সিলেটে কিছুতেই থামছে না বিদ্যুতের লোডশেডিং ॥ গ্রামের পরিস্থিতি ভয়াবহ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২০ জুলাই ২০২৩, ৪:২৩:২৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট অঞ্চলে কিছুতেই থামছে না বিদ্যুতের লোডশেডিং। কয়েকদিন ধরেই বেড়ে চলছে গরম। এর সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অনিয়ন্ত্রিত লোডশেডিং। গ্রামের পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ। সামান্য সময়ের জন্য বিদ্যুৎ এলেও কিছুক্ষণ পর দীর্ঘ সময়ের জন্য বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন লোকজন।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট’র বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির বলেন, চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় লোডশেডিং বেড়েছে। যার কারণে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সাময়িক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গতকাল বুধবার সিলেটে লোডশেডিং ছিল ৩৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ। তবে, কয়েকদিনের মধ্যেই বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছবে বলে জানান তিনি।
এদিকে, ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানিয়েছেন, গত কয়েকদিন ধরে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে তারা চরম বেকায়দায় পড়ছেন। ব্যবসা-বণিজ্যে এর প্রভাব পড়ছে। বিদ্যুতের ‘ভেল্কিবাজিতে’ সাংসারিক কাজকর্মেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ঘন ঘন বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার কারণে বাসা-বাড়ির ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী নষ্ট হচ্ছে। চন্দপতন ঘটেছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুরা পড়েছে আরো বেকায়দায়।
নগরীর মোতালেব ভিলার ব্যবসায়ী হামিদ মিয়া বলেন ‘গরমের সময়ে তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। দিনের বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। এতে কোনো কাজ করতে পারছি না। এ অবস্থা চলতে থাকলে ব্যবসার পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি’।
নগরীর লাকড়িপাড়ার বাসিন্দা গৃহিণী রাহিমা হক হেনা বিদ্যুতের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, চলমান বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। প্রতিবার এক ঘণ্টারও বেশি সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। এ অবস্থা দ্রুত নিরসনে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
নগরীর মাছিমপুরের বাসিন্দা উন্নয়ন কর্মী রিনা সিনহা অভিযোগ করে বলেন, সিলেটবাসীর বিদ্যুৎ বিড়ম্বনা কিছুতেই কাটছে না। নানা অজুহাতে সীমাহীন বিদ্যুৎ বিভ্রাট সাধারণ মানুষকে হতাশ করে তুলছে। এ অবস্থার টেকসই সমাধান প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিদ্যুৎ বিভাগ সংশ্লিষ্টরা জানান, সিলেট বিভাগে পল্লী বিদ্যুৎ ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড মিলিয়ে প্রায় ২২ লাখ গ্রাহক রয়েছে। সিলেট অঞ্চলে গতকাল বুধবার ৫৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৩৫০ মেগাওয়াট।
বিউবো বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলুল করিম জানান, বিতরণ বিভাগ-১ এর গতকালের বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৪৪ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে লোডশেডিং ছিল ৩২ থেকে ৪০ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, গত ২১ জুন অনুষ্ঠিত সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রচারের সময় আলোচনায় উঠে আসে লোডশেডিং প্রসঙ্গ। আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী (বর্তমানে নির্বাচিত) মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর প্রচেষ্টায় সিসিক নির্বাচন পর্যন্ত সিলেটে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও নির্বাচনের পর ফের লোডশেডিংয়ে ফিরে সিলেট। গত ১০ ও ১১ জুলাই বিবিয়ানায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সিলেটবাসী ফের বিদ্যুৎ ভোগান্তিতে পড়েন।