শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জুলাই ২০২৩, ৫:৩৪:৪০ অপরাহ্ন
![শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে](https://sylheterdak.com.bd/wp-content/uploads/2023/07/editorial-768x512-2-300x200-1-1.jpg)
পিতার আত্মনিয়ন্ত্রণই ছেলেমেয়েদের পক্ষে সর্বশ্রেষ্ঠ উদাহরণ। -ডেমোক্রিটাস
লক্ষণ শুভ। জেগে উঠছে মানুষ। শব্দদূষণে অতিষ্ঠ মানুষ এখন এর প্রতিকার চেয়ে আইন প্রয়োগকারি সংস্থার শরণাপন্ন হচ্ছে। যেটা এর আগে দেখা যায় নি।বিগত পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে ‘জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯’-এ শব্দদূষণের প্রতিকার চেয়ে শত শত কল এসেছে। সাধারণ মানুষ এ নম্বরে অভিযোগ দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। একটি জাতীয় পত্রিকার খবর এটি।
জানা গেছে, ঈদের ছুটিতেও জরুরি সেবায় শব্দদূষণসহ মারামারি, সড়ক দুর্ঘটনা, পারিবারিক সমস্যা, ছিনতাই, ডাকাতি, সন্ত্রাসি কর্মকা- ও সাইবার অপরাধের অভিযোগ পায় পুলিশের এই ইউনিট। চার দিনে জাতীয় জরুরি ৮ হাজারের বেশি অভিযোগ এসেছে এখানে। সাধারণত কোন অভিযোগে থানা পুলিশকে ফোন করলে তারা সেবা দিতে গড়িমসি করে। কিন্তু জাতীয় সেবায় ফোন করলে তাৎক্ষণিক সেবা পাওয়া যায়। তখন থানা পুলিশও তাৎক্ষণিকভাবে ছুটে আসে। এব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য হচ্ছে, শব্দদূষণের বিরুদ্ধে মানুষের সচেতনতা বেড়েছে। এটা সুসংবাদ। শব্দ দূষণ আজকাল শুধু নাগরিক সমস্যা নয়, এটি এখন রীতিমতো সারা দেশেরই সমস্যা। যে হারে সর্বত্র শব্দের আগ্রাসন বাড়ছে, সেটাকে ‘শব্দ-সন্ত্রাস’ বলেই অভিহিত করছেন ভূক্তভোগিরা। যানবাহনের হর্নসহ বিভিন্ন স্থাণে নির্মাণ কাজের মিক্সার মেশিন, মাইক বাজানো কিংবা কলকারখানার আওয়াজ থেকে সৃষ্টি হচ্ছে অসহনীয় শব্দ দূষণ। দেশজুড়েই শব্দদূষণ এক নীরব ঘাতক। একে এখন জীবনবিনাশি শব্দ সন্ত্রাস হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। নানান সামাজিক-রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দে মাইকে গান বাজানো যেন একটা স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। আর রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষ দিবসগুলোতে সারাদিন-রাত ধরে উচ্চ শব্দে মাইক বাজালেও কেউ তার প্রতিবাদ করার সাহস পান না। ফলে শব্দ দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করে। বাই সাইকেল থেকে শুরু করে সব ধরণের যানবাহনেই ব্যবহার করা হচ্ছে নিষিদ্ধ হাইড্রোলিক হর্ন। দেশে প্রচলিত শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬-এর আওতায় নীরব, আবাসিক, মিশ্র, বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকা চিহ্নিত করে শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। আইন অমান্য করলে কারাদ- ও অর্থদ-ের বিধান রয়েছে। এছাড়া, মোটরযান অধ্যাদেশে (১৯৮৩) নিষিদ্ধ হর্ন ব্যবহারে শাস্তির বিধান রয়েছে। হাইকোর্ট ২০০২ সালের এক আদেশে সব প্রকার যানবাহনে হাইড্রোলিক হর্ন ও বিরক্তিকর হর্ন ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। কিন্তু বাস্তবে এই আইনের প্রয়োগ নেই।
সবকিছু মিলিয়ে বিশেষজ্ঞগণ শব্দ দূষণকে শব্দ সন্ত্রাস বলে চিহ্নিত করেছেন। কারণ এটি সন্ত্রসী কর্মকা-ের চেয়ে আরও ভয়াবহ।তবে মানুষ এবার সচেতন হচ্ছে। আমরা চাই, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন যথাযথ কার্যকরের মাধ্যমে শব্দ সন্ত্রাস থেকে জাতিকে উদ্ধার করা হোক। সেইসঙ্গে সাধারণ মানুষ যেন ৯৯৯-এ ফোন করে যাতে সহজে প্রতিকার পায়, সে জন্য পুলিশকে আরও মনোযোগি হতে হবে।