ইনফ্লুয়েঞ্জা : আরেক মহামারি!
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২১ জুন ২০২৩, ৬:৩৩:২২ অপরাহ্ন
সবচে’ জ্ঞানী ব্যক্তিটিও উত্তর জানেনা এমন হাজার প্রশ্ন করতে পারে শিশুরা। -জে এবট
দেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি দুঃসংবাদ। ইনফ্লুয়েঞ্জা নামক একটি ভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর এই তথ্য জানিয়েছে। আইইডিসিআর বলছে, শুধুমাত্র ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস কিংবা নিপাহ ভাইরাস নয়, বার্ড ফ্লুও-বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি হিসেবে প্রকোপ ছড়াচ্ছে।
সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের জন্য দায়ি বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। বিভিন্ন সময়ে এটা লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, গ্রিক বিজ্ঞানি হিপোক্রেটিস ২৪০০ বছর আগে প্রথম ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের লক্ষণ লিপিবদ্ধ করেন। এরপর বিশ্বব্যাপি ইনফ্লুয়েঞ্জা ঘটিত নানা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ রয়েছে। সবচাইতে ভয়ঙ্কর মহামারি হয়েছিলো ১৯১৮-১৯১৯ সালের দিকে। তখন বিশ্বব্যাপি সংঘটিত এই মহামারির নাম দেওয়া হয় “স্প্যানিশ ফ্লু”। এই এক বছরে বিশ্বে প্রায় ছয় কোটি মানুষের মৃত্যু ঘটে। এছাড়া, ১৯৫৭-১৯৫৮ এর দিকে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট মহামারিতে এশিয়ায় ১০ থেকে ১৫ লক্ষ মানুষ মারা যায়। এই মহামারির নাম ছিল “এশীয় ফ্লু”। ১৯৬৮-১৯৬৯ এ ঘটিত মহামারিতে ৭.৫ থেকে ১০ লক্ষের মত মানুষ মারা যায়। অর্থাৎ বিভিন্ন সময়ে নতুন নতুন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের উদ্ভব হয়েছে; যা বিশ্বব্যাপি মানব মৃত্যুর কারণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। দেখা গেছে, ইতোমধ্যেই সংক্রমিত হয়েছে, এমন ব্যক্তির হাঁচি-কাশি, কথা বলা কিংবা তার ব্যবহৃত দ্রব্যের মাধ্যমে ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়ায়। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস আছে, এমন কিছু স্পর্শ করার মাধ্যমেও ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়াতে পারে। এ ভাইরাস প্রতিনিয়ত নিজেকে পরিবর্তন করে থাকে, যাকে বলা হয় মিউটেশন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ হলে সাধারণ ঠান্ডা লাগার মতোই লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন জ্বর, গলাব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া, সর্দি, কাশি ইত্যাদি। সাধারণ ঠান্ডা লাগার সাথে ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণের পার্থক্য হচ্ছে, এটি দ্রুত বেড়ে যায়। পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে অন্যদেরও আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
তবে আশার কথা হচ্ছে, ফ্লু’তে আক্রান্ত হলে বেশিরভাগ মানুষই কয়েকদিনের মধ্যে নিজ থেকেই সুস্থ হয়ে যায়। অবশ্য অনেক ক্ষেত্রেই অপেক্ষাকৃত দীর্ঘসময় ধরে ফ্লু’তে ভুগতে পারে মানুষ। ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, হাঁপানি জনিত সমস্যা বা ক্যান্সারের মত রোগ থাকলে সাধারণ ফ্লু’য়ের সমস্যাও মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে। সর্বোপরি সচেতনতাই হচ্ছে আসল কথা।