সিলেট বিভাগে আরো ২২৮৭ পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাচ্ছেন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ আগস্ট ২০২৩, ৪:৩৫:৫৩ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক ॥ সিলেট বিভাগের আরো ২২৮৭ পরিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পাচ্ছে। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ৪র্থ পর্যায়ে ২ শতক জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম আজ বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সিলেটের পাশাপাশি সারাদেশে সবমিলিয়ে ২২১০১ টি পরিবারকে জমি ও ঘর হস্তান্তর করা হবে।
সিলেট জেলা প্রশাসনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’- প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে এ কার্যক্রম এর আওতায় আজ দেশব্যাপী প্রায় গৃহ হস্তান্তর করা হবে। এর মধ্যে সিলেট বিভাগের চারটি জেলায় মোট ২২৮৭টি ঘর প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিলেট জেলায় ৪র্থ পর্যায়ের (২য় ধাপে) ৫৫৬ টি ‘ক’ শ্রেণির ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার এবং বিশ্বনাথ উপজেলার প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দের ৪১টিসহ মোট ৫৯৭টি ঘর আজ উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধনযোগ্য মোট ৫৯৭টি গৃহের মধ্যে সিলেট সদর উপজেলায় ১৭৫ টি, বালাগঞ্জ উপজেলায় ৪৬টি, বিয়ানীবাজার উপজেলায় ১৮টি, বিশ্বনাথ উপজেলায় ৭১টি, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ১৫টি, গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ৮৮টি, জকিগঞ্জ উপজেলায় ৩০টি এবং ওসমানীনগর উপজেলায় ৩০টি ঘর রয়েছে।
সিলেট জেলায় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ১ম পর্যায়ে ৩১৩১ টি গৃহের মধ্যে সিলেট সদর উপজেলায় ১৪৪টি, দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় ১১৪টি, বিশ্বনাথ উপজেলায় ২৬৫টি, ওসমানীনগর উপজেলায় ৪০৮টি, বালাগঞ্জ উপজেলায় ৩৬৩ টি, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় ১৩০টি, গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ২০০টি, জকিগঞ্জ উপজেলায় ১৩০টি, কানাইঘাট উপজেলায় ১৯৩টি, গোয়াইঘাট উপজেলায় ৫০০টি, জৈন্তাপুর উপজেলায় ৩৩০টি, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ২৫০টি ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় ১০৪ টি গৃহ প্রদান করা হয়।
২য় পর্যায়ে বরাদ্দকৃত ১১৫ টি গৃহের মধ্যে কানাইঘাট উপজেলায় ৭৫টি এবং গোয়াইনঘাট উপজেলায় ৪০টি ঘর প্রদান করা হয়।
৩য় পর্যায়ে বরাদ্দকৃত ১১৫৮ টি ঘরের মধ্যে সিলেট সদর উপজেলায় ৮৬ টি, দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় ৪১ টি, ওসমানীনগর উপজেলায় ১০ টি, বিশ্বনাথ উপজেলায় ৩৩টি, বালাগঞ্জ উপজেলায় ৭২টি, বিয়ানীবাজার উপজেলায় ১২০টি, গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ৫০টি, গোয়াইনঘাট উপজেলায় ৩৫২ টি, জৈন্তাপুর উপজেলায় ১২০টি, জকিগঞ্জ উপজেলায় ৯১টি, কানাইঘাট উপজেলায় ৮৪টি, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ৫৮টি এবং ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় ৪১টি গৃহ প্রদান করা হয়।
১ম, ২য় এবং ৩য় পর্যায়ের বরাদ্দকৃত মোট ৪৪০৪ টি ঘর ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেন এবং ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের মধ্যে হস্তান্তর করেন।
৪র্থ পর্যায়ে বরাদ্দকৃত ৯৫৫টি গৃহের মধ্যে সিলেট সদর উপজেলায় ২১৯ টি, দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় ০৩টি, ওসমানীনগর উপজেলায় ৩০টি, বিশ্বনাথ উপজেলায় ৭৩টি, বালাগঞ্জ উপজেলায় ১২৬টি, বিয়ানীবাজার উপজেলায় ৬৩টি, গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ১২০টি, গোয়াইনঘাট উপজেলায় ২০৬টি, জৈন্তাপুর উপজেলায় ১৫টি, জকিগঞ্জ উপজেলায় ৩০ টি, কানাইঘাট উপজেলায় ১৮টি, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ৪০টি এবং ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় ১২টি গৃহের বরাদ্দ প্রদান করা হয়।
৪র্থ পর্যায়ে বরাদ্দকৃত ৯৫৫ টি গৃহের মধ্যে ইতোমধ্যে ১ম ধাপে ৩৯১ টি ঘর গত ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেন এবং একই সাথে দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়। ৪র্থ পর্যায়ের এ জেলার অবশিষ্ট ‘ক’ শ্রেণির ৫৬৪ টি গৃহের মধ্যে ৫৫৬টি এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দের ৪১ টিসহ মোট ৫৯৭ টি ঘর উদ্বোধন করবেন।
জেলা প্রশাসনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করা হবে। এর ফলে এ জেলার মোট ১৩টি উপজেলার মধ্যে ৯ টি উপজেলা (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, গোলাপগঞ্জ,বিয়ানীবাজার, গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ) ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
বিশ্বনাথে ঘর পাচ্ছেন আরও ৭১ পরিবার
এমদাদুর রহমান মিলাদ, বিশ্বনাথ (সিলেট) জানান, বিশ^নাথে চতুর্থ পর্যায়ে (২য় ধাপে) প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীন ৭১ পরিবারকে জমিসহ ঘর দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ‘ক’ শ্রেণিতে ভূমিহীন ও গৃহহীন ৩০টি পরিবার এবং ‘খ’ শ্রেণিতে ভূমিহীন ৪১টি পরিবার (প্রতিবন্ধী) এই ঘর পাচ্ছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় বিশ^নাথ উপজেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান। আজ বুধবার সকালে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই ঘর হস্তান্তরের উদ্বোধন করবেন। ইউএনও জানান, মুজিববর্ষ উপলক্ষে এর আগে গৃহহীন ও ভূমিহীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। এসব আশ্রয়ণ প্রকল্পে পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে দিন কাটাচ্ছেন উপকারভোগীরা। ইতোমধ্যে ৩৭১টি পরিবারকে উপহারের ঘর বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এসব ঘরে বিদ্যুৎ, রাস্তা, স্যানিটারি, পানিসহ সব সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রেস বিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব’র সাধারণ সম্পাদক এমদাদুর রহমান মিলাদ, বিশ্বনাথ মডেল প্রেসক্লাব সহসভাপতি কামাল মুন্না, বিশ্বনাথ সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বেগ, ইউএনও অফিসের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাদেক আহমদ প্রমুখ।
সুনামগঞ্জে ঘর পাচ্ছেন আরও ৬৮৩ পরিবার
সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি জানান, প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাচ্ছেন সুনামগঞ্জ জেলার আরও ৬৮৩ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার দেশব্যাপী ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের চতুর্থ পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে জমি ও গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। এসময় সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা ও ধর্মপাশা উপজেলাকে ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, সুনামগঞ্জ জেলায় এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৪৪৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭ হাজার ৩৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। আগামীকাল বুধবার (আজ) আরও ৬৮৩টি পরিবার জমি ও গৃহ হস্তান্তর করা হলে জেলায় মোট ৭ হাজার ৭১৭টি ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিজন সিংহ, আরডিসি সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ টেলিভিশনের সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি আইনুল ইসলাম বাবলু, সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু, সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রি শেখর ভদ্র, সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনসহ জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২২ মার্চ জেলার বিশ^ম্ভরপুর উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়।