আন্তর্জাতিক জনসেবা দিবস
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জুন ২০২৩, ১১:১৬:৪০ অপরাহ্ন
আমি আল্লাহকে সবচেয়ে বেশি ভয় পাই। তারপর সেই মানুষকে ভয় পাই, যে আল্লাহকে মোটেই ভয় পায় না। -শেখ সাদি
আজ দেশে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক জনসেবা দিবস। সেবা প্রদান ও সেবা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেতন করে তোলার লক্ষে প্রতি বছর দিবসটি পালিত হয়। সাধারণত একটা দেশের সার্বিক উন্নয়ন অনেকটাই নির্ভর করে সেবা গ্রহীতা ও সেবা গ্রহণকারীর দেশপ্রেম ও সচেতনতার ওপর। সেবাদানের ক্ষেত্রে একজন মানুষ কতোটুকু আন্তরিক ছিলেন এর নিরিখেই তার মূল্যায়ন হবে। আর এটা বলার প্রয়োজন নেই যে, সেবাদান নিশ্চিত করার জন্য বর্তমান সরকার প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ব্যাপক প্রণোদনা প্রদান করছে। তাই সেবা প্রদানে সকলকে সততা, সচেতনতা ও মানবিকতা দ্বারা পরিচালিত হওয়া উচিত। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। আমাদের এখানে সেবা গ্রহীতারা কাংখিত সেবা পাচ্ছে না, বরং অনেক ক্ষেত্রেই তারা হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এই প্রেক্ষাপটে আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক জনসেবা দিবস পালনের গুরুত্ব অনেক বেশি।
আমাদের দেশে সার্বিকভাবে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, দপ্তর কিংবা ব্যক্তি জনগণকে যে সেবা দিচ্ছে তা সন্তোষজনক নয়। বিশেষ করে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারির বেশির ভাগই জনগণকে প্রত্যাশিত সেবা দিচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রেই ঘুষ কিংবা অন্য কোন সুবিধা নিয়ে সেবা দেয়া হচ্ছে জনগণকে। অনেক দপ্তরে ঘুষ দিয়েও মানুষ সেবা পাচ্ছেনা। কিন্তু আমাদের সংবিধান অনুযায়ী প্রতিটি সরকারি দপ্তরেই জনগণকে প্রত্যাশিত সেবা দিতে বাধ্য সরকারি চাকরিজীবিরা। এর জন্য তাদেরকে সরকার বেতন ভাতা দিচ্ছে। আর এই বেতন ভাতা সাধারণ মানুষের ট্যাক্স এর টাকা থেকেই দেয়া হচ্ছে। বর্তমান সরকার অব্যাহতভাবে বেতন ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করছে সরকারি চাকুরিজীবিদের। তারপরেও পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। বরং বেতন-ভাতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারিদের ঘুষের মাত্রা বেড়ে গেছে। তাছাড়া, এদেশে অনেক সরকারি দপ্তর রয়েছে, যেখানে হয়রানির ভয়ে মানুষ যেতেই চায়না। বেসরকারি ক্ষেত্রে ঢালাওভাবে না হলেও অনেক দপ্তরে ও প্রতিষ্ঠানেও মানুষ প্রত্যাশিত সেবা পায় না।
সরকারের বিভিন্ন জনমুখী উদ্যোগ সফল করার দায়িত্ব বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োজিত কর্মকর্তা কর্মচারিদের। কিন্তু তাদের অবহেলা-দুর্নীতির কারণে সরকারের অনেক ভালো উদ্যোগই বিফল হচ্ছে। তাই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারিদের সেবার মনোভাব নিয়ে দায়িত্বপালন করতে হবে। সরকারি সেবাগুলোকে জনমুখী করতে হবে। এজন্য জনগণ ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন গড়ে তুলতে হবে। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম বিশ্ববাসীর দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমরা এখন মধ্য আয়ের দেশ-এ উন্নীত হয়েছি। এই প্রেক্ষাপটে সরকারি দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানগুলোতে জনসেবার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত হবে, এটাই সকলের প্রত্যাশা।