ই-বর্জ্যের জঞ্জাল
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ জুন ২০২৩, ৪:৪০:২৩ অপরাহ্ন
![ই-বর্জ্যের জঞ্জাল ই-বর্জ্যের জঞ্জাল](https://sylheterdak.com.bd/wp-content/uploads/2023/05/editorial-768x512-2-300x200-1.jpg)
সৎ হতে হবে অথবা সৎ লোকের অনুসন্ধান করতে হবে। -ডেমিক্রিটাস
প্রতি বছর দেশে সৃষ্টি হচ্ছে ৩০ লাখ মেট্রিকটন ই-বর্জ্য। আর ২০২৫ সাল নাগাদ কোটি টনের ই-বর্জ্যের ভাগাড়ে পরিণত হবে বাংলাদেশ। যথাযথ ব্যবস্থাপনা না থাকায় ই-বর্জ্য দূষিত করছে পানি, বায়ু ও মাটি। বাড়াচ্ছে পরিবেশের তাপমাত্রা এবং বিনষ্ট করছে জমির উর্বরতাও। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এখনই দেশের ‘ই-বর্জ্য’ নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে স্মার্ট বাংলাদেশ।
‘ই-বর্জ্য’ মানে ইলেকট্রনিক বর্জ্য। অর্থাৎ নষ্ট ইলেক্ট্রনিক পণ্যই ই-বর্জ্য। সময়ের তাগিদে প্রতিনিয়ত বাড়ছে প্রযুক্তির উৎকর্ষতা। তার সঙ্গে বাড়ছে বিভিন্ন ধরণের ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্যবহার। এর মধ্যে রয়েছে- টেলিভিশন, ফ্রিজ, মোবাইল ও কম্পিউটার ইত্যাদি। মেয়াদোত্তীর্ণ বা নষ্ট হয়ে যাওয়া পণ্যগুলোর একটা অংশ ফেরিওয়ালা বা মেকানিকের দোকানে বিক্রি করা হয়। আবার ব্যাটারি, মোবাইল, লাইটসহ অধিকাংশ নষ্ট ইলেক্ট্রনিক পণ্যই ফেলে দেয়া হয় যেখানে সেখানে। ব্যবহার উপযোগিতা হারালেও এগুলোর ভেতরে রয়ে যায় মানব শরীর ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ধাতব ও রাসায়নিক উপাদান। সাধারণত বাতিল বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের মধ্যে থাকে পারদ, সীসা, দস্তা, বেরিলিয়াম, ক্যাডমিয়াম, আর্সেনিক, নাইট্রাস অক্সাইডসহ বিভিন্ন ধাতব ও রাসায়নিক উপাদান। পরিবেশে মিশে যাওয়ায় এসব বিষাক্ত উপাদানে জনস্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গর্ভবতী নারী ও শিশুরা। এর থেকে ক্যান্সার রোগেরও সৃষ্টি হতে পারে বলে আশংকা রয়েছে। জানা যায়, যেখানে অকেজো পণ্য ফেলে দেয়া হয়, সেখানে অনেক কেমিক্যাল রিয়্যাকশন হয়। এসিড যখন রিলিজ হয় তখন ক্যাডমিয়াম পানিতে চলে আসে। এছাড়া এগুলো পোড়ালে বায়ু দূষণ হয়।পরিসংখ্যানে দেখা যায়,বছরে শুধু স্মার্ট ডিভাইসেই সৃষ্টি হচ্ছে সাড়ে ১০ লাখ টন ই-বর্জ্য। আর শঙ্কার বিষয় হচ্ছে, বছরে এই বর্জ্য বাড়ছে ৩০ শতাংশ হারে। আগামি ২০৩০ সাল নাগাদ বছরে বিলিয়ন ইউনিট স্মার্ট পণ্য উৎপাদন হবে। এতে ই-বর্জ্যের আকার ভয়াবহ রূপ নেবে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে সতর্ক হতে হবে এখনই। সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে, ই-বর্জ্যের কোন গাইডলাইন নেই। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রতিটি পণ্যের সঙ্গে একটি ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নীতিমাল তৈরি করা দরকার। ২০১৭ সালে সরকার একটি ই-বর্জ্য নীতিমালা প্রণয়নের কাজ শুরু করে। কিন্তু এখনও তা চূড়ান্ত হয় নি। পাশাপাশি এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচতে জনসচেতনতা তৈরিও জরুরি।