ইইউ প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক শেষে যা বললেন জামায়াত নেতারা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জুলাই ২০২৩, ১২:৩৪:৫২ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক : জামায়াত ইসলামীর প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকা সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দল।
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর গুলশান-২ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে অংশ নেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের নেতৃত্বে জামায়াতের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আব্দুর রব এবং জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।
বৈঠক শেষে ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা বা দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। জামায়াতের পক্ষ থেকে কেয়ারটেকার বা নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থার বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট বলেছি, বর্তমান সরকারের অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে যে প্রহসনে নির্বাচন হয়েছে পুরো জাতি ও বিশ্ববাসীর কাছে তা পুরোপুরি পরিষ্কার। ওই দুটি নির্বাচন কোনো নির্বাচন ছিল না, নির্বাচনের নামে প্রহসন ছিল। ২০১৪ সালে জাতি দেখেছে, একটি নির্বাচনের আগেই ১৫৪ জন বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। একটি জাতীয় নির্বাচনের আগেই যদি মেজরিটি পার্সেন্ট নির্বাচিত হয়ে যায়, সেটাকে আসলে নির্বাচন বলা যায় না। সেজন্য নতুন শব্দ আবিষ্কার করতে হবে।
তাহের বলেন, ২০১৮ সালে আমরা সকল দলই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। সেই নির্বাচনের পূর্বে ডায়ালগ হয়েছিল, যিনি আজকে সরকার প্রধান তিনি বারবারই বলেছিলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা আমি যা বলি তা থেকে সরে যাই না। ২০১৮ সালের নির্বাচন অবাধ হবে, সুষ্ঠু হবে এমনটি তিনি বলেছিলেন। কিন্তু আমরা দেখেছি, নির্বাচনটা আগের রাতেই হয়ে গিয়েছিল। এটাও পৃথিবীর ইতিহাসে একটি নতুন সংযোজন। আমরাও আশা করেছিলাম কিছুটা হলেও সরকার ডেমোক্রেটিক হয়েছে। হিউম্যান রাইটসের ব্যাপারে কিছুটা হলেও তারা সম্মান দেখাবে। কিন্তু সিলেটে জামায়াতের ডাকা সমাবেশের অনুমতি না দিয়ে ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারের চিত্রই আমাদের সামনে এসেছে।
সাবেক সংসদ সদস্য আরো বলেন, যে সরকার নির্বাচনের ঠিক চার মাস আগে এখনই সভা, সমাবেশ করতে দিচ্ছে না, আমাদের সকল অফিস খুলতে দিচ্ছে না, এরকম একটা সময়ে আগামী নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হয়ে যাবে এমনটা আশা করার সুযোগ নেই। সরকার এখনই প্রমাণ করছে, তাদের অধীনে আসলে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। সেই কথাটি আমরা অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে ইইউ প্রতিনিধি দলকে বলেছি। তারাও আমাদের সঙ্গে ডিপ্লোম্যাটিক ভাষায় ঐকমত্য পোষণ করেছেন।
জামায়াতের এই শীর্ষনেতা বলেন, তারা (ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা) আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন যে জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে তাদের পর্যবেক্ষক প্রতিনিধি পাঠানোর বিষয়টি আমরা কীভাবে দেখছি? আমরা বলেছি, বাংলাদেশের যে কোনো নির্বাচনে আমরা তাদের প্রতিনিধিকে ওয়েলকাম জানাই। কিন্তু নির্বাচনের নামে যদি প্রহসন হয় তাহলে তো এখানে পর্যবেক্ষক পাঠানো অর্থহীন। অবৈধ নির্বাচনকে দেখতে আসাটা সম্মানজনক হবে কিনা সেটি আপনাদের বিবেচনা।