সিলেটের পতিত জমি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১১ আগস্ট ২০২৩, ২:৪৬:৪৪ অপরাহ্ন
সহনশীলতা এমন একটি গুণ যা থেকে সাফল্য আসবেই। – জুভেনাল।
সিলেটের অনাবাদি ও পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। এই কমিটি কৃষি, ভূমি এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে জরিপ করে অনাবাদি পতিত জমিগুলো চাষাবাদের আওতায় আনার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছে। সম্প্রতি রাজধানীতে কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে সুপারিশ করা হয়। এতে বলা হয়, সিলেট জেলায় প্রায় সাত লাখ হেক্টর অনাবাদি পতিত জমি রয়েছে।
শুধু সিলেট নয়, সারা দেশেই বিপুল পরিমাণ জমি রয়েছে পতিত অথবা অনাবাদি। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দেশে প্রায় ১১ কোটি একর পতিত বা অনাবাদি জমি রয়েছে, যা মোট জমির প্রায় পাঁচ শতাংশ। সরকার বলছে, ধরন অনুযায়ি এই জমিতে ফসল বা সবজি চাষ করতে হবে। আবাদযোগ্য কোন জমি পতিত রাখা যাবে না। এ বিষয়ে কঠোর মনিটর করছে ভূমি মন্ত্রণালয়। উল্লেখ করা যেতে পারে, জমি অনাবাদি বা পতিত রাখলে ওই জমি রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০-এর ৯২ ধারা অনুযায়ী খাস খতিয়ানভুক্ত করার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে পতিত জমিতে কীভাবে ফসল ফলানো যায় তার জন্য চলছে গবেষণা। আর সেই গবেষণায় সাফল্যও এসেছে। পরিসংখ্যানের তথ্য হচ্ছে, দেশে মোট ব্যবহৃত জমির পরিমাণ ২২৬ কোটি ৫১ লাখ ৭৪ হাজার একর। পরিবারপ্রতি জমির পরিমাণ প্রায় ৮২ শতক। এসব জমির মধ্যে বসতবাড়ি, পুকুর, স্থায়ি ফসলি জমি, অস্থায়ি ফসলি জমির পাশাপাশি পতিত জমিও রয়েছে। এর মধ্যে দুই ধরনের অর্থাৎ অস্থায়ি পতিত এবং স্থায়ি পতিত জমি রয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি ৮৫ লাখ ১৫ হাজার একর। অস্থায়ি পতিত জমি। বলতে বোঝায় যেসব জমিতে চলতি বছরে আবাদ বা কোন ধরনের শস্য উৎপাদন হয়নি কিন্তু তার আগের বছরে জমিটিতে আবাদ হয়েছে। এমন জমির পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ৫৩ লাখ ৫৫ হাজার একর। আর কখনও কোন ধরনের আবাদ ও শস্য উৎপাদন হয়নি এমন জমিকে বলা হয় স্থায়ি পতিত জমি। দেশে যার পরিমাণ প্রায় নয় কোটি ৩১ লাখ ৫৯ হাজার একর। বছরের পর বছর এই জমি পড়ে রয়েছে পতিত।
বিগত বছর কয়েক ধরে দেশের পতিত জমি চাষের আওতায় নিয়ে আসার প্রকল্প শুরু হয়েছে। এর আওতায় বিপুল পরিমাণ জমি ইতোমধ্যেই এসেছে চাষের আওতায়। এর মধ্যে সিলেটের পতিত জমি ব্যবহারের জন্য দুই শ’ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে একটি প্রকল্প রয়েছে। নানান অনুকূল-প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দেশের কৃষক সমাজ তাদের উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। বর্ধিত জনসংখ্যার জন্য আগামিতে ফসল উৎপাদন বাড়ানোর বিকল্প নেই। এই প্রক্ষাপটে পতিত জমি আবাদ করার উদ্যোগ সময়োপযোগি।