বাড়ছে নারী নির্যাতন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জুলাই ২০২৩, ৪:৩১:০৭ অপরাহ্ন

বিশ্বাস হচ্ছে বরফের মতো, খুব শীঘ্রই তা গলে যেতে পারে। -রবার্ট ফ্রস্ট
বেড়ে চলেছে নারী নির্যাতনের মাত্রা।সমাজ সভ্যতার অগ্রগতির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নারীদের প্রতি চরম সহিংসতা প্রদর্শন করে চলেছে ‘হায়নারূপি’ একদল মানুষ। দেশে চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৮৯ জন নারীকে তাদের স্বামী হত্যা করেছে। এ সময় স্বামীর পরিবার দ্বারা আরো ২৩ জন নারী হত্যার শিকার হন। আর পারিবারিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ৫৫ জন নারী আত্মহত্যা করেন। এই তথ্য আইন ও সালিশ কেন্দ্রের।
এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে,পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে নারী নির্যাতনের অব্যাহত ধারা সমাজের পশ্চাৎপদ অবস্থাকেই নির্দেশ করছে। এই ধারা প্রতিনিয়ত শক্তিশালী হচ্ছে ;বাড়ছে পারিবারিক নির্যাতন। এর মূলে রয়েছে সমাজ-সংস্কৃতিতে পুরুষতান্ত্রিকতা। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে-আমাদের সমাজব্যবস্থায় পরিবারের গঠন বৈচিত্র্যময়।এখানে পরিবার থেকেই শুরু নারীদের জীবন সংগ্রাম।এখনও এই সমাজে অনেকের ধারণা এই রকম যে, নারীর সঙ্গে যা খুশি তা করা যায়। আর নারীকে নিয়ন্ত্রণ করবে স্বামী।-প্রচলিত এই ধারণাকে জায়েজ করছে কট্ররপন্থী একটি মহল। গবেষকগণ বলছেন- যৌতুক, পরকিয়া, মতের অমিল, ব্যক্তিত্বের সংঘাত- এমন নানা করণে দিনদিন বাড়ছে পারিবারিক নির্যাতন ও নারী হত্যার ঘটনা।এটা যে একটি গুরুতর অপরাধ, সেই বোধটুকুই নেই মানুষের মধ্যে।আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে,অনেক সহিংসতার পরও নারীকে তাঁর স্বামীর ঘর ছেড়ে না আসার পরামর্শ দেয় পরিবারের লোকজন। মেয়েরা স্বামীর ঘরে গেলে মৃত্যুর আগে সেখান থেকে বের হবে না, এটাই আমাদের সমাজের সংস্কৃতি।২০১০ সালে পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন হয়। অথচ এ আইনের তেমন প্রচলন নেই। এই আইনের কাঠামোও মজবুত নয়।তাছাড়া,আইনটি সম্পর্কে মানুষ অবগতও নয়। পারিবারিক নির্যাতনের
মামলা অনেক সময় পরিবারিক নির্যাতন দমন আইনে করা হয় না।এ বিষয়ে অনেক গবেষণা করা হলেও নারীর মানবাধিকার রক্ষা করা যাচ্ছে না কিছুতেই, এটা দুঃখজনক।
নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে দরকার সর্বাত্মক সচেতনতা। সমাজ ও রাষ্ট্রকেই এব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।এই সংক্রান্ত আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি নারী নির্যাতনকারিকে সামাজিকভাবে ঘৃণা করার মতো মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। এ ব্যাপারে দায়িত্ব রয়েছে গণপ্রতিনিধি, সমাজসেবক ও ইমামদের। সর্বোপরি নির্যাতিতদেরই আইনগত সহায়তার জন্য হটলাইনে (১০৯) যোগাযোগ করার সুযোগ রয়েছে।