নতুন ১৫ ওয়ার্ডে ভোটের আমেজ ছিল অন্যরকম আনাস হাবিব কলিন্স
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২২ জুন ২০২৩, ৬:৪২:৩৬ অপরাহ্ন
সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে নতুন গঠিত ১৫টি ওয়ার্ডে ভোটের আমেজ ছিল অন্যরকম। গতকাল বুধবার সকাল আটটায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকে বর্ধিত ওয়ার্ডের বিভিন্ন কেন্দ্রে ছিল ভোটারদের বিপুল উপস্থিতি । পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।
নির্বাচনের বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, নতুনকেন্দ্র সমূহে ভোটগ্রহণ শুরুর আগে সকাল ৭টা থেকেই লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন ভোটাররা। অনেক কেন্দ্রে ইভিএম-এ ভোট দেওয়া নিয়ে তরুণ ভোটারদের মধ্যে এক ধরনের কৌতূহল কাজ করে। আবার, অনেক কেন্দ্রে ইভিএম না বোঝার কারণে ভোটগ্রহণ বিলম্বিত হয়েছে।
দুপুরে নগরীর ৩৮নং ওয়ার্ডের রশিদিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও মইয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা গেছে, নারী-পুরুষের উপচেপড়া ভিড়। বিশেষ করে নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ইভিএমের ধীরগতির কারণে অনেকের ভোটদান বিলম্বিত হয়। এ কারণে অনেককেই পোহাতে হয় ভোগান্তি।
বেলা ১টার দিকে বরইকান্দি মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, নতুন ওয়ার্ড হওয়ায় ওই কেন্দ্রেও ভোটাররা উৎসবের আমেজে ভোট দিচ্ছেন। বিশেষ করে কাউন্সিলর প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল সরব। রোকেয়া বেগম ও কুলসুমা বেগম নামের ষাটোর্ধ্ব দুই নারী ভোটার ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেন। ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার দিলীপ রঞ্জন মৈত্র জানান, সে সময়ে তার কেন্দ্রে প্রায় ৩০ ভাগ ভোট কাস্ট হয়েছে।
বেলা আড়াইটায় ৩০ নং ওয়ার্ডে দক্ষিণ সুরমার জৈনপুরের মহালক্ষ্মী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ওই ওয়ার্ডের ১৯ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও তাদের কর্মী সমর্থকদের আনাগোনায় গোটা এলাকা মুখরিত। একজন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার অভিযোগ এনে হট্টগোল করছেন কয়েকজন প্রার্থীর এজেন্ট ও সমর্থকরা। এ কারণে দীর্ঘ সময় ধরে মহিলা বুথের ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল। জনরোষ সামাল দিতে ওই সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারকে একটি কক্ষে নিরাপদে রাখা হয়েছে। খবর পেয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি মোবাইল টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার হাবিবুর রহমান রাসেল জানান, ‘জনৈক বৃদ্ধ ভোটারের অনুরোধে ওই প্রিসাইডিং অফিসার ভোট প্রয়োগে সহযোগিতা করেছেন। তিনি কাউকে ভোট দেননি। কিছু লোক বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে ভোটের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট করার পায়তাঁরা করছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি। এ কারণে ১৫ মিনিট ভোটদান বন্ধ ছিল। প্রিসাইডিং অফিসার আরো জানান, ওই কেন্দ্রের ৪ হাজার ৪৮৮ ভোটারের মধ্যে অর্ধেক ভোটারেরই ভোটদান সম্পন্ন হয়।
ওই কেন্দ্রে কথা হয় নতুন ভোটার কলেজ ছাত্রী রহিমা ও তানজিনার সাথে। তারা জানালেন, আমরা জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দিতে এসেছি। তবে, হট্টগোলের কারণে দীর্ঘসময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। লেছু বেগম নামে এক বৃদ্ধা জানান, জীবনে ভোট অনেকবার দিলেও এবারই প্রথম মেশিনে ভোট দিয়েছেন। এতে তিনি খুশী বলে মন্তব্য করেন।
বিকেল ৩টার দিকে ৩৪ নং ওয়ার্ডের শাহপরান কৃষ্ণগোবিন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ভোটারের উপস্থিতি খুবই কম। ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার সুচয়ন দাস দুপুরের মধ্যে অধিকাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, এবারের সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ৪২টি ওয়ার্ড নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে নতুন গঠিত ১৫টি ওয়ার্ড রয়েছে।