বাবার বাড়ি এসেও শেষ রক্ষা হলো না শারমিনের খুন হলেন নেশাগ্রস্ত স্বামীর হাতে
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ আগস্ট ২০২৩, ৫:০৩:৩০ অপরাহ্ন
রাজনগর (মৌলভীবাজার) থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ নেশাগ্রস্ত স্বামীর নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার জন্য বাবার বাড়ি এসে আশ্রয় নিলেও শেষ রক্ষা হয়নি শারমিনের (২২)। স্বামীর হাতেই প্রাণ গেলো তার। এক সন্তানের জননী গৃহবধূ শারমিনকে পৈতৃক ঘরে ঢুকে স্বামী শ্বশুর মিলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। ঘটনার ৫ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের বিশেষ অভিযানে আটক করা হয়েছে ঘাতক স্বামী শাকিলকে। গতকাল রোববার মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের পশ্চিম কালাইকোনা গ্রামে মৃত কামিল মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটেছে। শারমিন কামিল মিয়ার মেয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বছর তিনেক আগে শারমিনের বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের ফারুক মিয়ার ছেলে শাকিলের সাথে। বিয়ের কিছুদিন পরে শাকিল নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। নেশা করে ঘরে এসে শারমিনকে প্রায়ই নির্যাতন করতো শাকিল।
এলাকার ইউপি মেম্বার সোহেল আহমদ বলেন, গত ঈদের আগ থেকে শারমিন তার পৈতৃক বাড়িতে থাকেন। স্বামীর নির্যাতনের ভয়ে শ্বশুরবাড়িতে আর যাননি। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় একাধিক সালিশ বৈঠক হয়েছে। তবে এর কোন সমাধান হয়নি। গতকাল রোববার সকালে শাকিল ও তার বাবা শারমিনদের বাড়িতে আসেন। এসময় শারমিনের মা ঘরের বাইরে ছিলেন। শারমিনের সাথে ধস্তাধস্তি হয়েছে ঘরের ভেতর। এসময় শারমিনের দু’বছরের ছেলে সন্তান কেঁদে কেঁদে ঘর থেকে বের হওয়ায় পাশের ঘরের লোকজন এসে দেখেন শারমিনের মরদেহ চেয়ারের উপরে বসানো অবস্থায় রয়েছে। পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
কামারচাক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, শারমিনের স্বামী শাকিল মাদকাসক্ত হয়ে তার স্ত্রীকে প্রায়ই নির্যাতন করতো। এনিয়ে একাধিকবার বিচার বৈঠক হয়েছে। স্বামীর নির্যাতনের যন্ত্রণায় শারমিন বাবার বাড়িতে থাকেন। গতকাল রোববার ঘরে ঢুকে শাকিল শারমিনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসময় শাকিলের বাবা ফারুকও সাথে ছিলেন।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিনয় ভুষণ রায় বলেন, নেশাগ্রস্ত শাকিল বর্তমানে চট্রগ্রাম শহরে কাজ করে। স্ত্রী শারমিনকে শ্বশুর বাড়ি থেকে স্বামী ও শ্বশুর নিতে এসে ঘটনাটি ঘটায়। আমরা বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৫ ঘণ্টার মধ্যে ঘাতক স্বামীকে আটক করেছি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।