বিশ্বনাথের লামাকাজিতে কৃষি বিভাগের সেচ প্রকল্প অকেজো
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ আগস্ট ২০২৩, ৫:০৫:০৯ অপরাহ্ন
কৃষি উৎপাদন ব্যাহত
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় লামাকাজি ইউনিয়নের কেশবপুরে কৃষি বিভাগের বারিড পাইপ সেচ প্রকল্পের আওতায় স্থাপিত সেচ ব্যবস্থা অকেজো হয়ে পড়ায় এলাকায় কৃষি কাজ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সেচ প্রকল্পটি স্থাপনের পর থেকেই পাইপে পানি লিক করাসহ নানা সমস্যায় এলাকার প্রায় ১শ’ একর জমির ফসল উৎপাদন হুমকির মুখে পড়েছে। কৃষকরা নিজস্ব সেচ ব্যবস্থা সরিয়ে নতুন সেচ ব্যবস্থায় গিয়ে এখন চরম বিপাকে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। গত বছর সেচ না পাওয়ায় বোরো আবাদ হয়নি, দ্রুত সেচ ব্যবস্থা সচল না করলে আগামী বছরের বোরো আবাদ থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকা প্রকাশ করেন কৃষকরা। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তা কনক চন্দ্র রায় জানান, বরাদ্দ এলেই কাজ শুরু করা হবে।
স্থানীয়রা জানান, সুরমা নদীর তীরবর্তী কেশবপুর, বিদ্যাপতি, সাংগিরাই, আতাপুর ও সৎপুর গ্রামের কৃষকরা যৌথ ভাবে সেচ পাম্প ও পাইপ দিয়ে সেচ কাজ করে আসছিলেন। ৪ বছর পূর্বে কৃষি বিভাগে সেই স্থানে একটি সৌরবিদ্যুৎ চালিত বারিড পাইপ সেচ (ড্রেনের বিকল্প হিসেবে মাটির নিচ দিয়ে পাইপের মাধ্যমে সেচ পানি সরবরাহ করা) ব্যবস্থা স্থাপন করে। প্রকল্পটি স্থাপনের পর থেকেই পানি উত্তোলন ও সরবরাহে সমস্যা দেখা দেয়। প্রথম দুই এক বছর কিছু পানি পাওয়া গেলেও গত বছর খুব সামান্য পানি পাওয়া যায়। এ বছর কোন পানিই পায়নি কৃষকরা। ফলে অধিকাংশ জমি অনাবাদি থাকে।
কৃষক সৈয়দ আলী জানান, তারা নিজেরাই পানি সেচ যন্ত্র ও পাইপ ক্রয় করে সেচ দিয়ে চাষ করে আসছিলেন। কৃষি বিভাগ এই ব্যবস্থা স্থাপন করলে তারা তাদের প্রায় ২ লক্ষ টাকার সেচ যন্ত্র ও পাইপসহ উপকরণ বিক্রি করে দেন। পাম্পের আশপাশের কিছু জমিতে পানি গেলেও একটু দূরের জমিতে পানি পাওয়া যায় না। এখন পানি না পাওয়ায় প্রায় ১শ’ একর জমিতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
কেশবপুর গ্রামের এখলাছুর রহমান বলেন, প্রকল্প স্থাপনের প্রথম থেকেই সমস্যা হওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কেউ কর্ণপাত করেননি। ঠিকাদার একবার এসেছিলেন পরে কোন কাজ হয়নি। সেচ ব্যবস্থাটি স্থাপনের সময় বলা হয়েছে পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাবে, বিদ্যুৎ খরচ নেই, সেচ খরচ কমে যাবে। এখন কৃষি উৎপাদনই প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। দীর্ঘদিন থেকে ব্যবস্থাটি নষ্ট থাকায় সোলার প্যানেল ও মেশিনের অনেক কিছু চুরি হয়ে গেছে বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা। সেচ ব্যবস্থাটি দ্রুত চালু করার জন্য তারা বিভিন্ন দপ্তরে আবেদনও করেছেন বলে জানান তিনি।
বিশ্বনাথ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কনক চন্দ্র রায় জানান, কৃষকরা ব্যবস্থাটি ঠিকাদারের নিকট থেকে বুঝে নেয়ার কথা। কিছুদিন চালানোর পর ফিডব্যাক দেয়ার কথা। কিন্তু কৃষকরা বিষয়টি সঠিক ভাবে বুঝতে পারেননি। এখন পাইপের বিভিন্ন স্থানে লিক করছে, সঠিক ভাবে পানি সরবরাহ হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে তিনি প্রকল্প পরিচালকের সাথে কথা বলেছেন। আগামীতে বরাদ্দ এলেই দ্রুত মেরামত করা হবে। আগামী বোরো মৌসুমের পূর্বে সেচ ব্যবস্থাটি চালু করার ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সিলেটের উপ পরিচালক খয়ের উদ্দিন মোল্লা জানান, বিষয়টি তিনি বিস্তারিত জানেন না। খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।