অব্যাহত লোডশেডিংয়ের মাঝে গ্রিড বিপর্যয়
দেড় ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন গোটা সিলেট বিভাগ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ জুলাই ২০২৩, ৪:৪৫:০৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : বিদ্যুতের দুর্ভোগ থেকে কিছুতেই রেহাই পাচ্ছেন না সিলেটবাসী। ঘণ্টার পর ঘণ্টা টানা লোডশেডিংয়ে যখন প্রাণ ওষ্ঠাগত, তখন বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় যোগ হয় নতুন সংকট। গোটা সিলেট বিভাগ প্রায় দেড় ঘণ্টা ছিল বিদ্যুৎবিহীন। বিদ্যুতের এই বিপর্যয় ঘটে গতকাল সোমবার।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল সোমবার বেলা ১টা ১০ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিপর্যয় দেখা দেয়। এতে জাতীয় গ্রিডের ১৩২ কেভি ২টি সার্কিট বন্ধ হয়ে পড়ায় সিলেট বিভাগ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে। বেলা পৌনে ৩টার দিকে বিদ্যুৎ সঞ্চালন শুরু হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরো কয়েক ঘণ্টা লাগে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিতরণ অঞ্চল সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া, বিদ্যুতের চলমান লোডশেডিং এর মাত্রা চরম আকার ধারণ করায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। গত ২১ জুন অনুষ্ঠিত সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পর থেকে যোগ হওয়া লোডশেডিংয়ে শিক্ষার্থী, শিশু, বৃদ্ধ সবাই হাসফাস করছেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ মিলছে না। এমন অবস্থায় হাঁপিয়ে উঠছে জনজীবন। লোডশেডিং এর কারণে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন অনেকেই। গ্রামের পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
এদিকে, ঘন ঘন লোডশেডিং বন্ধ এবং বিদ্যুতের অনিয়ম, অপচয় ও দুর্নীতি বন্ধের দাবিতে গত রোববার দুপুরে নগরীর বন্দরবাজারস্থ কোর্ট পয়েন্টে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই লোডশেডিং এর কারণে মানুষের দুর্গতি ও জীবন জীবিকায় প্রচন্ড প্রভাব পড়েছে। পাশাপাশি সরকারের গৃহিত মহাউন্নয়ন কর্মকান্ড ম্লান করে দিচ্ছে। সমাবেশ থেকে অবিলম্বে বিদ্যুতের লোডশেডিং বন্ধ করার দাবি জানানো হয়।
চলমান লোডশেডিং এর বিষয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিতরণ অঞ্চল সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী জানান, চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় লোডশেডিং বেড়েছে। যার কারণে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সাময়িক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গতকাল সোমবার সিলেট অঞ্চলে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৫০০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৩০০ মেগাওয়াট। পল্লীবিদ্যুৎসহ সিলেট জেলার জন্য ১৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ হওয়ায় গ্রাহকরা দুর্ভোগের শিকার হন। শতকরা ৩৫ ভাগ লোডশেডিং ছিল বলেও জানান তিনি।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিতরণ অঞ্চল-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলুল করিম জানান, আশুগঞ্জে বিদ্যুৎ বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠায় সিলেটের কুমারগাঁও গ্রিডে সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তবে, যেটুকু লোড শেডিং হচ্ছে তা সরবরাহের পরিমাণে ঘাটতি থাকায়।
ভুক্তভোগীরা জানান, সিলেট বিভাগে পল্লী বিদ্যুৎ ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ২২ লাখ গ্রাহক প্রায় সময়েই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের শিকার হন। গত রমজানেও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবিতে গ্রাহকদের নানা কর্মসূচি পালন করতে হয়েছে। চাহিদা মাফিক উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় গত ২১ জুন অনুষ্ঠিত সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রচারের সময়ও আলোচনায় উঠে আসে লোডশেডিং প্রসঙ্গ। আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী (বর্তমানে নির্বাচিত) মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর প্রচেষ্টায় সিসিক নির্বাচন পর্যন্ত সিলেটে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও নির্বাচনের পর ফের লোডশেডিংয়ে ফিরে সিলেট।