সুনামগঞ্জে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ড
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ জুলাই ২০২৩, ৯:২১:১১ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে মারপিট করে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে ঘাতক স্বামীকে মৃত্যুদ-ের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার বিকেলে সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদ- প্রাপ্ত ঘাতক স্বামী সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার দিনাইরটুক গ্রামের মখলিছ আলী।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৫ সালে জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার হাছন ফাতেমাপুর গ্রামের মোস্তফা মিয়ার বাড়িতে লজিং থাকতেন একই জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার দিনাইরটুক গ্রামের মখলিছ আলী। একপর্যায়ে মোস্তফা মিয়ার মেয়ে কলি বেগমকে বিবাহের প্রস্তাব দিলে পারিবারিক সম্মতিতে মখলিছ এর কাছে কলি বেগমকে বিবাহ দেয়া হয়। বিয়ের পর কলিকে বাড়িতে নিয়ে যায় মখলিছ। কিছুদিন সংসার করার পর মখলিছ স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি করতে শুরু করে। পরে বিভিন্ন সময়ে মখলিছকে কলির বাবা প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক টাকা প্রদান করেন। এতেও চাহিদা না মেটায় টাকা পয়সা দেওয়া বন্ধ করে দেন কলির বাবা মোস্তফা মিয়া।
যৌতুক দেয়া বন্ধ করায় মখলিছ স্ত্রী কলি বেগমকে মারপিটসহ মানসিক যন্ত্রণা দিতে শুরু করে। ২০০৫ সালের ৫ জুলাই সকালে যৌতুকের টাকার জন্য স্ত্রী কলিকে বাবার বাড়িতে পাঠাতে চাইলে স্ত্রী অস্বীকৃতি জানায়। এসময় কলি বেগমকে মারপিট করে বাজারে চলে যায় আর বাজারে যাওয়ার সময় বলে যায় বাড়িতে ফিরে যদি দেখে টাকা আনতে যায়নি, তাহলে প্রাণে হত্যা করে ফেলবে। এরপর দুপুর ১টার দিকে মখলিছ বাজার থেকে বাড়িতে ফিরে এসে দেখে কলি বেগম বাবার বাড়িতে টাকা আনতে না গিয়ে স্বামীর বাড়িতেই বসে আছে। এসময় মখলিছ প্রচন্ডভাবে মারপিট করলে কলি বেগম অজ্ঞান হয়ে পড়ে এবং একপর্যায়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে। হত্যার ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মৃত কলির মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে প্রচার করতে থাকে কলি আত্মহত্যা করে মারা গেছে। পরদিন খবর পেয়ে কলির বাবা মোস্তফা মিয়া মখলিছের বাড়িতে গিয়ে নিজের মেয়ের লাশ দেখেন এবং লাশের গায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখে পুলিশে খবর দেন। পরে কলির বাবা মোস্তফা মিয়া আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত ও শুনানী শেষে গতকাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।