কোম্পানীগঞ্জের কালাইরাগে কালভার্ট ভেঙে মরণফাঁদ, ভোগান্তিতে ১৫ হাজার মানুষ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জুলাই ২০২৩, ৩:৫৪:২৯ অপরাহ্ন
আবিদুর রহমান, কোম্পানীগঞ্জ থেকে : কোম্পানীগঞ্জে একটি রাস্তার কালভার্ট ভেঙে যাওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। উপজেলার উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের কালাইরাগ গ্রামে ইটের রাস্তার কালভার্ট ভেঙে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এতে ওই রাস্তায় চলাচলকারীদের জন্য তৈরি হয়েছে মরণফাঁদ। রাস্তাটি দিয়ে কালাইরাগ ছাড়াও ইউনিয়নের নাজিরেরগাঁও, মাঝেরগাঁও, ছড়ারবাজার, উৎমা ও বরমসিদ্ধিপুর গ্রামের অন্তত ১৫ হাজার মানুষ চলাচল করে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দে কালাইরাগ গ্রামের রাস্তায় যাতায়াতের সুবিধার্থে ইটের সলিং, গাইড ওয়াল ও একটি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। এতে বরাদ্দ ধরা হয় ৩৫ লক্ষ টাকা। ফাতেহা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এর কাজ পায়। কিন্তু বছর যেতে না যেতেই কালভার্টটি ধসে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে গর্তটি বিশাল আকার ধারণ করায় যোগাযোগব্যবস্থা অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
কালাইরাগ গ্রামের সমুজ মিয়া বলেন, কালভার্ট ভেঙে যাওয়ায় চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হলেও পুনঃসংস্কারের উদ্যোগ কেউ নেয়নি। বর্তমানে এটি নাজুক অবস্থায় থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি কুদ্দুছ মিয়া বলেন, এই রাস্তায় নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হয়েছে। বক্স কালভার্ট ও গাইড ওয়াল নির্মাণে অনিয়ম হয়েছে। গত বছর কাজ চলাকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অনিয়মের অভিযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু কোন প্রতিকার পাইনি।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, কালভার্ট ভেঙে যাওয়ায় উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের ৫-৬ টি গ্রামের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। কালাইরাগ ও নাজিরেরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যানবাহন না চলায় পায়ে হেঁটে আসা যাওয়া করছে। সংশ্লিষ্টদের কাছে বারবার বলার পরও কালভার্টটি পুনরায় সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাদের।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদীন বলেন, নির্মাণ কাজ চলা অবস্থায় অনিয়মের বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। তখন ঠিকাদারকে বললেও কোন কর্ণপাত করেনি। গত কিছুদিনের বৃষ্টিতে কালভার্টটি ধসে গেছে৷ দুই পাশের বিরাট অংশজুড়ে গর্ত হয়েছে। গর্তে পড়ে যেকোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফয়জুর রহমান মাস্টার বলেন, কাজটি নিয়মমাফিক হয়নি। এজন্য এক বছরের মধ্যেই ভেঙে পড়েছে। ঠিকাদারকে বলে দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নিতে ইউএনও এবং পিআইওকে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার নুরুল ইসলামকে কল দিলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা প্রকল্প ও বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বিদ্যুৎ কান্তি দাস বলেন, ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি বক্স কালভার্ট ও আধা কিলোমিটার রাস্তায় ইট সলিং এর কাজ করা হয়। নির্মাণ কাজে ঠিকাদারের গাফিলতি থাকতে পারে। পুনঃসংস্কারে তাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী আসিফ খান বলেন, সড়কটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) আওতাভুক্ত। তবে, ইট সলিং এবং বক্স কালভার্টটি পিআইও অফিস করেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুসিকান্ত হাজং বলেন, কালভার্টটি ভেঙে যাওয়ার খবর শুনেছি। ঠিকাদারকে চিঠি দিয়ে দ্রুত সংস্কার করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তার জামানত বাজেয়াপ্ত করা হবে।