জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ জুলাই ২০২৩, ৬:১১:২১ অপরাহ্ন
ভুল-ভ্রান্তি নিয়েই মানুষের জীবন। সেই ভুলকে প্রাধান্য দিয়ে বাকি জীবনে অশান্তি ডেকে আনার কোনো মানে হয় না। -লাওসে
শুরু হয়েছে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, নিরাপদ মাছের উৎপাদন বাড়াতে দেশের জনগণকে আরও সচেতন ও সম্পৃক্ত করা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রেক্ষাপটে এবারের জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সপ্তাহ উপলক্ষে আগামি ৩০ তারিখ পর্যন্ত সরকারি উদ্যোগে পালিত হবে নানা কর্মসূচি।
মূলত প্রাণিজ আমিষের অন্যতম উৎস হচ্ছে মাছ। বলা হয় ‘মাছে-ভাতে বাঙ্গালি’। কিন্তু নিকট অতীতে আমরা এই ঐতিহ্য হারাতে বসেছিলাম। ইদানিং মাছের ঐতিহ্য ফিরে আসছে। বিলুপ্তপ্রায় অনেক দেশীয় মাছের উৎপাদন বাড়ছে। বেড়েছে সার্বিক মৎস্য উৎপাদন। সত্যি বলতে কি, কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে মৎস্য খাতের অবদান অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়টি অনুধাবন করেই স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে ঘোষণা দিয়েছিলেন- ‘মাছ হবে দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ’। মৎস্য সেক্টরের গুরুত্ব উপলব্ধি করেই তিনি ১৯৭৩ সালে গণভবন লেকে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। সেই প্রেক্ষাপটে প্রতি বছর পালিত হচ্ছে জাতীয় মৎস্যসপ্তাহ। আর মৎস্য খাতের বহুমুখী কর্মকা-কে অধিকতর গতিশীল করার লক্ষে বর্তমান সরকার এ সেক্টরের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সর্বপ্রথম জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের কার্যক্রম ১৯৯৩ সাল থেকে শুরু হয়। তবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ১৯৯৬ সাল থেকে দেশব্যাপি জাঁকজমকপূর্ণভাবে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন করা হচ্ছে। মৎস্য সেক্টরের উন্নয়নের ইপ্সিত এ গতির অন্যতম নিয়ামক হলো- জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন। ব্যাপক জনসম্পৃক্ততা, লাগসই মৎস্য প্রযুক্তি সম্প্রসারণ তথা জনগণের সচেতনতা ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে টেকসই মৎস্য উন্নয়নের জন্যই প্রতি বছর জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন করা হয়। সরকারের সময়োপযোগি পদক্ষেপ, বিজ্ঞাণি ও চাষিদের আক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে দেশে কৃষি উৎপাদনে ঈর্ষনীয় সাফল্য আর্জিত হয়েছে। বেড়েছে ধানের উৎপাদন। মৎস্য উৎপাদনেও বাংলাদেশ সারা বিশ্বে উল্লেখযোগ্য অবস্থানে চলে গেছে। এই সাফল্য ধরে রাখতেই জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালন খুবই জরুরি।
সর্বোপরি, প্রাণিজ আমিষের জোগান বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও নিরাপদ মৎস্য সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে মৎস্য চাষ ও সংরক্ষণ কার্যক্রমকে একটি সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করার মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে মৎস্য সপ্তাহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেই আমরা মনে করি।