কেজি স্কুল নিয়ন্ত্রণে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২১ জুলাই ২০২৩, ৩:৪৮:৩২ অপরাহ্ন
জীবনে যতো ভুল ততো মঙ্গলময় হতে পারে। কারণ অন্ধকার অলিগলি পার হয়েই মানুষ আলোকবর্তিকার সন্ধান পায়। -ডেল কার্নেগি
নিয়ন্ত্রণে আসছে কেজি স্কুলগুলো। দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে থাকা কিন্ডারগার্টেন বা কেজি স্কুলগুলোকে সরকারের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই সংক্রান্ত একটি বিধিমালা তৈরি করা হয়েছে। এর আলোকে পরিচালিত হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। ব্যক্তি বা পারিবারিকভাবে প্রতিষ্ঠিত এইসব প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত হচ্ছে অনেকটা প্রতিষ্ঠাতার খেয়ালখুশিমতো। এই বিধিমালা কার্যকর হলে এই প্রতিষ্ঠানগুলো একটা শৃংখলার মধ্যে চলে আসবে এবং এগুলো ‘বেসরকারি বিদ্যালয়’ হিসেবে মর্যাদা পাবে।
বিগত কয়েক দশক ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেসরকারি উদ্যোগে কিন্ডারগার্টেন বা কেজি স্কুল স্থাপনের প্রবনতা শুরু হয়। প্রথমে শহরাঞ্চলে শুরু হলেও পরবর্তিতে তা ছড়িয়ে পড়ে মফস্বল এলাকায়। পাড়া-মহল্লার অলি-গলি, ফ্ল্যাট বাড়ি বা ছাদে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠতে থাকে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। বর্তমানে সারাদেশে এর সংখ্যা ৭০ হাজারের বেশি। সত্যি বলতে কি, এই বিদ্যালয়গুলো চলছে আদতে সরকারের অনুমোদন ছাড়াই। তাছাড়া, এগুলোর বিরুদ্ধে রয়েছে শিক্ষা বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ। বলা যায়, এগুলো চলছে লাগামহিনভাবে। এসব প্রতিষ্ঠানে শিশুদের মাথায় চাপিয়ে দেয়া হয় বইয়ের বোঝা। নিম্নমানের অনেক বই এরা শিশুদের কিনতে বাধ্য করে। শিক্ষকদের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। তাছাড়া, এসব স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টিউশন ফিও আদায় করছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, কিন্ডারগার্টেনসহ বেসরকারি বিভিন্ন ধরনের স্কুল তত্ত্বাবধানের জন্য ২০১১ সালের একটি বিধিমালা প্রনয়ন করা হয়। সেটি এখনও কার্যকর হয় নি। এবার নতুন বিধিমালা তৈরির পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে- সরকারের অনুমতি ছাড়া কেজি স্কুলসহ কোন ধরনের বেসরকারি বিদ্যালয় পরিচালনা করা যাবে না। প্রকাশকদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে শিশুদের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া যাবে না বইয়ের বোঝা। আদায় করা যাবে না ইচ্ছেমতো ফি। খাত ও ফি’র হার থাকবে নির্দিষ্ট।এই বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম) নিবন্ধন বিধিমালা মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর কার্যকর হবে।এ প্রসঙ্গে সরকারের বক্তব্য হচ্ছে, দেশে কোন প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের
বাইরে থাকবে না। জাতীয় শিক্ষানীতির নির্দেশনাও তাই।
এটা খুবই আশ্চর্যের বিষয় যে, সরকারের কোন ধরনের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই দেশে ৭০ হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এবার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এই সংক্রান্ত বিধিমালা প্রনয়নের। এর বাস্তবায়নই আসল কথা। ইতোপূর্বে একটি বিধিমালা তৈরি করা হলেও সেটা আলোর মুখ দেখে নি। এবার অন্তত দেশের কমপক্ষে ৭৫ লাখ শিশু কিশোরের ভবিষ্যতের কথা ভেবে কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোকে একটা শৃংখলার মধ্যে নিয়ে আসা হবে বলেই আমরা আশা করছি।