আদিবাসি দিবস আজ
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ আগস্ট ২০২৩, ১০:৪৭:২৮ অপরাহ্ন

বুদ্ধিমানের লোকের জন্য একটি ইশারাই যথেষ্ট। -টেরেন্স
আন্তর্জাতিক আদিবাসি দিবস আজ। প্রতি বছরের মতো এবারও বাংলাদেশের আদিবাসি জনগোষ্ঠি সাড়ম্বরে দিনটি উৎযাপন করছে। প্রতি বছরের ৯ আগস্ট তারিখটি আন্তর্জাতিক আদিবাসি দিবস হিসেবে সারাবিশ্বে পালিত হয়ে থাকে। জাতিসংঘ ঘোষিত এ দিবসটি ১৯৯৪ সাল থেকে সারাবিশ্বের প্রায় ৩০ কোটি আদিবাসি পালন করে। ১৯৯২ সালে জাতিসংঘ আদিবাসি দিবস পালনের জন্য ৯ই আগস্টকে বেছে নেয়। আদিবাসি জনগণের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাই এই দিবস পালনের লক্ষ।
গবেষকদের মতে, কোন নির্দিষ্ট এলাকায় অণুপ্রবেশকারি বা দখলদার জনগোষ্ঠির আগমনের পূর্বে যারা বসবাস করতো এবং এখনও করে; যাদের নিজস্ব আলাদা সংস্কৃতি, রীতিনীতি ও মূল্যবোধ রয়েছে; যারা নিজেদের আলাদা সামষ্টিক সমাজ-সংস্কৃতির অংশ হিসেবে চিহ্নিত করে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যারা সমাজে সংখ্যালঘু হিসেবে পরিগণিত, তারাই আদিবাসি। আদিবাসিদের উপজাতি হিসেবে সম্বোধন করা একেবারেই অনুচিত। কারণ তারা কোন জাতির অংশ নয়। বরং তারা নিজেরাই এক একটি আলাদা জাতি। বিশ্বের অনেক দেশেই বসবাস করছে আদিবাসিরা। ৫টি মহাদেশের ৯০টির বেশি দেশে বসবাসরত ৫ সহ¯্রাধিক আদিবাসি জনজাতি মানুষের সংখ্যা ৩০-৩৫কোটি। এদেরকে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে – জাতি, উপজাতি, আদিবাসি, ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠি, ক্ষুদ্র-জাতিসত্ত্বা প্রভৃতি।দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে আদিবাসি শব্দ নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশের আদিবাসিদের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি, সম্প্রদায় বা উপজাতি হিসেবে আখ্যায়িত করলেও বাংলাদেশের আদিবাসিরা নিজেদের আদিবাসি হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। বাংলাদেশে ২০০৪ থেকে পালিত হয়ে আসছে এই আর্ন্তজাতিক দিবস। মূলত, ২০০১ সালে বাংলাদেশ আদিবাসি ফোরাম গঠিত হবার পরে বেসরকারিভাবে আর্ন্তজাতিক দিবসটি পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রায় ৪৫টির মত আদিবাসি জাতিসত্তার উপস্থিতির তথ্য জানা যায়।এই আদিবাসি জাতিগোষ্ঠির বসবাস আমাদের সংস্কৃতিকে করেছে সমৃদ্ধ। জনসংখ্যার দিক থেকে দেশের মোট জনসংখ্যার সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৪ শতাংশ হতে পারেন আদিবাসি জনগোষ্ঠি। এদের সংখ্যা ৩০ লাখের বেশি বলে জানা যায়। তারা নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিচয়, ভূমির অধিকার ও নাগরিক মর্যাদার স্বীকৃতি দাবিতে দিবসটি উদ্যাপন করে থাকে।
বাংলাদেশের আদিবাসিদের বিরাট অংশ বাস করে পর্বত্য অঞ্চলে। এরা তাদের প্রাপ্য অধিকারের জন্য সশস্ত্র লড়াই করে দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময় ধরে। এ লড়াই ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর শেষ হয়। ওইদিন বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় বিশ্বব্যাপি আদিবাসি জনগণ তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিচয়, ভূমির অধিকার, অঞ্চল বা টেরিটরির অধিকার, প্রাকৃতিক সম্পদের অধিকার ও নাগরিক মর্যাদার দাবি আজও অব্যাহত রেখেছে।