রেলের লোকসান বাড়ছে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ আগস্ট ২০২৩, ৪:২৬:০১ অপরাহ্ন
আলস্য মানুষের প্রধানতম শত্রু। এই শত্রুকে পরাজিত করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। -স্বামী বিবেকানন্দ
রেলের উন্নয়নে বরাদ্দ বাড়ছে প্রতি বছর। নেয়া হচ্ছে কোটি কোটি টাকার প্রকল্প। কিন্তু তার কোন সুফল পাচ্ছে না মানুষ। বরং দিনে দিনে রেলের সেবার মান নিচের দিকে যাচ্ছে। কমছে রেলের গতি। আর বাড়ছে রেলের লোকসানের পরিমাণ। সাশ্রয়ি ও আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য বাহন রেলওয়ের দৈন্যদশা কীভাবে কাটানো যায়, এ জন্য বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে না।
রেলওয়ে হচ্ছে যাতায়াতের জন্য সরকার নিয়ন্ত্রিত সবচেয়ে প্রাচীন প্রতিষ্ঠান। এই ভূ খ- প্রথম রেলওয়ের সূচনা হয় ১৮৬২ সালে। এরপর ধীরে ধীরে এর পরিধি বাড়তে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের ২৮৭৭ কিলোমিটার রেললাইন নেটওয়ার্ক দেশের ৪৪টি জেলার সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে। কিন্তু রেল ভ্রমণে যাত্রিসেবার মান উন্নত হচ্ছে না। বরং অবনতি হচ্ছে। নানা ধরণের সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে যাত্রিদের। টিকিট কেনা থেকে শুরু হয় ভোগান্তি। ট্রেন ছাড়া কিংবা গন্তব্যে পৌঁছার সময়সূচি মানা হয় না বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই¬। আর টিকিটবিহিন যাত্রি বহন, প্রথম শ্রেণির কম্পার্টমেন্টেও গাদাগাদি করে যাত্রি বহন এমন কি চোরাই পণ্য পরিবহনেরও অভিযোগ রয়েছে অনেক অন্ত:নগর ট্রেনের বিরুদ্ধে। ঢাকা-সিলেট রুটসহ প্রায় সারা দেশে রেলপথে জরাজীর্ণ বগি, মেয়াদোত্তির্ণ ইঞ্জিনসহ নানাবিধ বিষয় যাত্রিদের কাছে ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর অবস্থা মোটেও প্রত্যাশিত পর্যায়ে নেই। আর মেইল ট্রেনগুলোর দুরবস্থার কথা তো বলাই বাহুল্য। এমনি অবস্থায় রেলের উন্নয়নে বরাদ্দের কোন কমতি নেই। জানা গেছে, গত ১৪ বছরে রেল উন্নয়নে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা ব্যয় করেছে বর্তমান সরকার। প্রতিবছরই বাড়ছে এই বরাদ্দ।অথচ তাতে রেলের উন্নয়ন না হলেও দুর্নীতিবাজ চক্রের উন্নয়ন হচ্ছে ঠিকই।তার সঙ্গে রেলওয়ের লোকসানের অংকও বেড়ে চলেছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, স্বাধীনতার পর রেল লাভের মুখ কখনও দেখে নি। সর্বশেষ গত ২০২০-২১ অর্থবছরেই প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়েছে রেলের।
পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই রেল হচ্ছে বিলাসবহুল এবং লাভজনক পরিবহন। কিন্তু আমাদের দেশের চিত্র পুরোটাই উল্টো। এখানে একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে রেল। প্রথমে রেলে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। উন্নয়নে যতোই অর্থ বরাদ্দ হোক না কেন, অপরিকল্পিত প্রকল্প এবং দুর্নীতির কারণে তার সবই ভেস্তে যাচ্ছে। রয়েছে ভুল পরিকল্পনা। সেইসঙ্গে যথাযথ স্থানে টাকা ব্যয় করা হচ্ছে না। এখনও যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহন করলে রেলওয়েকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা সম্ভব বলেই আমরা মনে করি।