স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১০ জুলাই ২০২৩, ১:২০:৫৭ অপরাহ্ন

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এই বলে যে, সরকারি হাসপাতালে রোগিরা সেবা না পেলে দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেছেন, সরকারি হাসপাতালের কর্মচারিদের অবহেলায় হাসপাতাল পরিপূর্ণ পরিচ্ছন্ন হয় না। রোগিদের সঙ্গে থাকা লোকদের ভিড় থামানো যায় না। এমনকি দালালদের দৌরাত্ম্য কমানো যাচ্ছে না। এতে হাসপাতালের সেবার মানও কাক্সিক্ষত পর্যায়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না। সম্প্রতি রাজধানীতে অনুষ্ঠিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই স্বীকারোক্তিতেই ভেসে উঠছে আমাদের স্বাস্থব্যবস্থার করুণ চিত্র। সরকারি হাসপাতালের রীতিমতো বেহাল দশা। সেখানে সাধারণ মানুষ চিকিৎসা নিতে এসে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
এটাই প্রতিষ্ঠিত যে, নিয়ম অনুযায়ী সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে গেলে অনেক জটিলতায় পড়তে হয়। শুধু সকাল এবং রাতে এক ঝলক ডাক্তারের দেখা মেলে। পরিচিত লোক এবং দালাল না থাকলে অনেক ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সরকারি হাসপাতালগুলোতে দালালদের কাছে অনেকটাই জিম্মি রোগি ও তার স্বজনেরা। অভিযোগ রয়েছে, দালালদের টাকা দিলে ভালো সেবা পাওয়া যায়। সাধারণত হাসপাতালের বুয়া, বাবুর্চি, ড্রাইভার, কেয়ারটেকার ও স্বাস্থ্যকর্মিরা দালালের কাজ করে। প্রায় সময়ই শোনা যায় সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার কথা। অথচ তা কেবলই মুখের কথায়ই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। সর্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা হলো, কোন ধরনের আর্থিক দূরবস্থায় না পড়ে সমাজের প্রতিটি মানুষ যেন তার প্রয়োজন অনুযায়ী মানসম্মত স্বাস্থসেবা গ্রহণ করতে পারে তা নিশ্চিত করা। কিন্তু এই পরিস্থিতি কবে সৃষ্টি হবে সেটাই বড় প্রশ্ন। স্বাস্থ্যসেবা নিতে গিয়ে রোগিরা একদিকে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে, অপরদিকে তারা চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে ফতুর হওয়ার উপক্রম। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য হচ্ছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবা নিতে রোগির বাড়তি খরচ সবচেয়ে বেশি। সেইসঙ্গে আছে হয়রানি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, প্রতিদিন সারা দেশে প্রায় ১০ লাখ মানুষ সরকারি হাসপাতালে সেবা নিতে আসেন। এসব মানুষের সেবার জন্যই জেলা শহর থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে হাসপাতাল করা হয়েছে। মানুষের সুচিকিৎসাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।
সরকারি হাসপাতালে মানুষ নির্বিঘেœ সেবা পাবে। এটা সংবিধান স্বীকৃত। কিন্তু সংবিধানের সেই অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি কবে বাস্তবে দেখা যাবে, সেটাই বড় প্রশ্ন। খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রীই বলেছেন, হাসপাতালের কর্মচারি ও নার্সরা ঠিকভাবে কাজ করছেন না। হাসপাতালে সাধারণ মানুষ কাক্সিক্ষত সেবা পাবে না- এটা চলতে পারে না। সংশ্লিষ্টরা দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশনা আলোর মুখ দেখবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।