দফা একটাই- শেখ হাসিনার পদত্যাগ : মির্জা ফখরুল
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ জুলাই ২০২৩, ৪:৫৮:৩৬ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “এখন দফা একটাই- শেখ হাসিনার পদত্যাগ। আর কোনো দফা নেই। সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। ভোটাধিকার ফিরে দিতে হবে”।
গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর নয়া পল্টনে একদফা ঘোষণার সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। “গণতন্ত্রের ঘাতক, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও সর্বনাশা অনাচারে লিপ্ত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে যুগপৎ ধারায় বৃহত্তর গণ-আন্দোলনের একদফার যৌথ ঘোষণার জন্য সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি”।
মির্জা ফখরুল বলেন, “এই অবৈধ সরকার তার ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে আমাদের শত শত নেতাকর্মীকে খুন করেছে। ছয় শ’র মতো নেতাকর্মীকে গুম করেছে’।
এ সময় তিনি আবেগঘনভাবে বিএনপির নিখোঁজ হওয়া সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলী ও তার পরিবারকে স্মরণ করেন।
২০১৩-১৪ সালে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ফখরুল বলেন, “তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আমাদের ছেলেদের ধরে নিয়ে গিয়ে পায়ে গুলি করে পঙ্গু করে দিয়েছে। এখন আমাদের তরুণরা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, যদি তুমি ভয় পাও, তবে তুমি শেষ। যদি তুমি ঘুরে দাঁড়াও, তবেই তুমি বাংলাদেশ। এখন সব দিকে খালি তরুণ আর তরুণ। তোমরাই পারবে এদেরকে রুখে দিতে”।
সমাবেশে আসা মানুষদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ সরকার বলেছিল, ঘরে ঘরে চাকরি দেবে, ১০ টাকা সের চাল খাওয়াবে। কিন্তু তাদের কথার সাথে সেটার মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। এরা আবার বলেছিল, কৃষকদের বিনামূল্যে সার দেবে। এখন সারের দাম তিন চার গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। আবার সারও পাওয়া পায় না কৃষকরা’।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে এই সরকার জীর্ণশীর্ণ কারাগারে রেখেছিল, তাকে ভালো চিকিৎসা পর্যন্ত দেয়নি। আমরা বার বার তার চিকিৎসা বাইরের দেশে করানোর জন্য বলেছিলাম। পরিবার থেকেও বলা হয়েছিল। কিন্তু তাকে যেতে দেয়া হয়নি। এজন্যে তাকে বার বার হাসপাতালে যেতে হচ্ছে”।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “কোর্টকে ব্যবহার করে এ সরকার ক্ষমতায় থাকতে চায়। তারা মামলা দিয়ে মাসের পর মাস জেলে আটকে রাখে, জামিন দেয় না। যেটা মানুষের বিচার পাওয়ার শেষ ভরসাস্থল, সেখানে এখন বিচার পাওয়া যায় না”।
তিনি আরো বলেন, “এখন আর কথা বলার সময় নেই। এখন আমাদের একটাই কাজ- এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের আন্দোলনে নেমে আসা”।
জনগণ জেগে উঠেছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “যখন জনগণ জেগে ওঠে, তখন তাদের আটকানো যায় না। ঝড় এলে বাঁধ দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না। সুনামি এলে তাকে আটকানো যায় না। আজ বাংলাদেশে প্রতিবাদের সুনামি শুরু হয়েছে। ঢাকার বাইর থেকে আসতে অনেক বাধা দেয়া হয়েছে। কিন্তু তা ঠেকানো গেছে? ঢাকার রাজপথ আজ নেতাকর্মীদের পদচারণায় ভরপুর”।
কর্মসূচি ঘোষণার পর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “এটা একদফা আন্দোলনের প্রাথমিক কর্মসূচি। এতে যদি আঙ্গুলে ঘি না উঠে, তবে কিভাবে আঙ্গুলে ঘি তুলতে হয়, তা এ দেশের জনগণ ভালো করেই জানেন”।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ড. মঈন আলী খান।