সিসিক নির্বাচনের প্রার্থীদের ব্যাপারে সুজন’র পর্যবেক্ষণ
স্বল্প শিক্ষিত প্রার্থীর ছড়াছড়ি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জুন ২০২৩, ৮:৪৪:০৫ অপরাহ্ন
বেড়েছে ব্যবসায়ী ও ফৌজদারি অপরাধ সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর সংখ্যাও
কাউসার চৌধুরী :
সিলেট সিটি করপোরেশনের গেল নির্বাচনের চেয়ে এবারের নির্বাচনে স্বল্প শিক্ষিত প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই সংখ্যা ছিল ৬৬ দশমিক ১৫ পার্সেন্ট। এবার তা ৬৯ দশমিক ৬৭ পার্সেন্টে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৮ সালের চেয়ে এবার বেড়েছে ব্যবসায়ী প্রার্থীর সংখ্যাও। গেল বারের চেয়ে এবার ফৌজদারি অপরাধ সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর সংখ্যাও বেড়েছে। একইভাবে স্বল্প আয়ের প্রার্থীর হারও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন’র পর্যবেক্ষণে প্রতিদ্বন্দি¦তাকারী প্রার্থীদের ব্যাপারে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
সুজনের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০২৩ সালের নির্বাচনে স্বল্প শিক্ষিত প্রার্থীর হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সালে ছিল ৬৬ দশমিক ১৫ পার্সেন্ট, যা এবার ৬৯ দশমিক ৬৭ পার্সেন্ট। তবে উচ্চ শিক্ষিতের (¯œাতক ও ¯œাতকোত্তর ডিগ্রিধারী) হার কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। ২০১৮ সালে ২১ দশমিক ৫৩ পার্সেন্ট থেকে হ্রাস পেয়ে ২০২৩ সালের নির্বাচনে এই হার দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ০৩ পার্সেন্ট। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গ-ি অতিক্রম করেননি এমন প্রার্থীর হারও ২০১৮ সালের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সালে এই হার
ছিল ৫১ দশমিক ৭৯, এবারের নির্বাচনে তা দাঁড়িয়েছে ৫৫ দশমিক ১৯ পার্সেন্ট।
২০১৮ সালের তুলনায় স্বল্পশিক্ষিত প্রার্থী বৃদ্ধি পাওয়া এবং উচ্চ শিক্ষিত প্রার্থীর হার হ্রাস পাওয়া নিঃসন্দেহে একটি নেতিবাচক বিষয়। অন্যান্য সিটির চিত্রটি ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত।
এবারের নির্বাচনে ব্যবসায়ীদের প্রতিদ্বন্দি¦তার হারও গতবারের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সালে প্রার্থীদের মধ্যে ব্যবসায়ীর হার ছিল ৫২ দশমিক ৮২ পার্সেন্ট আর এবারের নির্বাচনে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৫৬ পার্সেন্টে। সিসিকের ৭ মেয়র প্রার্থীই ব্যবসায়ী। ২৭৩ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ১৮৯ জনের (৬৯.২৩%) পেশাই ব্যবসা। এছাড়াও ২৫ জন কৃষিজীবী, ১৮ জন চাকরিজীবী এবং ৯ জন আইনজীবী। পেশার ঘর পূরণ করেননি ৮ জন।
সংরক্ষিত আসনের ৮৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৪৭ জনই (৫৪.৬৫%) গৃহিণী। ১১ জনের পেশা ব্যবসা।
তিন পদে মোট প্রতিদ্বন্দি¦তাকারী ৩৬৬ প্রার্থীর মধ্যে ২০৭ জন অর্থাৎ ৫৬ দশমিক ৫৬ পার্সেন্টই পেশায় ব্যবসায়ী। এছাড়া ২৪ জন অর্থাৎ ৬ দশমিক ৫৬ পার্সেন্ট চাকরির সাথে সম্পৃক্ত আছেন এবং ১২ জন অর্থাৎ ৩ দশমিক ২৮ পার্সেন্ট হলেন আইনজীবী। বিশ্লেষণে অন্যান্য নির্বাচনের মতো সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও ব্যবসায়ীদের প্রাধান্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই প্রবণতা নির্বাচনে অর্থের ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষণ বলে অনেকে মনে করেন। পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান ব্যবসায়ীদের আধিক্য এবং অন্যান্য পেশার প্রতিনিধিত্ব হ্রাস পাওয়া ইতিবাচক নয়। একইসাথে তা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্যও মঙ্গলজনক নয় বলে মনে করে সুজন।
বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দি¦তাকারী ৩৬৬ প্রার্থীর মধ্যে বর্তমানে ৮৬ জন অর্থাৎ ২৫ দশমিক ৫০ পার্সেন্টের বিরুদ্ধে মামলা আছে। ৮৮ জন অর্থাৎ ২৪ দশমিক ০৪ পার্সেন্টের বিরুদ্ধে অতীতে মামলা ছিল এবং ৫০ জন অর্থাৎ ১৩ দশমিক ৬৬ পার্সেন্টের বিরুদ্ধে উভয় সময়ে মামলা ছিল বা আছে। ৩০২ ধারায় ৮ জনের বিরুদ্ধে বর্তমানে এবং ৭ জনের বিরুদ্ধে অতীতে ফৌজদারি মামলা ছিল। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের তুলনায় ২০২৩ সালের নির্বাচনে ফৌজদারি মামলা সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের মধ্যে বর্তমান ও অতীত মামলার হার কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সালে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বর্তমান মামলা ছিল ২৩ দশমিক ০৭ পার্সেন্ট। আর এবারের নির্বাচনে তা ২৩ দশমিক ৫০ পার্সেন্ট এবং অতীত মামলার ক্ষেত্রে এই হার ছিল ২২ দশমিক ৫৬ পার্সেন্ট। এবারে তা দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ০৪ পার্সেন্টে। এই প্রবণতাটিও কোনোভাবেই ইতিবাচক নয়।
৭ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে শুধুমাত্র ২ জনের (২৮.৫৭%) বিরুদ্ধে বর্তমানে এবং ৩ জনের (৪২.৮৬%) বিরুদ্ধে অতীতে ফৌজদারি মামলা সংশ্লিষ্টতা ছিল। ২৭৩ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৮০ জনের (২৯.৩০%) বিরুদ্ধে বর্তমানে মামলা চলমান রয়েছে। অতীতে মামলা ছিল ৮৩ জনের (৩০.৪০%) বিরুদ্ধে। বর্তমানে মামলা আছে ও অতীতেও মামলা ছিল এমন প্রার্থী আছেন ৪৭ জন (১৭.২২%)। কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে বর্তমানে ৮ জনের বিরুদ্ধে এবং অতীতে ৭ জনের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় অর্থাৎ হত্যার অভিযোগে মামলা ছিল। বর্তমানে ৩০২ ধারায় মামলা আছে এবং অতীতেও মামলা ছিল এমন প্রার্থী আছেন ১ জন। সংরক্ষিত আসনের ৮৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৪ জনের নামে ফৌজদারি মামলা আছে। অতীতে মামলা ছিল ২ জনের বিরুদ্ধে। বর্তমানে ও অতীতে উভয় সময়ে মামলা ছিল বা আছে এমন প্রার্থী আছেন ১ জন।
২০১৮ সালের নির্বাচনের তুলনায় ২০২৩ সালের নির্বাচনে স্বল্প আয়ের প্রার্থীর হার কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সালে এই হার ছিল ৮০ পার্সেন্ট। এই নির্বাচনে তা বেড়ে ৮৪ দশমিক ৪২ পার্সেন্টে দাড়িয়েছে। ২০১৮ সালে ৫০ লক্ষ টাকার অধিক উপার্জনকারী কোনো প্রার্থী না থাকলেও এবারের নির্বাচনে ২ জন প্রতিদ্বন্দি¦তা করছেন।
বিশ্লেষণে বলা যায় যে, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দি¦তায় স্বল্প আয়ের প্রার্থীদের অংশগ্রহণ গত নির্বাচনের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসাথে অধিক আয়ের প্রার্থীদের অংশগ্রহণও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দি¦তায় স্বল্প আয়ের প্রার্থীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির প্রবণতাটি অন্য সিটি থেকে স্বতন্ত্র।
আসন্ন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ সম্পদ নজরুল ইসলাম বাবুলের। সর্বোচ্চ সম্পদের অধিকারী পাঁচ কাউন্সিলর প্রার্থী হলেন, আজাদুর রহমান আজাদ, মতিউর রহমান, মো. হেলাল উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন লোলন ও শান্তনু দত্ত সনতু। আর সংরক্ষিত আসনের সর্বোচ্চ সম্পদের অধিকারী পাঁচ প্রার্থী হলেন, মোছা. কামরুন নাহার চৌধুরী, সালমা সুলতানা, শাহানারা বেগম, সুবিনা বেগম সুবনা ও শাহানা বেগম শানু। তিনটি পদে প্রতিদ্বন্দি¦তাকারী ৩৬৬ প্রার্থীর মধ্যে ১৫৫ জন ৫ লাখ টাকার কম সম্পদের মালিক। ৫ লাখ থেকে ২৫ লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে ১৩৬ জনের। ২৫ লাখ টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে ২৯ জনের, ৫০ লাখ টাকা থেকে ১ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে ১৩ জনের, ১ কোটি টাকা থেকে ৫ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে ১৩ জনের। উল্লেখ্য, ২০ জন প্রার্থী সম্পদের তথ্য দেননি। এই ২০ জনকে বিবেচনায় নিলে স্বল্প সম্পদের অধিকারীদের সংখ্যা ১৭৫ জন।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনের তুলনায় কম সম্পদের মালিকদের প্রতিদ্বন্দি¦তার হার হ্রাস পেয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ৫৯ দশমিক ৪৮ পার্সেন্ট প্রার্থী ছিলেন ৫ লক্ষ টাকার কম সম্পদের মালিক। এবারের নির্বাচনে এই হার ৪৭ দশমিক ৮১ পার্সেন্ট। অপরদিকে, কোটিপতির হারও এই নির্বাচনে হ্রাস পেয়েছে। বিগত নির্বাচনে কোটিপতির হার ৫ দশমিক ১২ পার্সেন্ট থাকলেও এবারের নির্বাচনে তা হয়েছে ৩ দশমিক ৫৫ পার্সেন্ট। বিশ্লেষণে বলা যায় যে, এই নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দি¦তায় স্বল্প সম্পদের মালিকদের হার যেমন হ্রাস পেয়েছে, তেমনই অধিক সম্পদের মালিকদের প্রতিদ্বন্দি¦তার হারও হ্রাস পেয়েছে। অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনের সাথে তুলনা করলে দেখা যায় যে, অধিক সম্পদের মালিকদের প্রতিদ্বন্দি¦তার হার হ্রাস পাওয়ার বিষয়টি প্রচলিত ধারার বিপরীত। এছাড়া প্রার্থীদের সম্পদের হিসাবের যে চিত্র উঠে এসেছে, তাকে কোনোভাবেই সম্পদের প্রকৃত চিত্র বলা যায় না। কেননা, প্রার্থীদের মধ্যে অধিকাংশই প্রতিটি সম্পদের মূল্য উল্লেখ করেন না, বিশেষ করে স্থাবর সম্পদের। আবার উল্লেখিত মূল্য বর্তমান বাজার মূল্য না; এটা অর্জনকালীন মূল্য। কাজেই অধিকাংশ প্রার্থীর সম্পদের পরিমাণ প্রকৃত পক্ষে আরও অনেক বেশি। প্রকৃত সম্পদের চিত্র তুলে ধরতে হলে তথ্যের ছকটি অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, দায়-দেনাগ্রস্ত প্রার্থীর হার বিগত নির্বাচনের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, দায়-দেনাগ্রস্ত প্রার্থীর হার বিগত নির্বাচনের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়-দেনার হার ছিল ৬ দশমিক ৬৭ পার্সেন্ট আর এবারের নির্বাচনে এর হার ৮ দশমিক ৭৪ পার্সেন্ট। এছাড়াও তুলনা করলে দেখা যায় যে, বিগত নির্বাচনের চেয়ে এবার আয়কর প্রদানকারীর সংখ্যাও হার হ্রাস পেয়েছে। ২০১৮ সালে আয়কর প্রদানকারীর হার ছিল ৪৫ দশমিক ৬৪ পার্সেন্ট। এবারের নির্বাচনে তা দাঁড়িয়েছে ৪২ দশমিক ০৭ পার্সেন্টে। অনেক প্রার্থী আয়কর সার্টিফিকেট দিলেও আয়কর বিবরণী না দেওয়ায় তাঁরা কত আয়কর দিয়েছেন অথবা আদৌ আয়কর দিয়েছেন কি না তা জানা সম্ভব হয়নি।
সিসিক নির্বাচনে মোট ৩৬৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দি¦তা করলেও ৮নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সালেহা কবীর সেপীর তথ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া না যাওয়ায় ৩৬৬ প্রার্থীর হলফনামা বিশ্লেষণ করে সুজন।
নির্বাচনে মেয়র পদে ৭ জন, সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ২৭৩ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দি¦তা করছেন। আগামী ২১ জুন বুধবার পঞ্চম বারের মতো সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সুজন’র মতবিনিময়
এদিকে, সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০২৩ এর প্রতিদ্বন্দি¦তাকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন এবং অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরের ধোপাদিঘীরপাড়স্থ একটি হোটেলে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সুজন সিলেট জেলার সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও হাঙ্গার প্রজেক্টের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মোজাম্মেল হকের পরিচালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার। এতে সুজন সিলেট জেলার যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান, সিলেট প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ কাউসার চৌধুরী, ডিবিসি নিউজের প্রত্যুষ তালুকদার, প্রথম আলোর মানাউবি সিংহ, আজকের পত্রিকার ইয়াহইয়া মারুফ, বিডিনিউজের বাপ্পা মৈত্র, একাত্তরের কথার সাঈদ চৌধুরী টিপু, হাঙ্গার প্রজেক্টের হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা কুদরত পাশা প্রমুখ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
এতে সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বলেন, ইতোমধ্যে গাজীপুর, বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনগুলো সামগ্রিক বিবেচনায় সুষ্ঠু হয়েছে বলে আমরা মনে করি। তবে, বিএনপিসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দল এই নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায়, রাজনৈতিক দলভিত্তিক এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের বিবেচনায় গ্রহণযোগ্যতা সংকটে পড়বে। বরিশালের ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ইসলামী আন্দোলন সিলেট ও রাজশাহী সিটি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ায় এই দুটি নির্বাচন আরও প্রতিযোগিতাহীন হয়ে পড়বে। তবে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে হওয়ায় সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিকে দেশের সচেতন মানুষদের দৃষ্টি থাকবে। আমরা গণমাধ্যমের সহযোগিতায় প্রার্থীদের তথ্যের বিশ্লেষণ জনগণের কাছে তুলে ধরতে চাই। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কী ধরনের প্রার্থীরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দি¦তা করছেন, সে সম্পর্কে ভোটাররা ধারণা পাবেন এবং ভোটারদের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সকল প্রার্থী সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগ্রহ সৃষ্টি হবে। নির্বাচনে দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, যুদ্ধাপরাধী, নারী নির্যাতনকারী, মাদক কারবারী, চোরাকারবারী, ঋণ খেলাপী, সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি, ভূমিদস্যু, অসৎ, অযোগ্য এবং গণবিরোধী ব্যক্তিকে ভোট না দেয়ার জন্য সুজনের পক্ষ থেকে ভোটারদের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।