৪২ জন হজযাত্রীর টাকা আত্মসাৎ
অবশেষে সাজিদ ট্রাভেলসের মালিক অহিদুল র্যাবের খাঁচায় বন্দি
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ আগস্ট ২০২৩, ১২:০৪:১৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটসহ সারাদেশের ৪৪ জন হজযাত্রীর টাকা আত্মসাৎকারী সাজিদ ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এজেন্সির মালিক অহিদুল আলম ভূইয়া (৫০)-কে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গত রোববার রাতে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-২ ও র্যাব-৯ এর সদস্যরা।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির সাজিদ হজ ট্রাভেল এন্ড ট্যুরস এজেন্সির প্রতারণার ফাঁদে পড়ে এবার সারাদেশের ৪৪ জন হজযাত্রী পবিত্র হজব্রত পালনে যেতে পারেননি। এর মধ্যে সিলেটের চারজন হজযাত্রী ছিলেন। এ বিষয়ে গত ২৪ জুন দৈনিক সিলেটের ডাকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয়। ওই ব্যক্তির প্রতারণার কারণে হজে যেতে ব্যর্থ হওয়া লোকজন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং হাব-এ অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাননি। ভুক্তভোগীরা পুলিশ নিয়ে ওই ট্রাভেলসে গিয়ে প্রতিষ্ঠান বন্ধ পান। জানা গেছে, ঢাকার সাজিদ হজ ট্রাভেল এন্ড ট্যুরস এর আগেও বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত। ২০১৬ সালে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির কারণে ৮৮টি হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এর মধ্যে শাস্তির আওতায় ছিল ওই সাজিদ হজ ট্রাভেল এন্ড ট্যুরস।
র্যাব-২ এর সিনিয়র এএসপি সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) শিহাব করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ২০২৩ সালে হজ পালনে সৌদি আরবে পাঠানোর নামে রাজধানীর কুড়িল এলাকার সাজিদ ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এজেন্সির মালিক অহিদুল আলম ভূঁইয়া, তার ছেলে সাজিদুল ইসলাম ও শ্যালক মো. শফিকুল ইসলাম ৪৪ জন হজযাত্রীর কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা নেয়। কিন্তু তাদের হজে না পাঠিয়ে প্রায় ৩ কোটি টাকা প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাৎ করে আত্মগোপনে চলে যান তারা। হজের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ভুক্তভোগীরা সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন থানায় পাঁচটির বেশি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনাটি সিলেটসহ দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। র্যাব এ ঘটনার ছায়া তদন্ত এবং গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-২ এর একটি আভিযানিক দল র্যাব-৯ এর তথ্য সহায়তায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে অহিদুল আলম ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করে।
গত ২৫ জুলাই সিলেটে সাজিদ ট্রাভেলসের একটি অফিস উদ্বোধন করতে গিয়ে ভুক্তভোগীদের তোপের মুখে পড়ে সাজিদ হজ্ব ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরসের স্বত্ত্বাধিকারী অহিদুল আলম ভূইয়ার ছেলে সাজিদুর রহমান ভুইয়া (১৯) ও তার (অহিদ) ভায়রা ভাই মো: শফিকুল ইসলাম (৩৮)।
এ ঘটনায় এসএমপি’র কোতয়ালী মডেল থানায় মো: রেজাউল করিম খানের (এই ব্যক্তির মাধ্যমে হজযাত্রীরা সাজিদ ট্্রাভেলসের সাথে হজে যাবার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন) দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়, সিলেটের ৯ জন হাজী এবার ওই ট্রাভেলসের মাধ্যমে হজে যেতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। সবমিলিয়ে ৫৭ লাখ ৯৯ হাজার ১৫ টাকা তিনি ট্রাভেলসকে প্রদান করেন। যাত্রীদের মধ্যে ৫ জন হজে যেতে পারলেও ৪ জন যেতে পারেননি। প্রদেয় অর্থ পরিশোধের জন্য তিনি ট্রাভেলস মালিককে চাপ দিলেও তিনি এ নিয়ে টালবাহানা করেন বলে মামলার বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়।