সিসিক নির্বাচনের পর লোডশেডিংয়ে ফিরলো সিলেট নগরী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জুন ২০২৩, ৮:৪৭:৩৩ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচনের পর ফের লোডশেডিংয়ে ফিরেছে সিলেট নগরী। নির্বাচনের পর দিন বৃহস্পতিবার নগরীতে ২৮% লোডশেডিং ছিল বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো)-এর কর্মকর্তারা। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে বলে তারা জানিয়েছেন।
বিউবো, সিলেট অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির সিলেটের ডাককে জানান, সিসিক নির্বাচনের কারণে ২ থেকে ২১ জুন পর্যন্ত সিলেটের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ভালো ছিল। তিনি বলেন, সবাই মিলেমিশে নির্বাচন পর্যন্ত বিদ্যুত পরিস্থিতি ভালো রাখার চেষ্টা করেছি। নির্বাচনের সময় অন্য সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিদ্যুতের অবস্থা ভালো ছিল। নির্বাচন চলে যাওয়ায় আগের সুবিধা মিলবে না। তিনি জানান, সিলেট বিভাগে বৃহস্পতিবার ৪৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা ছিল। বিপরীতে সরবরাহ হয়েছে ৩১৫ মেগাওয়াট। ঘাটতি ছিল-১৩৫ মেগাওয়াট। আর সিলেট নগরীতে এদিন ১৭১ দশমিক ৫ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ হয়েছে ১১৩ দশমিক ৫ মেগাওয়াট। ঘাটতি ছিল ৫৮ মেগাওয়াট। এ কারণে এদিন সিলেট নগরীতে ২৮% লোডশেডিং হয়েছে বলে জানান তিনি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লোডশেডিং আগের অবস্থায় ফিরে গেছে। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ঈদের সময় দোকানপাট, মিল-ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ থাকার কারণে লোডশেডিং কিছুটা কমতে পারে। ঈদের পরে আবার লোডশেডিং শুরু হতে পারে। এখন সিলেটে বেশী গরম নয়, তবে, গরম পড়লে অবস্থা আরো বেগতিক হবে বলে তার শংকা। শীতকালে সমস্যা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, এরমধ্যে পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্র চালু হলে পরিস্থিতির আরো উন্নতি হতে পারে। বিকাল সাড়ে ৫টায় এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে প্রধান প্রকৌশলীর বাসারও বিদ্যুৎ চলে যায়।
সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহের বাসিন্দা মো. শামছুল ইসলাম জানান, নগরীতে বৃহস্পতিবার থেকে মিনিটে মিনিটে বিদ্যুৎ যাচ্ছে। এটা অনেকের জন্য বিরক্তির কারণ। গত দুদিন ধরে সিলেটের আবহাওয়া কিছুটা আদ্র থাকায় মানুষ কিছুটা স্বস্তিতে আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যথায় পরিস্থিতি আরো বেগতিক হতো।
সিসিক নির্বাচনের প্রচারের সময়ই আলোচনায় উঠে আসে লোডশেডিং প্রসঙ্গ। নৌকার প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী একাধিকবার শঙ্কা জানিয়েছিলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে ভোটে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এ ব্যাপারে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী গত ১৮ এপ্রিল নগরীর বাগবাড়িস্থ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অফিসে গিয়ে কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন। এ সময় কর্মকর্তারা তাদের ঘাটতির কথা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে জানান।
তখন কর্মকর্তারা জানান, সিলেট মহানগরীতে চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুতের সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। পরে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে সিলেটের বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণের অনুরোধ জানান। জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানান, সিলেটের বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণ করতে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী গত ২ জুন নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকে সিলেট নগরের লোডশেডিয়ের পরিমাণ কমতে থাকে। বুধবার ভোটের দিন পর্যন্ত সিলেট মহানগরের লোডশেডিং বলতে গেলে শূন্যের কোঠায় ছিল। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচনের পরদিন সিলেটে দেখা দিয়েছে লোডশেডিং।