আফগানদের উড়িয়ে টাইগারদের টি-টোয়ান্টি সিরিজ জয়
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ জুলাই ২০২৩, ৫:০৬:৩৬ অপরাহ্ন
স্পোর্টস রিপোর্টার : সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম টি-টোয়ান্টিতে শেষ ওভারের নাটকীয়তায় ২ উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় টি-টোয়ান্টিতে দাপটের সাথে খেলে আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ।
গতকাল রোববার দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়ান্টিতে আফগানদের দেয়া ১১৯ রানের টার্গেট ৫ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। কানায়কানায়পূর্ণ স্টেডিয়ামের উৎফুল্ল দর্শক তৃপ্তির হাসিতে মাঠ ছাড়েন। উদ্বোধনী জুটিতে লিটন দাস ও আফিফ হোসেনের দুর্দান্ত সূচনা, বোলিং-এ প্রথম ওভারে তাসকিনের আফগানিস্তানের রহমানউল্লাহ গুরবাজকে আউট নিশ্চিত জয়ের পথে এগিয়ে নেয়।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি আফগানরা। দুই উদ্বোধনী ব্যাটারকেই আউট করেন পেসার তাসকিন আহমেদ। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে ইবরাহিম জাদরানের ক্যাচ নিজেই নেন তিনি। ৫ বলে ৮ রান করে আউট হন এই আফগান ব্যাটার। নিজের পরের ওভারে তাসকিন সাজঘরে ফেরান হজরতউল্লাহ জাজাইকে। ১ চারে ৫ বলে ৪ রান করা এই ব্যাটার উইকেটের পেছনে লিটন দাসকে ক্যাচ দেন। অষ্টম ওভারের সময় বৃষ্টি নেমে আসে। প্রায় দেড় ঘণ্টা বৃষ্টির পর খেলা ফের শুরু হয়। এর আগে ও পরে বেশ ভালো জুটিই গড়েছিলেন মোহাম্মদ নবি ও ইবরাহিম জাদরান। তাদের ৩২ রানের জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। ২২ বল খেলে ১৬ রান করে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরত যান নবি। এরপর ১ চার ও ছক্কায় ২৭ বলে ২২ রান করা ইবরাহিমকে আউট করেন সাকিব আল হাসান। আফগানিস্তানের রান বাড়ে মূলত করিম জানাত ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ব্যাটে ভর করে। শেষদিকে বেশ দ্রুত রান তোলেন তারা। ২৯ বলে ৪২ রানের জুটি গড়েন দুজন। ২ চার ও ১ ছক্কায় ২১ বলে ২৫ রান করে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে ওমরজাই আউট হলে জুটি ভাঙে। আফগানিন্তানের রান কমাতে দারুণ ভূমিকা রাখে মোস্তাফিজুর রহমানের করা ১৬তম ওভার। ওই ওভারে ৩ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন তিনি। ১ চার ও ছক্কায় ১৫ বলে ২০ রান করা করিমকে আউট করেন তাসকিন আহমেদ। শেষদিকে নেমে ২ বলে একটি ছক্কা হাঁকান রশিদ খান। বাংলাদেশের পক্ষে ৪ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। দুই উইকেট করে নেন মোস্তাফিজ ও সাকিব।
বৃষ্টি বিঘিœত ১৭ ওভারের ম্যাচে বাংলাদেশের লক্ষ্য দেয় ১১৯। যেভাবে ব্যাট করা প্রয়োজন ছিল সেভাবেই শুরু করেন বাংলাদেশের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান লিটন দাস ও আফিফ। লিটন ও আফিফের ৬৭ রানের ওপেনিং জুটিই গড়ে দেয় জয়ের শক্ত ভিত। উদ্বোধনী ব্যাটারদের জন্য আতঙ্ক হওয়া আফগান বোলার ফজল হক ফারুকীর প্রথম ওভারেই আসে ১০ রান যার মধ্যে দুটি চার হাঁকান লিটন। ওয়াফাদার মোমান্দের পরের ওভারে চারের হ্যাটট্রিক করেন তিনি। পরে রান তোলার ঝড়ে যোগ দেন আফিফও। লিটন দাস আউট হন ৩৬ বলে ৩৫ রান করে। মুজিব উর রহমানের বলে অনেকটা ঝাঁপিয়ে দুর্দান্তভাবে তার ক্যাচ নেন রশিদ খান। এক বল পরই ফেরেন আফিফও। একাদশে ফিরেই ইনিংস উদ্বোধনের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। ২ ছক্কায় ২০ বলে ২৪ রান করে ক্যাচ দেন করিম জানাতের হাতে। ৬ বলে ৪ রান করে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বলে বোল্ড হন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৯ রানের ভেতর ৩ উইকেট হারিয়ে বেশ বিপদে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ওভার প্রতি রান ৬ এর নিচে নামিয়ে আনলেও সেটি উঠে যায় ৭ এর উপর। সেখান থেকে দলের হাল ধরেন হৃদয় ও সাকিব। ১ চার ও সমান ছক্কার ইনিংসে ১৭ বলে ১৯ রান করে হৃদয় সাজঘরে ফেরেন। তবে শেষ অবধি অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক সাকিব। ১ চার ও ছক্কায় ১১ বলে ১৮ রান করেন সাকিব। এরমধ্যে দিয়ে আফগানিস্তানকে প্রথমবার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারাল বাংলাদেশ। ম্যান অব দ্য ম্যাচ ও সিরিজ দুটিই হয়েছেন সাকিব আল হাসান।