থী সালমা সুলতা
নার শিক্ষাগত যোগ্যতা এলএলবি, তিনি পেশায় একজন আইনজীবী।
এসএসসি পাশ সংরক্ষিত ২নং ওয়ার্ডের প্রার্থী জোসনা আহমদের পেশা গৃহিণী। অপর প্রার্থী রুনা বেগম স্বশিক্ষিত, তার পেশাও গৃহিণী। তাহমিনা রহমান রোবা এসএসসি পাশ, পেশায় তিনি গৃহিণী। কুলসুমা বেগম পপি এলএলবি পাশ, কিন্তু হলফনামায় তিনি কোনো পেশা উল্লেখ করেননি।
সংরক্ষিত ৩নং ওয়ার্ডের প্রার্থী রোবি বেগম এসএসসি পাশ, তার কোনো পেশা নেই। মোছা. রেবেকা বেগমের যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি, পেশায় তিনি একজন গৃহিণী। মুসলিমা নাজনিন হাসান মাস্টার্স ইন ইকোনমিকস, তিনিও পেশায় গৃহিণী। রুকসানা খানমের যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি, তার পেশা গৃহিনী। শ্যামলী সরকার বিএসএস অনার্স পাশ, তিনি পেশায় নগরীর মিরবক্সটুলার থাইকেয়ার এর রিসিপসনিস্ট। নাসরিন আহমেদ নুপুর স্বশিক্ষিত এবং তিনি পেশায় গৃহিণী। নেহারুন বেগমের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি, তার কোনো পেশা নেই।
সংরক্ষিত ৪নং ওয়ার্ডের প্রার্থী রুপিয়া খানম স্বশিক্ষিত হলেও পেশা হিসেবে লিখেছেন “আরবী শিক্ষিকা”। অপর প্রার্থী জোহরা জেসমিন এলএলবি পাশ এবং তিনি পেশায় একজন আইনজীবী। উম্মে সালমা এইচএসসি পাশ, তিনি পেশায় গৃহিণী। রুবি বেগমের যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি, তার পেশা টেইলারিং। মোছা. রুহেনা খানম মুক্তার যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি, তিনি পেশায় গৃহিণী। মাসুদা সুলতানার যোগ্যতা নবম শ্রেণি, তিনি পেশা হিসেবে লিখেছেন “কাউন্সিলর”। সুনিয়া আক্তার সূচনা স্বশিক্ষিত, তার পেশা গৃহিণী। সালমা বেগম বিএসসি পাশ, তিনি নগরীর নয়াসড়কের কিশোরী মোহন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। তাহমিনা বেগম এমএস এস পাশ, তিনি পেশায় গৃহিণী।
সংরক্ষিত ৫ নং ওয়ার্ডের প্রার্থী জয়শ্রী দাস জয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা এম.এ, এলএলবি, তিনি পেশায় একজন আইনজীবী। দীবা রাণী দে বাবলীর যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি, তার পেশা হলফনামায় পাওয়া যায়নি, তার বিরুদ্ধে বর্তমানে আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। শাহানা বেগম শানুর যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি, তিনি পেশা হিসেবে লিখেছেন গৃহিণী ও কাউন্সিলর এবং তিনি ৬ মামলার আসামি ছিলেন পরবর্তীতে সবকটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।
সংরক্ষিত ৬নং ওয়ার্ডের প্রার্থী মোছা. কামরুন নাহার চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা বি.এস.এস। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। অপর প্রার্থী শাহানারা বেগমের যোগ্যতা দশম শ্রেণি, তার পেশা গৃহিণী। সংরক্ষিত ৭নং ওয়ার্ডের প্রার্থী মোছা. মাহমুদা নাজিম রুবি স্বশিক্ষিত এবং তিনি পেশায় গৃহিণী। নাজনীন আক্তার কনা এলএলবি পাশ, পেশা হিসেবে তিনি লিখেছেন গৃহিণী ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। নার্গিস সুলতানার যোগ্যতা এইচএসসি, তিনি পেশায় গৃহিণী। ডায়না বেগমের (সুমাইয়া) যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি এবং তিনি পেশায় একজন গৃহিণী।
সংরক্ষিত ৮নং ওয়ার্ডের প্রার্থী শারমিন আক্তার সুমি এসএসসি পাশ, তার পেশা গৃহিণী। সালেহা কবির সেপীর হলফনামা ইসির ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়নি। মোছা. হেনা বেগম এসএসসি পাশ, তিনি পেশায় গৃহিণী। রেবেকা আক্তার লাকীর যোগ্যতা এইচএসসি, তিনি পেশা হিসেবে লিখেছেন “জনপ্রতিনিধি”। মিনা বেগমের যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি, তিনি পেশায় বেসরকারি চাকরি করছেন।
সংরক্ষিত ৯নং ওয়ার্ডের প্রার্থী শিউলি আক্তারের যোগ্যতা স্বাক্ষরজ্ঞান, তার পেশা হলফনামায় পাওয়া যায়নি, তার বিরুদ্ধে বর্তমানে আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। সাদিয়া জাহান সুমি স্বশিক্ষিত, তার কোনো পেশা নেই।
মোছা. নাজমা বেগমের যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি, তিনি পেশায় একজন গৃহিণী। ছামিরুন নেসা এসএসসি পাশ, পেশার জায়গায় লিখেছেন “প্রযোজ্য নহে”। আছমা বেগমের যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি, তিনি পেশায় গৃহিণী।
সংরক্ষিত ১০নং ওয়ার্ডের প্রার্থী আয়েশা খাতুন কলি এসএসসি পাশ,তিনি পেশার জায়গায় লিখেছেন “প্রযোজ্য নহে”। মোছা. রুমা আক্তারের যোগ্যতা স্নাতক, তিনি পেশায় “মহিলাদের পোশাক তৈরি ও থান কাপড় বিক্রেতা”। মোছা. হাছিনা বেগম স্বশিক্ষিত, তার পেশা গৃহিণী। মোছা. রুমা আক্তার রতœা স্বশিক্ষিত, তিনিও পেশায় গৃহিণী। মোছা. হোসনে আরা বেগম এসএসসি পাশ, তিনি পেশায় গৃহিণী। অর্পনা রাণী ঘোষ এসএসসি পাশ, তার পেশা গৃহিণী। মোছা. জুলেখা বেগম স্বশিক্ষিত, তিনি বেসরকারি চাকরি করছেন। মাহমুদা ইসলাম চৌধুরী স্বশিক্ষিত, পেশা হিসেবে লিখেছেন “নিজ মালিকানাধীন অটো রিকশা”। তাহমিনা সুলতানার শিক্ষাগত যোগ্যতা হলফনামায় পাওয়া যায়নি। তিনি পেশায় গৃহিণী। তিনি মোট ৫ মামলার আসামি ছিলেন।৩ মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেও বর্তমানে তার বিরুদ্ধে আদালতে ২টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
সংরক্ষিত ১১নং ওয়ার্ডের প্রার্থী সাজেদা বেগমের যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি, তার পেশা গৃহিণী। খেলা রাণী নাথ এসএসসি পাশ, তিনি পেশা হিসেবে শাহজালাল উপশহরের মা ও শিশু হাসপাতালে চাকরি করেন। ফাতেমা বেগম সাথীর যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক, তার পেশায় টেইলারিং। রাহেলা বেগম স্বশিক্ষিত, তিনি পেশায় গৃহিণী।
মোছা. রোপসানা আক্তার রোভার যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি, তার পেশা টেইলার্স। মোছা. রুকসানা বেগমের যোগ্যতা সপ্তম শ্রেণী, তিনি পেশায় গৃহিণী। পারবিন বেগমের যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি, তার পেশা গৃহিণী। মোছা. আমিনা বেগমের যোগ্যতাও অষ্টম শ্রেণি, তিনিও পেশায় গৃহিণী। মারজানা তাহরীক খালিক স্বশিক্ষিত এবং তার পেশা কৃষি কাজ।
সংরক্ষিত ১২নং ওয়ার্ডের প্রার্থী ছালেহা বেগমের যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি, তার পেশা টেইলারিং। নাজমা আক্তার স্বশিক্ষিত, তার পেশা গৃহিণী। ফাতেমা আক্তার পারুল স্বশিক্ষিত, তার পেশা টেইলারিং। রুমি আহমদের শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি, তিনি পেশায় গৃহিণী। শিরিন আক্তার এসএসসি পাশ, তিনি পেশায় ব্যবসায়ী।
আছমা আক্তার পারভীনের যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি, তিনি পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান। মোছা. হাজেরা বেগমের যোগ্যতা এম.এস.এস, তিনি পেশায় নগরীর শিবগঞ্জ সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। সেলিনা আক্তারের যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি, পেশা হিসেবে তিনি লিখেছেন “প্রযোজ্য নহে”। লিপি বেগম স্বশিক্ষিত, তিনি পেশায় গৃহিণী।
সংরক্ষিত ১৩নং ওয়ার্ডের প্রার্থী মোছা. শিউলি আক্তার এইচএসসি পাশ, তিনি পেশায় টুকেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য। মোছা. শোভা আক্তার বিএ পাশ, তার পেশা গৃহিণী। রেসমা আক্তার স্বশিক্ষিত, তিনি পেশায় গৃহিণী। খালেদা আক্তার শাপলা এইচএসসি পাশ, তিনি পেশা হিসেবে লিখেছেন “ডিপেন্টডেন্ট-পিতার উপর”। মাহমুদা আক্তার রীনা স্বশিক্ষিত, পেশার জায়গায় লিখেছেন “প্রযোজ্য নহে”। ডলি বেগমের শিক্ষাগত যোগ্যতা এলএলবি, তিনি পেশায় একজন শিক্ষানবীস আইনজীবী। লাভলী বেগম স্বশিক্ষিত, তিনি পেশায় গৃহিণী। জলি পুরকায়স্থ ডিপ্লোমা ইন প্যারামেডিকেল পাশ, তিনি ফার্মেসী ব্যবসা করেন। মোছা. রেজিয়া বেগমের যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি, পেশার জায়গায় লিখেছেন “প্রযোজ্য নহে”।
মোছা. নেখবুল বেগমের যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি, তিনি পেশায় গৃহিণী। ফাতেমা বেগম স্বশিক্ষিত, তার পেশা গৃহিণী। কুলসুমা বেগম তাহসিনা স্বশিক্ষিত, পেশার জায়গায় লিখেছেন “প্রযোজ্য নহে”। শেখ তাসলিমা আলী হেনা এসএসসি পাশ, তিনি পেশায় বিউটি পার্লার ও কাপড়ের ব্যবসায়ী।
সংরক্ষিত ১৪নং ওয়ার্ডের ৬ নারী কাউন্সিলর প্রার্থীর সকলেরই পেশা গৃহিণী। এর মধ্যে মোছা. লিলি বেগম স্বশিক্ষিত, জাহানারা বেগমের যোগ্যতা নবম শ্রেণি, সুবিনা বেগম সুবনা ও মোছা. নুরজাহান বেগম স্বশিক্ষিত, বাবলী আক্তার এসএসসি পাশ এবং মোছা. সাহেদা খাতুন রেজি হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা দশম শ্রেণি উল্লেখ করেছেন।