মহানগর শাখার সংবাদ সম্মেলন
রেজিস্ট্রি মাঠে ২১ জুলাই ফের জামায়াতের জনসভা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জুলাই ২০২৩, ৪:৫৮:২৯ অপরাহ্ন
# আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সকলের সহযোগিতা কামনা
স্টাফ রিপোর্টার : পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় গতকাল শনিবার সিলেটে পূর্ব ঘোষিত জনসভা করতে পারেনি মহানগর জামায়াত। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দলের পক্ষ থেকে ‘ভোট ও ভাতে’র অধিকার প্রতিষ্ঠায় আগামী ২১ জুলাই শুক্রবার রেজিস্ট্রি মাঠে ফের জনসভা করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
গতকাল শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নগর জামায়াতের আমীর ফখরুল ইসলাম। তিনি জনসভা সফল করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতাও কামনা করেন।
নগরের বন্দরবাজারের কুদরত উল্লাহ মার্কেটের জামায়াত কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘শুধুমাত্র রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে আমাদের শান্তিপূর্ণ জনসভার অনুমতি দেয়া হয়নি। অথচ সভা-সমাবেশ করা সকল দলের সংবিধান স্বীকৃত গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু আমাদের সেই অধিকারকে দীর্ঘদিন থেকে হরণ করা হয়েছে। আমাদের নেতৃবৃন্দকে মিথ্যা মামলায় বিচারের নামে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে, কারাগারে রেখে বিনা বিচারে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান, নায়েবে আমীর সাবেক এমপি মাওলানা শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পারওয়ার, নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে বিনা বিচারে দীর্ঘদিন থেকে কারাগারে আটকে রাখা হচ্ছে। বিশ্ববরেণ্য আলেমে দ্বীন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মাওলানা মামুনুল হক, মুফতী আমির হামযাসহ অনেক আলেম-উলামাকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অবিলম্বে বিরোধী দলীয় সকল রাজবন্দি ও আলেম-উলামার নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।’
দফায় দফায় তেল-গ্যাস ও বিদ্যুতের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি করে জনজীবন দুর্বিষহ করে তোলা হচ্ছে জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘এই অবস্থা থেকে জাতিকে মুক্ত করতে হলে জনগণের নিকট জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সময়ের দাবি। জনগণ ২০১৪ ও ২০১৮ সালের ভোটের সরকার চায় না। এ লক্ষ্যে সিলেট মহানগর জামায়াত আগামী ২১ জুলাই শুক্রবার একই স্থানে শান্তিপূর্ণ জনসভার আয়োজন করতে যাচ্ছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বার্থে, ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন ফখরুল ইসলাম। একই সাথে প্রশাসনের সহযোগিতাও কামনা করেন।’
শনিবারের জনসভার কথা উল্লেখ করে মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘চলতি মাসের ৫ জুলাই মহানগর জামায়াতের পক্ষ থেকে ১৫ জুলাই রেজিস্ট্রি মাঠে জনসভা আয়োজনের লক্ষ্যে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের নিকট লিখিত আবেদন করে। আবেদনে শান্তিপূর্ণ জনসভা সফলে পুলিশের সহযোগিতাও কামনা করা হয়। এ জন্যে মহানগরীর প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রস্তুতি সভা এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে প্রচারণাও চালানো হয়। ১২ জুলাই এসএমপি কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে তখনো আমাদেরকে অনুমতি দেয়া হবে না বলে কোন কিছু জানানো হয়নি। বরং আবেদনটি সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে বলে আশ্বস্ত করা হয়। কিন্তু শুক্রবার রাতে মৌখিকভাবে আমাদেরকে বলা হয় জনসভার অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। পুলিশের এমন সিদ্ধান্তে আমরা হতভম্ব হয়েছি।’
ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা, নির্দলীয় নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল, গুমকৃত সকল ব্যক্তিকে অক্ষত অবস্থায় পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া, নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত হাজার হাজার মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ জেলা ও মহানগরীর সকল দলীয় কার্যালয় অবিলম্বে খুলে দেয়াসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করছে জামায়াত।
সংবাদ সম্মেলনে সিলেট জেলা দক্ষিণ জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান, জেলা উত্তরের আমীর হাফিজ আনোয়ার হোসাইন খান, মহানগর নায়েবে আমীর মাওলানা সোহেল আহমদ, সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহজাহান আলী, জেলা উত্তরের সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন, মহানগর সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুর রব ও জেলা দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি সাইফুল্লাহ আল হোসাইন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট জামিল আহমদ রাজুসহ জামায়াত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।