নাইওরপুলে কোতয়ালীর ওসির হাতে সাংবাদিক হেনস্তা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ জুন ২০২৩, ৮:৪৫:৫৭ অপরাহ্ন

এসএমপি কমিশনার বললেন, তিনি বিষয়টি দেখবেন
স্টাফ রিপোর্টার : নগরীতে সড়ক দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের পিটুনির শিকার হয়েছেন এক সাংবাদিক। এ সময় হেনস্তার শিকারও হন আরো এক সাংবাদিক। গতকাল রোববার বিকেল ৫টার দিকে নগরের নাইওরপুল পয়েন্ট সংলগ্ন ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহত সাংবাদিকের নাম এটিএম তুরাব। তিনি দৈনিক জালালাবাদের স্টাফ রিপোর্টার ও দৈনিক নয়া দিগন্তের সিলেট ব্যুরো প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গণমাধ্যম কর্মীদের অভিযোগ, হঠাৎ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি সংবাদকর্মীকে বেধড়ক পিটিয়ে হেনস্তা করেছেন।
গতকাল বিকেলে সোয়া ৪টার দিকে সিলেট নগরীর নাইওরপুল পয়েন্টে বেপরোয়া ট্রাকের চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হন। এ সংবাদটি পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান গণমাধ্যমকর্মীরা। এসময় উৎসুক জনতা রাস্তার এক পাশে দাঁড়িয়ে ঘটনাটি দেখছিলেন আর গণমাধ্যমকর্মীরা নিজেদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন। এক পর্যায়ে হঠাৎ পুলিশ আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে। এসময় কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে সাংবাদিক এটিএম তুরাবকে আঘাত করতে থাকেন। তখন পুলিশের হাত থেকে বাঁচাতে গেলে দৈনিক মানব কণ্ঠের সিলেট প্রতিনিধি মিঠু দাস জয়কেও হেনস্তা করেন ওসিসহ আরো এক ট্রাফিক সার্জেন্ট।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাংবাদিক এটিএম তুরাব বলেন, কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ হঠাৎ আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে আমাকে লাঠিচার্জ, চড় থাপ্পড় মারেন। তখন আমি নিজের পরিচয় দিলেও ওসি না শুনে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। মুহূর্তের মধ্যে কী ঘটে গেল, কিছুও বোঝার আগেই আমার হাতে থাকা মোবাইল ফোন টান দিয়ে নিতে চান এবং রাস্তার পাশে থাকা একটি হাসপাতালের সামনে নিয়ে যান। এসময় আমার আইডি কার্ড ঝুলানো ছিলো, তবে ওসি’র গায়ে ইউনিফর্ম ছিলো না। তার পরণে ছিল টি-শার্ট।
সাংবাদিক তুরাব আরো বলেন, নগরে ট্রাক চলাচলের জন্য রাত ১০টার পর সময়সীমা বেঁধে দেয় সিলেট সিটি করর্পোরেশন। কিন্তু এটি উপেক্ষা করে পুলিশকে ম্যানেজ করে দিনের বেলাও নগরে ট্রাক চলাচল করতে দেখা যায়। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। এই ক্ষোভ থেকেই ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ হয়তো আমার উপর হামলা করেছেন। এরপর ঘটনাস্থলে উপস্থিত অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাদেক কাউসার দস্তগীর এগিয়ে এসে তাৎক্ষণিক ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করলেও ওসি দাঁড়িয়ে ছিলেন।
সিলেটের এক সিনিয়র সাংবাদিক জানান, গত কয়েকদিন আগে রাত ১টার দিকে নগরীর বন্দর বাজার এলাকায় দুই সিএনজি অটোরিক্সা ড্রাইভারের মধ্যে মারামারির দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে কোতয়ালী থানার ওসিকে জানান। তথ্য প্রদানকারী ওই সাংবাদিকের ফোনে বিরক্তি প্রকাশ করে ওসি বলেন, ‘এতে আপনার কি হয়েছে।’
এসব বিষয় নিয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার মো. ইলিয়াছ শরীফ বিপিএম (বার) পিপিএম এর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে গতরাতে তিনি সিলেটের ডাককে বলেন, কোতয়ালী থানার ওসি সংবাদকর্মীকে হেনস্তা এবং অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পেয়ে সহযোগিতা না করে পাল্টা প্রশ্ন করতে পারেন না। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে এ প্রতিবেদককে আশ্বস্ত করেন।
এ ব্যাপারে এসএমপি’র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) সুদীপ দাস বলেন, সাংবাদিককে লাঠি দিয়ে আঘাতের বিষয়টি অত্যন্ত দু:খজনক। আমি ঘটনাটি নিয়ে ওসির সাথে কথা বলেছি। তিনি নিজের ভুল স্বীকার করেছেন এবং বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি থেকে হয়েছে বলে তাকে জানিয়েছেন।