কানাইঘাট ও ছাতকে সুরমার পানি বিপদ সীমার উপরে ॥ তাহিরপুর সড়ক প্লাবিত
সিলেটে বন্যার পদধ্বনি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ জুন ২০২৩, ৮:৫৬:৩৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : অবিরাম বৃষ্টি আর পাহাড়ী ঢল নামায় সিলেট ও সুনামগঞ্জের নদ-নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। অন্যদিকে শনিবার সন্ধ্যায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপদসীমা ছাড়িয়ে গেলে রাতে পুনরায় নিচে নেমে যায়। তবে গতকাল রোববার বিকেলে পুনরায় বিপদসীমা অতিক্রম করে এই পয়েন্টে। অন্যসব পয়েন্টেও বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। দিনভর আবহাওয়া ছিলো বৈরী। অন্যদিকে সুনামগঞ্জে সুরমা নদী ছাতক পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। জেলার নি¤œাঞ্চল ধীরে ধীরে প্লাবিত হচ্ছে। তাহিরপুরের সাথে জেলা সদরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বাংলাাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বন্যা নিয়ন্ত্রণ কন্ট্রোল রুম থেকে গতকাল রোববার জানানো হয়, সন্ধ্যা ৬টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এছাড়া, সিলেটে সুরমার পানি বাড়লে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। সন্ধ্যা ৬টায় এ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। কুশিয়ারা নদীর পানি আমলসীদ পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও পানি বিপদসীমার ১০২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া, কুশিয়ারা নদীর পানি শেওলা ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টেও বাড়তির দিকে। এছাড়া, কানাইঘাটের লোভাছড়া নদীর, জৈন্তাপুরের সারী ও কোম্পানীগঞ্জের ধলাই নদীর পানিও বাড়তির দিকে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ বলেন, সকালে কমলেও বিকেল ৩টার পর সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করে।
পাউবো, সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দোহা জানান, ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সুনামগঞ্জের নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল রোববার সকালে ছাতক পয়েন্ট দিয়ে পানি বিপদসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ভারতের টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে সুনামগঞ্জে বন্যা হতে পারে।
সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকাল রোববার সকাল ৬টা থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৯২ মিলিমিটার এবং এদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
অপরদিকে, গতকাল রোববার বৈরী আবহাওয়া বিদ্যামান ছিলো সিলেটে। সারা দিন থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিলো।
এদিকে, টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ জেলার সুরমা, যাদুকাটা, কুশিয়ারা, ভোলাই, পাটলিসহ সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। রোববার বিকেল পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জের ছাতক পয়েন্টে বিপদসীমার শূন্য দশমিক ৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে ছাতক, দোয়ারাবাজার উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে।
পাউবো সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত ৯টা থেকে রোববার বিকেল পর্যন্ত নদীতে পানি বাড়ছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জের বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১০০ মিলিমিটার।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে অনেক এলাকায় নদীর পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। জেলার তাহিরপুর উপজেলার শক্তিয়ার খোলা এলাকার এক কিলোমিটার সড়ক যাদুকাটা নদীর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বর্তমানে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে সবকটা নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।