হজ্ব পালন শেষে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০২ আগস্ট ২০২৩, ৩:১৩:৩১ অপরাহ্ন
রফিকুর রহমান লজু
পবিত্র হজ্ব শেষ হয়েছে। হজ্ব শেষে প্রয়োজনীয় কাজসমূহ শেষ করে হাজি সাহেবগণ দেশে ফিরতে শুরু করেছেন। ফিরার আগে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করেছেন। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, টুকটাক উপহার সামগ্রী কিনেছেন। আরেকটা দ্রব্য সবাই একটু বেশি পরিমাণে দেশে আনতে চান। এটা হলো খেজুর-খুরমা। সবাইর জন্য ব্যবহার সামগ্রী, দামি সুভ্যিনির বা উপহার সামগ্রী আনা তো সম্ভব নয়। তাই জমজমের পানির সঙ্গে কিছু খেজুর-খুরমা ঘরে ঘরে পেঁৗঁছিয়ে দেওয়া হয়। হাজিগণের কাছে এই জিনিসই সবাই প্রত্যাশা করেন বেশি। আত্মীয়দের কাছ থেকেও নানা উপহার ও সাংসারিক কাজের জিনিসপত্র পাওয়া যায়। আগে থেকেও কোনো প্রয়োজনীয় জিনিসের চাহিদা থাকে। এভাবে হাজিগণ বাড়িতে এসে পৌঁছেন। বাড়িতে পৌঁছেও তাদের কিছু করণীয় থেকে যায়। এসেই বাড়ির নিকটস্থ মসজিদে দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। এরপরে নিজ ঘরে প্রবেশ করে দুই রাকাত নামাজ আদায় করাও মুস্তাহাব।
নবীজি (সা.) বলেন, যখন তুমি ঘর থেকে বের হবে, তখন দুই রাকাত নামাজ পড়বে, সেই নামাজ তোমাকে ঘরের বাইরের বিপদাপদ থেকে হেফাজত করবে। আর যখন ঘরে ফিরবে তখনো দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে, সে নামাজ তোমাকে ঘরের অভ্যন্তরীণ বালা মুসিবত থেকে হেফাজত করবে। সব রকমের অহংকার, রিয়া ও নিজের সুনাম-সুখ্যাতি প্রচার করা থেকে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত রাখতে হবে। পবিত্র মক্কা নগরীতে যাওয়া এবং এখানের আচার-অনুষ্ঠান সম্পাদন ইত্যাদি কার্যক্রমের মধ্যেই শুধু হজ্বের মূল উদ্দেশ্য শেষ হয়ে যায় না, বরং হজ্ব পরবর্তী সময়েও রয়েছে তাদের জন্য বিশেষ জীবন-যাপন, পরহেজগারি ও আমলি জিন্দেগি। হজ্ব পরবর্তী জীবন হবে তাওহিদ নির্ভর। হজ্ব পরবর্তী এমন কোনো কাজই করা যাবে না, যেখানে আল্লাহর সঙ্গে অংশীদারির ন্যূনতম সম্পর্ক রয়েছে। সূরা তওবা, আয়াত ৩।
হাজিদের জীবন হবে সবরকম পাপাচারমুক্ত। কাজে-কর্মে-চিন্তা-ভাবনায় পাপ থেকে দূরে থাকতে হবে। মিথ্যা থেকে বেঁচে থাকতে হবে, ওয়াদা রক্ষা করতে হবে। হজ্ব করার সাথে সাথে অন্য রুকনগুলো কালেমা, নামাজ, রোজা, জাকাত আদায় করা মেনে চলতে হবে। একজন খাঁটি মুসলমান হিসেবে আল্লাহর নির্দেশিত পথে আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ অনুগত থাকতে হবে। হজ্বের কথা সর্বদা মনে থাকাই একটা বড় ইবাদত। কারণ সৎ পথে নেক পথে চলতে হজ্ব একটা শক্ত অবলম্বন। অন্যের হক নষ্ট করা, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া, মিথ্যা কথা বলা, ওয়াদা ভঙ্গ করা, আমানত খেয়ানত করা, মা-বাবার অবাধ্য হওয়া, অহংকার করা, দম্ভ করা এবং ইসলাম বিরোধী কাজে লিপ্ত হওয়া প্রভৃতি থেকে বেঁচে থাকতে হবে। হজ্বের কথা সব সময় মনে রাখতে হবে, হজ্বের পর করণীয়-বর্জনীয় সম্পর্কে সজাগ-সতর্ক থাকতে হবে।
লেখক : সিনিয়র কলামিস্ট।