সিলেটে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় দুই মামলা, আসামি ৩০০
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ আগস্ট ২০২৩, ১২:৩০:০৯ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক ॥ সিলেট মহানগরীর আখালিয়া এলাকার ধানুহাটারপাড়ার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে কোরআন শরিফ পোড়ানোর ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি পবিত্র কোরআন পোড়ানো অপরটি পুলিশে কাজে বাধা প্রদান এবং হামলা, ভাঙচুরের।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশেরর উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ সংবাদ মাধ্যমকে জানান, প্রথম মামলার বাদী হয়েছেন কোতোয়ালি থানার এসআই রাশেদ ফজল ও দ্বিতীয়টির বাদী এসআই অঞ্জন কুমার দেবনাথ। এর মধ্যে প্রথম মামলায় তিনজনকে এবং দ্বিতীয়তে ২০০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, প্রথম মামলায় গ্রেফতার দেখানো তিন আসামিকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত রোববার (৬ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে ধানুহাটারপাড়ার সিলেট আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান নুরুর রহমানের (৫০) বিরুদ্ধে পবিত্র কোরআনের ৪৫টি কপি কেরোসিন ঢেলে পোড়ানোর অভিযোগ উঠে। ঘটনার পর তাকে এবং তার সঙ্গে থাকা মাহবুব আলম (৪৫) নামে একজনকে আটক করে পুলিশ। সোমবার (৭ আগস্ট) বিকেলে সিলেটের টুকেরবাজার থেকে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের খ-কালীন শিক্ষক ইসহাক আহমদকে আটক করা হয়। রাতে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।
গ্রেফতার নুরুর রহমান আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
নুরুর সঙ্গে থাকা মাহবুব আলম ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থানাধীন বাউলাপাড়া এলাকার ইদ্রিস আলীর ছেলে। তিনি বর্তমানে কোতোয়ালি থানাধীন আখালিয়া ধানুহাটারপাড়া এলাকায় বসবাস করছেন। এছাড়া গ্রেফতার ইসহাক আহমদ সিলেটের জালালাবাদ থানাধীন ফতেহপুর মাদ্রাসার শিক্ষক ও আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের খ-কালীন শিক্ষক। ইসহাক রোববার বিকেলে নুরুর রহমানের কাছে এক কার্টুন নতুন ও এক বস্তা ভর্তি পুরাতন কুরআন শরিফ নিয়ে এসে নতুনগুলো ছাত্রদের মাঝে বিতরণ এবং পুরাতনগুলো পুড়িয়ে ফেলতে বলেন।
কুরআন পোড়ানোর বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে কয়েক হাজার উত্তেজিত জনতা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফটকে এসে জড়ো হয়ে নুরুর রহমানকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে নুরুর রহমান ও মাহবুবকে প্রতিষ্ঠানটির একটি কক্ষে আটক করে ক্ষুব্দ জনতার হাত থেকে রক্ষা করে। এসময় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন।
রাত ১২টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের বিশেষ টিম সিআরটি এবং জালালাবাদ ও কোতোয়ালি থানার অতিরিক্ত পুলিশ এবং র্যাব-৯ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এসময় উত্তেজিত জনতার একাংশ সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। উত্তেজিত জনতা এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দিকে ইট-পাটকেল ছুড়ে মারে। এতে অন্তত ২০ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। এছাড়া পুলিশের কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করেন উত্তেজিত জনতা।
রাত সাড়ে ১২টার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ফাঁকা গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে। পরে ধীরে ধীরে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন উত্তেজিত স্থানীয় জনতা। রাত ২টার দিকে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে পুলিশ।