প্রতিদ্বন্দ¦ী প্রার্থীর বাসার সামনে অস্ত্রের মহড়া
কাউন্সিলর প্রার্থী আফতাব খানের প্রার্থীতা বাতিল করল ইসি # অস্ত্রধারী গ্রেফতার না হওয়ায় আতংক
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ জুন ২০২৩, ৫:২৫:১২ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : প্রতিদ্বন্দ¦ী প্রার্থীর বাসার সামনে অস্ত্রের মহড়া দেয়ার ঘটনায় সিসিক নির্বাচনের ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আফতাব হোসেন খানের প্রার্থীতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গতকাল বুধবার বিকেলে তার প্রার্থীতা বাতিল করা হয়।
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সিলেটের ডাককে এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানান, প্রতিদ্বন্দ¦ী প্রার্থীর অভিযোগ ও এজাহারের ভিত্তিতে রিটার্ণিং অফিসার তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালা-২০১৬ এর বিধি ৩০ লঙ্ঘনের দায়ে, বিধি ৩১ ও ৩২ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল অথবা তার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না মর্মে সে বিষয়ে লিখিত বক্তব্যসহ নির্বাচন কমিশনে গতকাল বুধবার বিকেলে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেন তিনি।
আইনজীবীসহ ব্যক্তিগতভাবে তিনি ইসিতে এসে বক্তব্য দেন। এসময় শুনানি শেষে তার প্রার্থীতা বাতিল করে ইসি।
ইসির এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উচ্চ আদালতে যে কেউ যাওয়ার অধিকার আছে। এটি তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
জানা গেছে, ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সায়ীদ মো. আবদুল্লাহ গেল শুক্রবার রিটার্ণিং কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, গত মঙ্গলবার বর্তমান কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খানের নেতৃত্বে ১০-১২টি মোটরসাইকেলে ২০ থেকে ২৫ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তার বাসার ফটকের সামনে আসেন। এ সময় সন্ত্রাসীরা বন্দুক তাক করে তাকে (আবদুল্লাহ) ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেন। পাশাপাশি ঘর-বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় এয়ারপোর্ট থানায় মামলা হয়। মামলার প্রধান আসামী করা হয় কাউন্সিলর প্রার্থী ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন খানকে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে সিসিক নির্বাচনের রিটার্ণিং কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
গত সোমবার ইসির পরিচালক (জনসংযোগ) মো. শরিফুল আলম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৭ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আফতাব হোসেন খানের (ঘুড়ি প্রতীক) বিরুদ্ধে, লোকজনসহ অপর প্রতিদ্বন্দ¦ী প্রার্থীর বাড়ির সামনে সশস্ত্র মহড়া করার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে সিসিটিভি ফুটেজ, ভিডিও-চিত্র এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি প্রচারিত হয়েছে। তাছাড়া উক্ত ওয়ার্ডের কাউন্সিল প্রার্থী সায়ীদ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (লাটিম প্রতীক) এ বিষয়ে কমিশন বরাবর লিখিত অভিযোগ ও এজাহার দায়ের করেছেন। এর প্রেক্ষিতে ইসিতে তলব করা হয় আলোচিত কাউন্সিলর প্রার্থী আফতাব হোসেন খানকে। এর আগে গত সোমবার উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন আফতাব। আফতাব হোসেন খান সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে গতরাত ৯টায় আফতাব হোসেন খানের মোবাইলে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
এদিকে, বন্দুক নিয়ে প্রকাশ্যে মহড়ার এক সপ্তাহ হলেও এখনো অস্ত্রধারীদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অস্ত্রধারীর নাম আবুল কালাম আজাদ ওরফে তুহিন নগরীর লন্ডনী রোডে দীর্ঘদিন ধরে পরিবারের সাথে বসবাস করে আসলেও তার মূল বাড়ি নোয়াখালী জেলার সেনবাগে। তার পিতার নাম নুরে আলম। ২০২১ সালে সর্বশেষ তুহিন র্যাবের হাতে অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়েছিলো। তার বিরুদ্ধে ২০১০ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মাদক, অস্ত্র, ছিনতাই, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও প্রতারণার অভিযোগে সিলেটের এয়ারপোর্ট থানায় ১৮টি মামলা রয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ বার।
অস্ত্রধারীরা গ্রেফতার না হওয়ায় এবং অস্ত্র উদ্ধার না হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দা ও ভোটারদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।