সিলেটে ভোটের লড়াই আজ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২১ জুন ২০২৩, ৫:১৫:৩৭ অপরাহ্ন
বিজিবি, র্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৭ হাজার সদস্য মাঠে মেয়র, কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ৩৬৮ প্রার্থী
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা সাড়ে ৪ হাজার ইসির কড়া সতর্কতা
কাউসার চৌধুরী:
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) বহুল প্রত্যাশিত নির্বাচন আজ বুধবার। আষাঢ়ের বৃষ্টি¯œাত বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে প্রথমবারের মতো সিসিক নির্বাচনে ভোটাররা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এ ভোট দেবেন। নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জাকের পার্টিসহ তিনটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীসহ মোট ৮ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন। আর মাঝপথে এসে ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী। সিসিক প্রতিষ্ঠার ২০ বছর পর এবারই প্রথমবারের মতো বর্ধিত সীমানায় মোট ৪২টি ওয়ার্ড নিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনে পুরাতন ২৭ ওয়ার্ডের তুলনায় নবগঠিত ১৫ ওয়ার্ডে প্রার্থীসংখ্যা বেশি। মোট ১৯০ কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২ কেন্দ্রকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এর মধ্যে কেবল সাধারণ আসনের ৩০নং ওয়ার্ডেই প্রতিদ্বন্দি¦তা করছেন সর্বোচ্চ ১৯ জন প্রার্থী। নির্বাচনে মেয়র, কাউন্সিলর ও নারী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দি¦তা করছেন ৩৬৮ জন প্রার্থী। সাধারণ আসনের ৩০নং ওয়ার্ডে সর্বোচ্চ ১৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দি¦তা করছেন। এবার মোট ভোটার সংখ্যা হলেন ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৪৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬৩ জন ও ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৪ জন হলেন নারী ভোটার।
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ৪২ নির্বাহী ও ১৪ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে রয়েছেন। ১০ প্লাটুন বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৭ হাজার সদস্যকে ইতোমধ্যে মাঠে নামানো হয়েছে। ১৯০ প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ দায়িত্ব পালন করবেন সাড়ে ৪ হাজারেরও অধিক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের সরঞ্জামাদি পাঠানো হয়।
রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ইসি সিসিক নির্বাচনের সবকটি ভোটকেন্দ্র ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা দিয়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে।
সিসিক নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সাল কাদের সিলেটের ডাককে জানিয়েছেন, সুন্দর, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকেই ভোট দিবেন। প্রথম বারের মতো সিলেট নগরের ভোটারগণ ইভিএমে ভোট দেবেন। সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ ভোট গ্রহণের জন্যে আমরা বদ্ধপরিকর। এখানে কেউ পেশী শক্তি প্রদর্শন করলে নির্বাচন কমিশন শক্ত হাতে প্রতিরোধ করবে। সিসিক নির্বাচন হবে মডেল। আমরা মডেল নির্বাচন করে দেশবাসীকে দেখাতে চাই। এই নির্বাচন নিয়ে ইসি কড়া সতর্কতায় রয়েছে। অনিয়মের চেষ্টা করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
আর সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. ইলিয়াস শরীফ নগরবাসীকে নির্বিঘেœ ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহবান জানিয়ে বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নগরবাসীকে শান্তিপূর্ণ এই নির্বাচন উপহার দেবো। আশ্বস্ত করতে চাই, আপনারা নির্বিঘেœ কেন্দ্রে ভোট দিতে আসুন। ভোটের সার্বিক পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে এসএমপির পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ নির্বাচনী মাঠে মোতায়েন থাকবে। নির্বাচনে নিরাপত্তায় সাদা পোশাক-পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করেছি। আমাদের মোবাইল পার্টি ও স্ট্রাইকিং ফোর্স এপিবিএন সমন্বয়ে থাকবে। সেই সাথে বিজিবি, র্যাব স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিচারিক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনী পরিবেশ সুন্দর রাখতে সহযোগিতা করবেন।
ইসি সূত্র জানায়, নির্বাচনে মেয়র পদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নৌকা প্রতীকে, জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল লাঙ্গল প্রতীকে, ইসলামী আন্দোলন মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল হাসান হাতপাখা প্রতীকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী যথাক্রমে মো. আব্দুল হানিফ কুটু ঘোড়া প্রতীকে, মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন ক্রিকেট ব্যাট প্রতীকে, মো. শাহজাহান মিয়া বাস প্রতীকে ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা হরিণ প্রতীকে এবং জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুল ইসলাম গোলাপ ফুল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দি¦তা করছেন। বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী সিসিক নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। মেয়র পদে ৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দি¦তা করলেও মূল লড়াই মূলত নৌকা বনাম লাঙ্গলের মধ্যেই হবে বলে ভোটাররা জানিয়েছেন।
৪২টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৩৬৭ জন। এর মধ্যে মেয়র পদে ৮ জন, সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৭৩ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৮৬ জন প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছেন।
সিসিকের ১নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৪ প্রার্থী লড়ছেন। এ ওয়ার্ডের মোট ভোটার সংখ্যা ৯ হাজার ৯২০ জন। ২নং ওয়ার্ডের লড়ছেন ২ প্রার্থী। এ ওয়ার্ডের মোট ভোটার সংখ্যা হলেন ৭ হাজার ৪৩৭ জন। ৩নং ওয়ার্ডের প্রার্থী সংখ্যা ৪ জন। মোট ভোটার হলেন ১২ হাজার ৪৬৩ জন।
৪নং ওয়ার্ডে প্রার্থী ৪ জন। মোট ভোটার রয়েছেন ৯ হাজার ৮৯৫ জন। ৫নং ওয়ার্ডের মোট প্রার্থী হলেন ৭ জন। আর ভোটার সংখ্যা হলেন ১৭ হাজার ৩৫৯ জন। ৬নং ওয়ার্ডের প্রার্থী হলেন ৫ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৮২৭ জন।
৭নং ওয়ার্ডের প্রার্থী ৩ জন। মোট ভোটার সংখ্যা হলেন ২০ হাজার ৮৭৩ জন। ৮নং ওয়ার্ডে প্রার্থী সংখ্যা ৯ জন। মোট ভোটার হলেন ২০ হাজার ৯৬৯ জন। ৯নং ওয়ার্ডে লড়ছেন ২ প্রার্থী। মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ হাজার ৪৩০ জন। ১০নং ওয়ার্ডে প্রার্থী ৬ জন। মোট ভোটার সংখ্যা হল ১৮ হাজার ৫৪৫ জন। ১১নং ওয়ার্ডে প্রার্থী হলেন ৪ জন। মোট ভোটার হলেন ১৪ হাজার ৭৮৭ জন। ১২নং ওয়ার্ডে হলেন ২ প্রার্থী। মোট ভোটার সংখ্যা ১০ হাজার ৯৩৪ জন। ১৩নং ওয়ার্ডের লড়ছেন ৪ জন। মোট ভোটার সংখ্যা হলেন ১০ হাজার ২২২ জন। ১৪নং ওয়ার্ডে ৩ প্রার্থী। মোট ভোটার হলেন ৯ হাজার ৮৪০ জন। ১৫নং ওয়ার্ডে লড়ছেন ৫ প্রার্থী। মোট ভোটার সংখ্যা ১১ হাজার ৫১৬ জন। ১৬নং ওয়ার্ডে প্রার্থী হলেন ৭ জন। মোট ভোটার হলেন ১০ হাজার ২৮৬ জন। ১৭নং ওয়ার্ডে প্রার্থী ৩ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১৫ হাজার ১৩০ জন। ১৮নং ওয়ার্ডে প্রার্থী ৬ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১২ হাজার ৮৭৮ জন। ১৯নং ওয়ার্ডে লড়ছেন ২ প্রার্থী। মোট ভোটার হলেন ১৩ হাজার ৫০৩ জন। ২০নং ওয়ার্ডে প্রার্থী ৪ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১২ হাজার ৬৭ জন। ২১নং ওয়ার্ডে প্রার্থী সংখ্যা ৩ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৫৪০ জন। ২২নং ওয়ার্ডে প্রার্থী হলেন ৭ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১১ হাজার ৯৪২ জন। ২৩নং ওয়ার্ডে প্রার্থী ৪ জন। মোট ভোটার হলেন ৭ হাজার ৭৩৫ জন। ২৪নং ওয়ার্ডে প্রার্থী হলেন ৬ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৮৭৭ জন। ২৫নং ওয়ার্ডে প্রার্থী ৫ জন। মোট ভোটার হলেন ১৪ হাজার ২১২ জন। ২৬নং ওয়ার্ডে লড়ছেন ৪ জন। আর মোট ভোটার সংখ্যা ১৫ হাজার ৫০৬ জন। ২৭নং ওয়ার্ডে প্রার্থী ৭ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ১৬০ জন। ২৮নং ওয়ার্ডে প্রার্থী হলেন ৯ জন। মোট ভোটার হলেন ৬ হাজার ৯১৬ জন। ২৯নং ওয়ার্ডে লড়ছেন ৯ প্রার্থী। মোট ভোটার সংখ্যা ৮ হাজার ১০ জন। ৩০নং ওয়ার্ডে প্রার্থী ১৯ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ৭ হাজার ২৪ জন। ৩১নং ওয়ার্ডে প্রার্থী হলেন ৮ জন। মোট ভোটার হলেন ৫ হাজার ৪৮১ জন। ৩২নং ওয়ার্ডে ১০ প্রার্থী লড়ছেন আর মোট ভোটার সংখ্যা ১২ হাজার ৭৬৮ জন। ৩৩নং ওয়ার্ডে প্রার্থী হলেন ১৬ জন। মোট ভোটার হলেন ৯ হাজার ৫৬৭ জন। ৩৪নং ওয়ার্ডেও লড়ছেন ১৬ প্রার্থী। মোট ভোটার হলেন ৯ হাজার ৩১২ জন। ৩৫নং ওয়ার্ডে প্রার্থী ৩ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১০ হাজার ৫৫ জন। ৩৬নং ওয়ার্ডে প্রার্থী ৬ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১২ হাজার ৯৬ জন। ৩৭নং ওয়ার্ডে লড়ছেন ১৩ জন। মোট ভোটার হলেন ৭ হাজার ৭৬৯ জন।
৩৮নং ওয়ার্ডে প্রার্থী হলেন ৯ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১০ হাজার ৩২৭ জন। ৩৯নং ওয়ার্ডে ৭ প্রার্থী আর মোট ভোটার হলেন ১৩ হাজার ১৭১ জন। ৪০নং ওয়ার্ডে প্রার্থী সংখ্যা ৮ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ৪ হাজার ৯৯৬ জন। ৪১নং ওয়ার্ডে প্রার্থী হলেন ৯ জন। মোট ভোটার হলেন ৪ হাজার ৪৩০ জন। ৪২নং ওয়ার্ডে মোট ৯ জন প্রার্থী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দি¦তা করছেন। এই ওয়ার্ডের মোট ভোটার সংখ্যা ৪ হাজার ৯৭৮ জন।
সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে ১নং ওয়ার্ডে ২ প্রার্থী, ২নং ওয়ার্ডে ৪ প্রার্থী, ৩নং ওয়ার্ডে ৭ প্রার্থী, ৪নং ওয়ার্ডে ৯ প্রার্থী, ৫নং ওয়ার্ডে ৩ প্রার্থী, ৬নং ওয়ার্ডে ২ প্রার্থী, ৭নং ওয়ার্ডে ৪ প্রার্থী, ৮নং ওয়ার্ডে ৫ প্রার্থী, ৯নং ওয়ার্ডে ৫ প্রার্থী, ১০নং ওয়ার্ডে ৯ প্রার্থী, ১১নং ওয়ার্ডে ৯ প্রার্থী, ১২নং ওয়ার্ডে ৯ প্রার্থী, ১৩নং ওয়ার্ডে ১৩ প্রার্থী এবং ১৪নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৬ নারী কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দি¦তা করছেন।
১৯০ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ১ হাজার ৪৬২ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও ২ হাজার ৯২৪ জন পোলিং অফিসারসহ মোট ৪ হাজার ৫৭৬ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা সিসিক নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করবেন। এবারের সিসিক নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৯০টি। ভোট কক্ষের সংখ্যা ১৩৬৭টি ও অস্থায়ী ভোট কক্ষের সংখ্যা ৯৫টি।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবার ভোর থেকেই নগরজুড়ে টহল দিচ্ছে বিজিবি। ১০ প্লাটুন বিজিবি সদস্য বর্তমানে মাঠে রয়েছেন। আছেন র্যাবের বিপুল সংখ্যক সদস্যও। ভোটকেন্দ্র ও কেন্দ্রের বাইরে মোট ২ হাজার ৬০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। রয়েছে প্রায় ৩ হাজার আনসার সদস্য। সব মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৭ হাজার সদস্য নির্বাচনী মাঠে আছেন। ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে একজন এসআই, একজন এএসআই ও পাঁচ জন কনস্টেবলসহ মোট ৭ জন পুলিশ সদস্য এবং একজন পিসি, একজন সহকারী পিসি, ৭ জন পুরুষ ও ৫ জন মহিলা আনসারসহ মোট ১২ জন আনসার মিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোট ১৭ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। আর সাধারণ ভোটকেন্দ্রে একজন এসআই, একজন এএসআই, চার জন কনস্টেবলসহ মোট ৬ পুলিশ, একজন পিসি, একজন সহকারী পিসি,৭ জন পুরুষ ও ৫ জন মহিলা আনসারসহ মোট ১২ জন আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোট ১৬ জন সদস্য রয়েছেন।
সূত্রমতে, ১৯০ ভোটকেন্দ্রে ১ হাজার ২৭২ পুলিশ সদস্য ও ২ হাজার ২৮০ জন আনসার সদস্য মিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোট ৩ হাজার ৫৫২ জন সশস্ত্র সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়াও রয়েছে পুলিশের এপিবিএনর সদস্যরাও। ভোটকেন্দ্রের বাইরেও থাকবে বিশেষ নিরাপত্তা বলয়। সিসিকের প্রত্যেক সাধারণ ওয়ার্ডে পুলিশের একটি করে মোট ৪২ ওয়ার্ডে ৪২টি মোবাইল টিম নিয়োজিত রয়েছে। প্রতি তিনটি সাধারণ ওয়ার্ডের জন্যে রয়েছে পুলিশের ১৪টি স্পেশাল স্ট্রাইকিং ফোর্স। ৪২টি ওয়ার্ডের জন্যে রয়েছে র্যাবের ২২টি মোবাইল টিম। প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে মোট ৪২ ওয়ার্ডের জন্যে আছেন ৪২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়াও নির্বাচনী অপরাধসমূহ আমলে নিয়ে তা সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে বিচার সম্পন্নের লক্ষ্যে রয়েছেন বিচার বিভাগের ১৪ জন জুডিশিসয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। গত সোমবার থেকেই এই ১৪ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে আছেন। নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে টানা ৫ দিন অর্থাৎ আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তারা মাঠে থাকবেন।
সূত্র মতে, প্রতিষ্ঠার প্রায় ১৯ বছর পর ২০২১ সালে সিসিককে বর্ধিত করা হয়েছে। বর্তমানে সিসিকের মোট আয়তন ৭৯ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার। নতুন করে ১৫টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড বেড়েছে। ১৮৭৮ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে সিলেট পৌরসভা প্রতিষ্ঠা হয়। পৌরসভা প্রতিষ্ঠার টানা ১২৪ বছর পরে ২০০২ সালের ২৮ জুলাই প্রতিষ্ঠা হয় সিলেট সিটি করপোরেশন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই সিসিকের ৪র্থ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে পরাজিত করে দ্বিতীয় বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন।
ওয়ান-ইলেভেনের সময়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলের ২০০৮ সালে সিসিকের দ্বিতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনের আগেই গ্রেফতার হন কামরান। কারাগারে বন্দি কামরানকেই মেয়র পদে সমর্থন দেয় আওয়ামী লীগ। কারাবন্দি কামরান আনারস প্রতীকে এক লাখেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে আ ফ ম কামালকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন।
২০০৩ সালে সিসিকের প্রথম নির্বাচনেও কামরান বাই সাইকেল প্রতীকে বিজয়ী হয়েছিলেন। বিএনপির এম এ হক মাছ প্রতীকে কামরানের কাছে পরাজিত হন। বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্তে সিসিকের পঞ্চম এই নির্বাচন থেকে বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বিরত রয়েছেন।