উষ্ণতম বছর আসছে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জুন ২০২৩, ৪:৩৪:৩২ অপরাহ্ন
সবার সাথে তাল মিলিয়ে যে কথা বলে সে ব্যাক্তিত্বহীন। -মার্ক টোয়াইন
রেকর্ডভাঙ্গা উষ্ণতায় হা পিত্যেশ অবস্থা বিরাজ করছে দেশে। বিশ্বের আরও অনেক দেশেও একই অবস্থা। কোন কোন দেশ পুড়ছে দাবানলে। বিশ্বের তাপমাত্রা বাড়ছে। কমছে শীতকালের স্থায়িত্ব। এমনি পরিস্থিতিতে বিজ্ঞানিগণ পূর্বাভাস দিচ্ছেন, আগামি বছর (২০২৪) হবে সবচেয়ে উষ্ণতম বছর। সেবছর বিশ্বে উষ্ণতা এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাবে। এর আগে চলতি বছরকে (২০২৩) উষ্ণতম বছর হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়। তার মানে এ বছরের উষ্ণতার রেকর্ডও ভঙ্গ হবে আগামি বছর।
মূলত এল নিনোর প্রভাবে এই বৈরি আবহাওয়া সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের। প্রাকৃতিক আবহাওয়া প্রক্রিয়া প্রশান্ত মহাসাগরে ‘এল নিনো’ নামে পরিচিত। এল-নিনো হলো, যে কোন জায়গার জলবায়ু ব্যবস্থার সর্বোচ্চ ওঠানামা। প্রাকৃতিক এ ঘটনার উৎপত্তিস্থল প্রশান্ত মহাসাগরে। এল নিনোর প্রভাবে জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন ঘটতে পারে বলে সতর্ক করছেন বিজ্ঞানিরা। আর সেই প্রভাব ইতোমধ্যেই অনেকটা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এরই মধ্যে উষ্ণ হতে থাকা পৃথিবীর তাপমাত্রা আরও বাড়বে। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বদলে যাবে পৃথিবীর স্বাভাবিক পরিবেশ। এল-নিনোর প্রভাবে ২০২৪ হতে চলেছে বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণতম বছর। তাছাড়া, এল-নিনোর প্রভাবে অস্ট্রেলিয়ায় খরা, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাত ও ভারতে বর্ষার ভরা মৌসুমে কম বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। সাধারণত গড়ে দুই থেকে সাত বছর পরপর এল-নিনো পরিস্থিতি হয়। সর্বশেষ ২০১৮-১৯ সালে এ ধরনের এল-নিনো পরিস্থিতি দেখা গিয়েছিলো। ১৯৯৭-১৯৯৮ সালেও শক্তিশালী এল-নিনোর প্রভাবে ঝড় ও বন্যার আধিক্য ছিলো। আর বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণতম বছরগুলো রেকর্ড হয়েছে এল-নিনো চলাকালেই। বিজ্ঞানিদের আশঙ্কা, চলতি গ্রীষ্মে এবং পরবর্তীকালে স্থলভাগে ও সমুদ্রে রেকর্ড মাত্রার তাপমাত্রা দেখা দিতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, এল নিনোর বিরূপ প্রভাবে স্বাভাবিক বায়ুপ্রবাহ কমে যায়। বাতাসহীন গুমোট পরিস্থিতি বিরাজ করে। কখনও বাতাস উল্টো দিকেও বইতে থাকে।
আসল কথা হলো, যেভাবেই হোক মানবজাতির জন্য বিশাল বিপর্যয় অপেক্ষা করছে। এল নিনোর প্রভাবে আবহাওয়া পরিস্থিতি আগামি মাসগুলোতে আরও বিবর্তিত হবে। যা উচ্চ বৈশ্বিক তাপমাত্রা এবং নতুন তাপের রেকর্ড সৃষ্টি করবে। জাতিসংঘ বলেছে, বিশ্বকে এল নিনোর প্রভাব থেকে উত্তরণের জন্য প্রস্তুত হওয়া উচিত। প্রতিটি সরকারের উচিৎ এ ব্যাপারে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া।