নদীভাঙন রোধে প্রকল্প
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ জুন ২০২৩, ৩:১৬:২৩ অপরাহ্ন
আমাকে ভালোবাসতে হলে আমার গুণকে যেমন ভালোবাসবে, তেমনি দোষত্রুটিগুলোকেও ধৈর্যের সঙ্গে সংশোধন করতে সাহায্য করবে। -এনড্রিট মোভেল
নদীভাঙন রোধে কাজ করছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্থায়ী প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। আগামি কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষ অনেকাংশে জলাবদ্ধতা ও নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে।কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার কারণেই গত ১৩ বছরে সারা দেশে নদী ভাঙনের পরিমাণ কমে এসেছে। কোন প্রকল্পের কাজ দুর্নীতি যাতে না হয় এবং কাজের ক্ষেত্রে যাতে গুণগত মান বজায় থাকে, সেজন্য নিয়মিত মনিটরিংও করা হয়। কথাগুলো বলেছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী।
নদীমাতৃক এই দেশের নদ নদীগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। একে একে ভরাট হচ্ছে নদী, হারাচ্ছে নাব্যতা। কমছে নৌপথ। নদী ভরাট হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে তীর ভাঙ্গন। নদীর তীর ভাঙ্গনে নদী ভরাট হওয়ার পাশাপাশি আর্থসামাজিক ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। আর বর্ষার শুরুতেই নদীভাঙন শুরু হয়ে যায়। প্রতি বছর দেশের নদ নদীগুলোতে জুন থেকে আগস্ট-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই ভাঙ্গন অব্যাহত থাকে।এই কয়েক মাসে নদীগর্ভে চলে যায় বিস্তীর্ণ এলাকা, গ্রাম-জনপদ, ফসলের জমি। হাজার হাজার মানুষ হয় গৃহহারা। নদী ভাঙ্গন প্রায় সারা বছরই হয়। তবে বর্ষা মওসুমে বেড়ে যায় এর মাত্রা। নদীভাঙ্গনের শিকার মানুষগুলো সব কিছু হারিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়। অনেকে শহরাঞ্চলে ভিড় জমায় জীবন-জীবিকার তাগিদে। অর্থাৎ নদী ভাঙ্গনে বিপুলসংখ্যক মানুষের জীবনে দুর্ভোগ নেমে আসে, ক্ষতিগ্রস্ত হয় জাতীয় অর্থনীতি। তাছাড়া, সীমান্ত নদীগুলোতে নদী ভাঙ্গনের ফলে বাংলাদেশ এলাকার ভূমি ভারতীয় এলাকায় জেগে উঠছে। এমনি করে সীমান্তে বাংলাদেশের মানচিত্র ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। নদী ভাঙ্গনে প্রতি বছর গড়ে লক্ষাধিক মানুষ গৃহহারা হচ্ছে ও ১০ লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘৭০ ও ৮০-এর দশক থেকে এদেশে নদী ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বেড়েছে। আপাতদৃষ্টিতে নদী ভাঙ্গন একটি স্বাভাবিক ঘটনা বলেই মনে হবে। ‘নদীর একূল ভাঙ্গে ওকূল গড়ে এই তো নদীর খেলা’-এমনটাই মনে করা হয়। তার মানে কি নদীভাঙ্গন রোধের কোন উপায় নেই? গবেষকগণ বলেন, যথাযথ পরিকল্পনা নিলে নদী ভাঙ্গন স্থায়িভাবে রোধ করা সম্ভব।
প্রতি বছরই নদী ভাঙ্গন রোধে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে সরকার। কিন্তু তাতে কোন লাভ হচ্ছে না। মাঝখানে লোপাট হচ্ছে সরকারের অর্থ। গবেষকদের মতে-নদীভাঙ্গন অবশ্যই স্থায়িভাবে রোধ করা সম্ভব। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে দীর্ঘস্থায়ী ব্যবস্থা নিয়েই তা করা যায়।এজন্য প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের মধ্যে কার্যকর ও জোরদার সমন্বয়, ভাঙন ঠেকানোর উপযোগি নকশা প্রণয়ন, সময়মতো প্রকল্পের কাজ শুরু করা এবং শেষ করা। আমরা চাই,তথাকথিত নদী ভাঙ্গন রোধ প্রকল্পের নামে সরকারি অর্থের অপচয় বন্ধ হবে এবং নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ি ও কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হবে।