আইসক্রিমে স্বাস্থ্যঝুুঁকি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ জুলাই ২০২৩, ৮:০৫:০৭ অপরাহ্ন
ভুল-ভ্রান্তি নিয়েই মানুষের জীবন। সেই ভুলকে প্রাধান্য দিয়ে বাকি জীবনে অশান্তি ডেকে আনার কোনো মানে হয় না। -লাওসে
গরমে প্রশান্তি দেয় আইসক্রিম। অথচ এটি জনস্বাস্থ্যের সর্বনাশ করছে। রাস্তায় ফুটপাতে কিংবা অভিজাত দোকানেও যেসব আইসক্রিম বিক্রি হয় তার মধ্যে রয়েছে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক নানা পদার্থ।অনেক নামিদামি কোম্পানির তৈরি আইসক্রিমসহ বাহারি রঙের ঠান্ডা জাতীয় পানীয় ললি, লিচি, মাঠা, লাচ্ছি, শরবতেও বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহার করা হয়। যা মানুষের ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের আইসক্রিম একটি জনপ্রিয় খাবার। স্বাভাবিকভাবে আইসক্রিম তৈরিতে যেসব উপাদান ব্যবহার করা হয়,তার সবগুলো জনস্বাস্থ্যের জন্য উপকারি নয়। জানা যায়, আইসক্রিম তৈরিতে এক ধরনের পাউডার দুধ, চিনি, ঘনচিনি, কর্ণ ফ্লাওয়ার, ক্ষতিকর রং, স্যাকারিন, পাম ওয়াল, স্ট্যাবিলাইজার, ফ্লেভার, ফুড কালার, পঁচা নারিকেল ও পানি ব্যবহার করা হয়।যা মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। অথচ নামিদামি কোম্পানিগুলো এইসব উপাদান দিয়েই তৈরি করছে আইসক্রিম। অপরদিকে,অনেক কোম্পানি ভেজাল ও ক্ষতিকারক উপাদান দিয়ে আইসক্রিম তৈরি করছে। এগুলো জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করে চলেছে। দেখা গেছে বিভিন্ন স্থানে ছোট্ট কক্ষে শীতলীকরণ যন্ত্রে তৈরি হচ্ছে এসব ভেজাল আইসক্রিম। এর মধ্যে রয়েছে- লেমন, অরেঞ্জ, চকবার ইত্যাদি। এগুলোতে ব্যবহার করা হচ্ছে খাওয়ার অনুপযোগি রং, ট্যাপের পানি আর স্যাকারিন।ঘনচিনির আর শিল্পকারখানায় ব্যবহার হয় এমন নানা ধরনের রংয়ের গুঁড়ো খাদ্যে ব্যবহারের অনুমোদন নেই। যা ব্যবহার করা হচ্ছে আইসক্রিমে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অস্বাস্থ্যকর আইসক্রিম জাতীয় খাদ্যে বিদ্যমান সালমোনেলা নামক জীবাণুতে ব্যাক্টেরিয়াল ইনফেকশন হতে পারে। এতে টাইফয়েড, পেটের পীড়া, গ্যাস্ট্রোএন্টারাটাইটিজ, ভমিটিং (বমি), ডায়রিয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এগুলোতে ব্যবহৃত রংয়ে কারসিনোজেন নামক পদার্থ থাকায় এ থেকে ক্যানসার হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। অনেকে আইসক্রিমের ফ্লেভার ও কালার বাড়াতে ফুডগ্রেডবিহীন রং মেশায়। ফুডগ্রেড কালারের দাম বেশি হওয়ায় কাপড়ের রং মেশানো হয়।
সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে, আইসক্রিমে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদানগুলোর ব্যাপারে উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কোন বক্তব্য নেই। আইসক্রিমে ব্যবহৃত বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান গাড়ির ওয়ার্কশপে পেইন্ট তোলা, উকুন মারা, গ্লু বা আঠা ও নেইল পলিশ তোলা, পেইন্ট ওয়ার্কশপে রং তরলীভূত করার কাজে ব্যবহার হয়। দেশে পন্যের মান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই এব্যাপারে বলা যায় অনেকটাই নীরব ভূমিকা পালন করছে। এই অবস্থায় ভোক্তা সাধারণের সচেতনতার বিকল্প নেই।