উদ্বোধনের অপেক্ষায় কোম্পানীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১০ আগস্ট ২০২৩, ২:৫৩:৪১ অপরাহ্ন

আবিদুর রহমান, কোম্পানীগঞ্জ থেকে : আগুন লাগাসহ যেকোনো দুর্যোগে এতদিন জেলা শহর থেকে সহযোগিতা নিতে হতো। তাই কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। অবশেষে পূরণ হয়েছে সে দাবি। উপজেলা সদরে এবং কোম্পানীগঞ্জ মহাসড়কের পাশে (ছাতক-আমবাড়ি সড়কের প্রবেশমুখে) নির্মিত হয়েছে ফায়ার সার্ভিস এ- সিভিল ডিফেন্স স্টেশন। এখন শুধু কার্যক্রম চালুর অপেক্ষা। নতুন এই ফায়ার স্টেশন পেয়ে খুশি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মানুষ।
সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই কোম্পানীগঞ্জে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে গণপূর্ত বিভাগ। ৩ কোটি ৫৪ লাখ ২১ হাজার ৬৭৭ টাকা ব্যয়ে এটি নির্মাণের দায়িত্ব পায় মো. ইউনুস এ- ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ শেষে গণপূর্তকে তারা ভবন বুঝিয়ে দেয়। গণপূর্ত হস্তান্তর করে ফায়ার সার্ভিসকে। কিন্তু পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ না হওয়ায় হচ্ছে না এর উদ্বোধন। তাই সুফল প্রাপ্তি প্রলম্বিত হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) রাজিব কর্মকার বলেন, ফায়ার সার্ভিসকে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভবন হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন সবকিছুর দায়িত্ব ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষের।
সিলেট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম ভূঞা বলেন, কিছু জনবল নিয়োগ হয়েছে। দুইটি গাড়ি চলে এসেছে। কিছুদিনের মধ্যে ড্রাইভার পদায়ন হবে। তারপরই স্টেশনটি চালু করার উদ্যোগ নেব।
স্থানীয় থানাবাজারের বাসিন্দা ও উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আব্দুর রহমান বলেন, অতীতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বহু আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আগুনে পুড়েছে বহু মানুষের স্বপ্ন। প্রাণহানিও হয়েছে অনেক। ফায়ার সার্ভিসের অভাবে কোম্পানীগঞ্জবাসীকে এতদিন কষ্ট করতে হয়েছে। অবশেষে সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদের সহায়তায় নির্মিত হলো ফায়ার সার্ভিস স্টেশন।
কয়েক বছর আগে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিজের স্ত্রী এবং এক স্বজনকে হারান কোম্পানীগঞ্জ থানাবাজারের শাহজালাল ফার্মেসির মালিক ডা. রইছ উদ্দিন। ওই ঘটনায় আগুনে দগ্ধ হন তাঁর পরিবারের ৭ ব্যক্তি। ডা. রইছ উদ্দিন উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের খবরে স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেছেন। তিনি বলেন, শুনে ভালো লাগছে এখন কোম্পানীগঞ্জে একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন হয়েছে। এতে অগ্নিকা-ে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ অনেক কমবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বিদ্যুৎ কান্তি দাস বলেন, আগুনে কোম্পানীগঞ্জে গত দুই বছরে কোটি টাকারও বেশি সম্পদ নষ্ট হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থাকলে এত ক্ষতি হতো না। এখন অগ্নিকা-ে ক্ষতির পরিমাণ অনেক কমবে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অখিল বিশ্বাস বলেন, ভোলাগঞ্জ সাদা পাথরে বিভিন্ন সময় ঘুরতে আসা পর্যটক ডুবে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটে। তখন সিলেট থেকে ডুবুরি আনতে হয়। এখন থেকে ফায়ার সার্ভিসের সুফল পাবে কোম্পানীগঞ্জের মানুষ। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রীর ঐকান্তিক ইচ্ছায় স্টেশনটি হয়েছে বলে মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুসিকান্ত হাজং বলেন, গত বছরের বন্যার আগেই স্টেশনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। দ্রুত এটির কার্যক্রম শুরু করতে জেলা সমন্বয় কমিটির সভায় বলেছি। আশা করি খুব শিগগিরই এর উদ্বোধন হবে।