মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল’র ২১ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ জুন ২০২৩, ৮:২৯:৩৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুলও ২১ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন। শনিবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ২১ দফা ইশতেহার ঘোষণার পর গতকাল রোববার ইশতেহার ঘোষণা করেন জাপা প্রার্থী বাবুল।
আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠেয় সিসিক নির্বাচনে বাবুলকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ভাবছেন ভোটাররা। রোববার কুমারপাড়াস্থ প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে দলের নেতাদের নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইশতেহার ঘোষণা করেন বাবুল। সংবাদ সম্মেলনে বাবুল প্রতিপক্ষ প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আইন লংঘনের অভিযোগ এনে ভোটারদের অনিয়ম, পেশিশক্তির প্রদর্শন, অনৈতিক চর্চার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়ার আহ্বান জানান। প্রতিপক্ষ প্রার্থীর অপতৎপরতায় শংকা প্রকাশ করে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। প্রশাসনকে ব্যবহার করা হচ্ছে। নানা কূটকৌশলের ছক কষে সরকারদলীয় প্রার্থী জয়ী হতে চাইছেন। সিলেটের মানুষ কোনোদিন অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়নি। হুমকি-ধামকি পেশিশক্তিকে ভয় করেনি। যখনই সুযোগ পেয়েছে সব হিসাব কড়া-গন্ডায় মিলিয়ে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।
বাবুল বলেন, সিলেট নগরের এখনও অনেক সমস্যা রয়েছে। যানজট, জলাবদ্ধতা ছাড়াও অনেক কিছু করার বাকি রয়েছে। এছাড়া বর্তমানে সিটি করপোরেশনের আয়তন অনেক বেড়েছে। ২৭টি ওয়ার্ড থেকে হয়েছে ৪২টি ওয়ার্ড। বর্ধিত এলাকায় অনেক সমস্যা রয়েছে। অনেক পিছিয়ে রয়েছে নতুন এলাকাগুলো। সুতরাং এই নগরকে যে বা যারা ভালোভাবে জানে, বুঝে তাঁর হাতেই নগর উন্নয়নের দায়িত্ব দেওয়া উচিত। আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’ কেউ এই নগরের সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। যে নগরের অলিগলিই চেনে না তার পক্ষে নগরবাসীর প্রত্যাশা পূরণ কতটুকু সম্ভব এই বিচারের ভার আপনাদের ওপর ছেড়ে দিলাম।
২১ দফা ইশতেহার
নির্বাচিত হলে সিলেটকে একটি নাগরিকবান্ধব, শিল্পবান্ধব, যানজটমুক্ত, পরিবেশবান্ধব, জলাবদ্ধতামুক্ত, সুপরিকল্পিত আবাসনের নগর, সিসিককে সর্বজনীন এবং দায়িত্বশীল একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা, নগরের উন্নয়নে করপোরেশনের সঙ্গে নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, নগর উন্নয়নে স্থায়ী কমিটিগুলোর সঙ্গে স্ব স্ব ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ নাগরিকদের সম্পৃক্ত করা, নগর ভবনকে আধুনিক ও ঐতিহ্যের মিশেলে একটি দৃষ্টিনন্দন নগর ভবনে রূপান্তর করা, ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়ন ও সন্ত্রাসবিরোধী নাগরিক কমিটি গঠন, সেবা খাতকে শক্তিশালী, নতুন অন্তর্ভুক্ত ১৫টি ওয়ার্ডের পরিকল্পিত উন্নয়ন, পানীয় জলের সমস্যা সমাধান, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রকল্প গ্রহণ, জলাবদ্ধতা নিরসন ও সুরমা নদী খনন, নাগরিক সেবার ক্ষেত্রে প্রবাসীদের অগ্রাধিকার, নতুন শিশু পার্ক নির্মাণ, সিসিকের কর ব্যবস্থাপনায় শৃংখলা ফিরিয়ে আনা, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পাঠাগার স্থাপন, ডে কেয়ার সেন্টার চালু, জাদুঘর ও আর্ট গ্যালারি স্থাপন, সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স স্থাপন ও পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, খেলার মাঠ তৈরী ও সবুজায়ন, বস্তিবাসীর জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল স্থাপন, সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে আবাসন প্রকল্প গ্রহণ, প্রতিটি ওয়ার্ডে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও তরুণদের জন্য ফ্রিল্যান্সিংয়ের ব্যবস্থা, সিসিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান নজরুল ইসলাম বাবুল। সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সিলেট জেলা শাখার সভাপতি সাইফুদ্দিন খালেদ, সিলেট মহানগর জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব আব্দুস শহিদ লস্কর বশির সহ জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।