উষ্ণতায় ঝুঁকিতে শিশুরা
সিলেটের ডাক প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ আগস্ট ২০২৩, ১২:১৬:২৭ অপরাহ্ন
আদর্শের সংঘাত বাঁধলে আপনজনকেও দূরে ঠেলে দাও। আদর্শের ক্ষেত্রে কোনমতেই আপস চলে না। -হেররিক
বৈশ্বিক উচ্চ তাপমাত্রার সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগি দক্ষিণ এশিয়ার শিশুরা। এ অঞ্চলের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ শিশু বিপজ্জনকভাবে উচ্চ তাপমাত্রার শিকার বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের শিশু সংস্থা বলেছে, দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ৪৬ কোটি বা ৭৬ শতাংশ শিশু চরম তাপমাত্রার মুখে রয়েছে। আর বৈশ্বিকভাবে এ ধরনের ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের অনুপাত এক-তৃতীয়াংশ।
সাম্প্রতিক বিশ্বে যুদ্ধ-বিগ্রহ নিয়ে যতোনা আলোচিত হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে। জলবায়ু পরিবর্তন এখন সারা বিশ্ববাসিকেই আন্দোলিত করছে। এর বিরূপ প্রভাব কোটি কোটি মানুষকে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।এর মধ্যে অন্যতম জনস্বাস্থ্য। জলবায়ু পরিবর্তনে বাড়ছে উষ্ণতা। এর শিকার হচ্ছে সব বযসের মানুষ। সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে শিশুরা। আর বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সৃষ্ট উষ্ণতায় বেড়ে ওঠা শিশুরা তুলনামূলক বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। তাদের মতে, বৈশ্বিক উষ্ণতা ইতোমধ্যে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়েছে। ডায়রিয়া, ডেঙ্গু জ্বর ও ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ বাড়ছে। বাড়ছে বায়ু দূষণও। দক্ষিণ এশিয়ায় কোটি কোটি শিশুর জীবন ও সুস্থতা তাপপ্রবাহ এবং উচ্চ তাপমাত্রার কারণে ক্রমবর্ধমানভাবে হুমকির সম্মুখিন। ইতোমধ্যেই জাতিসংঘ বলে দিয়েছে, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ভারত, পাকিস্তান ও মালদ্বীপের শিশুরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। তাদের ব্যাখ্যা হচ্ছে, এক বছরে ৮৩ বা তার চেয়ে বেশি দিন ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা থাকাকে চরম উচ্চ তাপমাত্রা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিকর ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠছে। এগুলো সহজেই শিশুদের কাবু করে ফেলবে। বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, নানা কারণে গত ১৫ বছরে মানবজাতির মধ্যে নতুন নতুন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
তবে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুরক্ষা। ছোট ছোট শিশুরা তাপ সহ্য করতে পারে না। এ বিষয়ে এখনই সতর্ক হতে হবে। কারণ, এই শিশুদের আগামি বছরগুলোতে আরও ঘন ঘন এবং আরও তীব্র তাপপ্রবাহের ধাক্কা সহ্য করতে হবে। শুধু শিশু নয়, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে সব বয়সের কোটি কোটি মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে।এক্ষেত্রে বিজ্ঞানিদের পরামর্শ হচ্ছে, বিশ্বের তাপ ও কার্বন নিঃসরণে সৃষ্ট অন্যান্য প্রভাবগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে এবং ভবিষ্যতে আরও খারাপ পরিস্থিতি এড়াতে কার্বন দূষণকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।