গোয়াইনঘাটের তমজিদ আলী হত্যা মামলা ২২ বছর পর রায়, ৪ জনের মৃত্যুদন্ড
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ জুলাই ২০২৩, ৮:৪৩:১৬ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার: সিলেটের গোয়াইনঘাটে তমজিদ আলী হত্যা মামলায় দীর্ঘ ২২ বছর পর ৪ জনকে মৃত্যুদ- এবং প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার দুপুরে সিলেটের বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালত চালুর পর এই প্রথম কোন মৃত্যুদন্ডের রায় হয়েছে এই আদালতে। মৃত্যুদ-প্রাপ্তরা হলেন- গোয়াইনঘাট উপজেলার ইটাচকি গ্রামের আব্দুর রব, একই গ্রামের ইদ্রিছ আলীর ছেলে আব্দুর রহমান, পার্শ্ববর্তী ইস্তি গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে রইছ আলী ও নুর মিয়ার ছেলে ফজল উদ্দিন।
সিলেটের বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. ফখরুল ইসলাম জানান, এ মামলায় বাকি ১১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। তিনি জানান, এ মামলায় দ-প্রাপ্ত চার আসামির সকলেই জামিনে ছিলেন। রায় ঘোষণার সময় তারা কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া এ মামলায় মোট ১৫ আসামির ১০ জনকে খালাস দেওয়া হয় এবং সাজিদুল হক নামের এক আসামি বিচার চলাকালে মৃত্যুবরণ করেন।
মামলার বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, ২০০১ সালের ৮ আগস্ট সকাল সাড়ে ৬টায় সিলেটের গোয়াইনঘাটে ইস্তি গ্রামে খালে মাছ মারাকে কেন্দ্র করে হাত-পা বেঁধে দা দিয়ে কুপিয়ে জেলে তমজিদ আলীকে হত্যার পর মরদেহ হাওরে ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পরদিন নিহতের স্ত্রী পেয়ারা বেগম ১৫ জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা {নং-৬ (৮)০০১} দায়ের করেন। পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০০২ সালের ২ মার্চ চার্জশিট দাখিল করেন। ২০০৩ সালের ৫ নভেম্বর সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন সদর সার্কেল এএসপি সিদ্দিকী তানজিলুর রহমান।
মামলাটি জিআর ৭৭/২০০১ মূলে আদালতে রেকর্ড করা হয়। ২০০৪ সালে এ আদালতে দায়রা ৩/২০০৪ মূলে রেকর্ড করে বিচার শুরু হয়। মামলায় দীর্ঘ শুনানিতে ২২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক আজ এ হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদ-ের আদেশ দেন। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়। সেসঙ্গে অন্য সব আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আসামীদের মধ্যে ৩ জন পলাতক ছিলেন। আসামীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন উবায়দুর রহমান।
বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. ফখরুল ইসলাম আরো জানান, এই আদালতে আগে যাবজ্জীবন সাজা হলেও এটাই প্রথম কোন মামলায় ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়।