জঙ্গি আস্তানায় গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজন চিকিৎসকের স্ত্রী
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ আগস্ট ২০২৩, ১২:২৩:০৮ অপরাহ্ন
ডাক ডেস্ক: একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক সোহেল তানজিম। গত ২৬ জুলাই থেকে তিনি স্ত্রী মায়েশা ইসলামসহ নিখোঁজ। মায়েশাকে গতকাল শনিবার মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের পূর্ব টাট্রিউলি গ্রামের পাহাড়ি এলাকার একটি নির্জন টিলায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে চিকিৎসক সোহেল পালিয়েছেন। এমনটাই দাবি করেছেন সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।
ডিএমপির সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ছয় নারীর মধ্যে সোহেল তানজিম নামের একজন চিকিৎসকের স্ত্রীও রয়েছেন। তাঁর নাম মায়েশা ইসলাম। সোহেল সিরাজগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক। ঘটনাস্থলে তিনি উপস্থিত থাকলেও অভিযান টের পেয়ে পালিয়ে যান। এর আগে শুক্রবার কুলাউড়ার ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ইউনিট। পরে গ্রেফতার কৃত ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করলে নাটোর সদর উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের মাইশা ইসলামের (২০) নাম থাকার বিষয়টি জানা যায়।
গত ৩১ জুলাই এনায়েতপুর থানায় জিডি করেন নিখোজ সোহেলের পিতা হেলালউদ্দিন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, ২৬ জুলাই থেকে স্ত্রীসহ নিখোঁজ হন তাঁর ছেলে সোহেল তানজিম। ১০ মাস আগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করে এনায়েতপুরে খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগদান করেন তানজিম। আড়াই মাস আগে পরিবারের অমতে মাইশা ইসলামকে বিয়ে করেন। এরপর হাসপাতালের পাশে একটি ভাড়াবাসা নিয়ে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী থাকতেন।
হেলাল উদ্দিন বলেন, ঈদুল আজহার আগের দিন তানজিম তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে প্রথম বাড়িতে আসেন। ঈদের পরদিন আবার চলে যান। মাত্র একদিন তাঁর ছেলের স্ত্রীর সঙ্গে দেখা ও কথা হয়। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাঁদের নিখোঁজের খবর জানতে পেরে থানায় জিডি করেন। হঠাৎ শনিবার জানতে পারেন, ছেলের স্ত্রীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
মাইশার ভাই ওমর ফারুক বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমে আমার বোনের গ্রেফতারের বিষয়টি জানতে পেরেছি। তবে আমার বোন কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। সে স্থানীয় চাঁদপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং নাটোর মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে। সম্প্রতি অনলাইনে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে সম্পর্ক হয়। পরে তাঁরা বিয়ে করে।’
এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, নিখোঁজের বিষয়ে থানায় জিডি করা হলে তাঁরা খোঁজখবর শুরু করেন। একপর্যায়ে তানজিম যে এলাকায় ভাড়া থাকতেন, সেই এলাকার বাসিন্দারা জানান, ২৬ জুলাই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে তানজিমকে এলাকা ছেড়ে যেতে দেখেছেন তাঁরা।
২৭ বছর বয়সী তানজিম সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুরে খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) দায়িত্ব পালন করতেন। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ ইউনিয়নের পোড়াবাড়ি গ্রামে। তানজিম স্ত্রীকে নিয়ে কর্মস্থলের পাশে একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন।