সিলেটে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত
দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করার প্রত্যয়
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জুলাই ২০২৩, ১০:৪৩:৫৫ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কোরবানির ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করার প্রত্যয় নিয়ে সারা দেশের মতো গত বৃহস্পতিবার সিলেটেও পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়েছে। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপিত হয়। ঈদের জামাত শেষে প্রতিটি মসজিদ ও ঈদগাহে মুসল্লিরা কান্না জড়িত কণ্ঠে মহান আল্লাহর কাছে নিজেদের পাশাপাশি বাংলাদেশ তথা সমগ্র বিশ্বের সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করেন। একে অন্যের সাথে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে নিজ বাসা বাড়িতে এসে সামর্থ্যবানরা মহান আল্লাহর বিধান অনুযায়ী পশু জবাই করে কোরবানি আদায় করেন।
সিলেট নগরীর ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ ময়দানে সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৮টায়। ঈদের দিন সকাল ১১টা পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টি না থাকায় সকল বয়সের লাখো মুসল্লি ঈদের জামাত শান্তিপূর্ণভাবে আদায় করতে পেরেছেন। ঈদকে কেন্দ্র করে আগের দিন থেকে প্রধান জামাতের স্থান শাহী ঈদগাহে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ ঈদগাহের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে সিলেট মহানগর পুলিশ। এতে ইমামতি করেন এবং জামাতের আগে বয়ান পেশ করেন বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফিজ মাওলানা কামাল উদ্দিন। শাহী ঈদগাহে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সংসদ সদস্য সহ প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তারা, জনপ্রতিনিধি ও কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাসহ বিপুল সংখ্যক মুসল্লি উপস্থিত ছিলেন।
দরগাহে হযরত শাহজালাল (রহঃ) জামে মসজিদে পবিত্র ঈদুল আযহার জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন মুফতি মাওলানা আসজাদ হোসাইন। সিলেট মহানগরীর বন্দরবাজারস্থ কালেক্টরেট জামে মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৮টায়। নামাজে ইমামতি করেন মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা শাহ আলম। সিলেট জজ কোর্ট জামে মসজিদে ঈদুল আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৭টায়। সিলেট রেজিস্ট্রি মাঠে ঈদুল আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৭টায়। একই সময়ে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসা মাঠে পবিত্র ঈদুল আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে ইমামতি করবেন মাওলানা আব্দুস সালাম-আল মাদানী । উল্লেখ্য, এ জামাতে মহিলাদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা ছিলো। বন্দরবাজারস্থ কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদে ঈদুল আযহার পৃথক ৩টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৭টায়, দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৮টায় ও তৃতীয় জামাত ৯টায় অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও সিলেট নগরীর হযরত শাহপরান (রঃ) মাজার ঈদগাহ, গাজী বুরহান উদ্দীন (রঃ) জামে মসজিদ, নগরীর সুবহানিঘাট শাহজালাল দারুসসুন্নাহ ইয়াকুবিয়া মাদ্রাসা মসজিদ, টিলাগড় মাদানীবাগ ঈদগাহ, কাজিরবাজার মাদ্রাসা মাঠ, কানিশাইল ঈদগাহ, নবাবী মসজিদ ঈদগাহ, পাঠানটুলা নবাবী ঈদগাহ, টুকেরবাজার শাহী ঈদগাহ, মইয়ারচর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ঈদগাহ, বরইকান্দি ঈদগাহসহ নগরীর বিভিন্ন মসজিদ ও ঈদগাহে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে পবিত্র ঈদুল আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এবার পবিত্র ঈদুল আযহায় মহানগরসহ সিলেট জেলায় ছোট-বড় ৩ হাজারের অধিক ঈদগাহ-মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে ঈদের জামাতকে কেন্দ্র করে সিলেট নগরী ও নগরীর বাইরে সিলেট বিভাগের ৪ জেলার সকল ঈদগাহ ও মসজিদে পবিত্র ঈদুল আযহার জামাত সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়।
ঈদের দিন সকালবেলায় আবহাওয়া অনুকূল থাকায় সব বয়সী মুসল্লি স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদের জামাতে অংশ নেন। নামাজ শেষে প্রতিটি মসজিদ ও ঈদগাহে সবাই কান্না জড়িত কণ্ঠে মহান আল্লাহর কাছে নিজেদের পাশাপাশি বাংলাদেশ তথা সমগ্র বিশ্বের সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করেন। ঈদের জামাত শেষে একে অন্যের সাথে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে নিজ বাসা বাড়িতে এসে সামর্থ্যবানরা মহান আল্লাহর বিধান অনুযায়ী পশু জবাই করে কোরবানি আদায় করেন।
এদিকে, সুষ্ঠুভাবে ঈদের জামাত ও ঈদের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতাসহ ঈদ উৎসব নির্বিঘেœ পালনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী স্ব স্ব এলাকায় তাদের তৎপরতা অব্যাহত রাখে।